অন্তত দুটি দম্পতিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি যাঁরা পরস্পরকে তুই করে বলেন। আমাদের মধ্যবিত্ত নাগরিক সংস্কৃতিতে স্বাভাবিক তো নয়ই, রীতিমতো ব্যতিক্রম ও বিপ্লবাত্মক। এর বিপরীতে এমন উদাহরণও জানি যেখানে বিবাহপূর্বকালে দু’জন দু’জনকে তুই-তোকারি করতেন, বিবাহের আনুষ্ঠানিকতার ফলে তা তুমিতে উত্তীর্ণ হয়ে প্রথাসিদ্ধ রূপ পেয়ে গেছে।
ঠিক জানা নেই, তবে পৃথিবীর খুব বেশি ভাষায় আমাদের মতো আপনি-তুমি-তুই এরকম তিন স্তরের সম্বোধন আছে বলে মনে হয় না। হিন্দি-ঊর্দূতে আছে জানি।
বাংলাদেশে যে কোনো শহরের বাইরে দুই পা গেলে অবশ্য অন্য বাস্তবতা। গ্রামবাংলায় আজও পুরুষরা সচরাচর বউদের তুই করে বলেন, যদিও মেয়েরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামীদের (স্বামী শব্দটি আমার ভয়ানক অপছন্দ, অথচ যুৎসই বিকল্পও নেই) তুমি, এমনকি আপনি বলে সম্বোধন করে থাকেন। কখনো কখনো আপনি-তুমির সীমানা বাঁচিয়ে ভাববাচ্যে বলা হয়। স্বামী বলে কথা, যার অর্থ প্রভু। আজকাল অবশ্য কিছু লেখাপড়া জানা মানুষও গ্রামে বসবাস করেন, তাঁরা আবার এই নিয়মের ব্যতিক্রম – বউকে তুই-তোকারি করা অরুচিকর ও অশোভন, বিবেচনা করেন। তাঁদের মনোভাব শহরের তুমি-সংস্কৃতির অনুসারী হয়ে স্বস্তি বোধ করে।
এই কিছুকাল আগেও গ্রামাঞ্চলে বাবা-মা, চাচা-চাচী, দাদা-দাদী, নানা-নানী, ভাই-ভাবী বা গ্রামের বয়স্ক মুরুব্বীদেরও তুই বলা কিছুমাত্র অস্বাভাবিক ছিলো না, অসঙ্গত বলেও গণ্য হতো না। আর ভাইয়ে-ভাইয়ে বা ভাইবোনের মধ্যে তুই ছাড়া কিছু তো হিসেবের বাইরেই ছিলো। আমাদের বাড়িতে ভাইবোনদের মধ্যে পরস্পরকে তুই/তুমি বলার চল, আব্বা-আম্মাকে আপনি। ওইরকমই আমাদের শেখানো হয়েছিলো, যেমন হয়েছিলো বাবা-মা সম্বোধনের পরিবর্তে আব্বা-আম্মা। আমাদের গ্রামের বাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে ভাইবোনকে তো বটেই, মাকে তুই বলা আজও প্রায় সর্বাংশেই চালু আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নিয়মিত আড্ডায় আমাদের ঘনিষ্ঠ পাঁচ বন্ধুর মধ্যে আপনি/তুমি/তুই-এর এক খিচুড়ি প্রচলিত ছিলো। আমাকে বাদ দিলে অন্য চারজন ছিলো হাবিব, সিরাজ, মিলন ও সারোয়ার। বয়সের পার্থক্য অবশ্য ছিলো, কিন্তু তারপরেও আপনি/তুমি/তুই-এর যুক্তিসঙ্গত হিসেব মেলানো কঠিন। হাবিব আর্ট কলেজের ও সিরাজ বুয়েটের পড়াশোনা শেষ করেছে আগেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া সারোয়ার ও আমি সমবয়সী। মিলন জগন্নাথ কলেজের এবং আমাদের এক বছরের ছোটো, সিরাজ তিন বছরের ও হাবিব ছয় বছরের বড়ো।
হাবিবের সঙ্গে আমাদের প্রত্যেকের আপনি চলে। বয়োজ্যষ্ঠ হিসেবে হাবিবের পক্ষে আমাদের সবাইকে তুমি, এমনকি করে বলা স্বাভাবিক ও সঙ্গত হতো। কিন্তু হয়নি। সিরাজ-মিলনের মধ্যে তুই-সম্পর্ক। সিরাজের সঙ্গে আমার ও সারোয়ারের আপনি। আমার সঙ্গে মিলনের তুই চলে, সারোয়ারের সঙ্গে আপনি। আপনি সম্বোধনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে সিরাজ একদিন এই মর্মে এক তত্ত্ব উপস্থিত করে যে, আপনি বললে কিছু দূরত্ব বজায় রাখা যায় এবং পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ অটুট থাকে। তুই-তোকারির বন্ধুকে শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দেওয়া যায়, আপনি সম্বোধনের কাউকে শুয়োরের বাচ্চা বলা সম্ভব নয়।
সৌম্য দাশগুপ্ত কবি। বয়সে অনেক ছোটো হলেও সে আমার বন্ধুস্থানীয়। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতা শহরে। তার বাবা বরিশালের, মা চট্টগ্রামের (সেই বাবদে সে চট্টগ্রামের আহমদ ছফাকে মামা বানিয়ে ফেলেছিলো)। সৌম্য সামগ্রিকভাবে নিজেকে বাঙালি এবং আধা-বাংলাদেশী বলে পরিচয় দেয়। আংশিকভাবে তা পিতামাতার জন্মভূমির সূত্রে, বাকিটা বাংলাদেশের বিস্তর মানুষজনের সঙ্গে তার অতি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও সম্পর্কের কারণে। মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়, বাংলাদেশে আমার চেয়ে তার চেনাজানা বেশি।
পরিচয়ের শুরুতে সৌম্যকে আপনি বলতাম। একদিন সে তুমি করে বলার অনুরোধ করলে আমি তাকে কিছুটা অবাক করে বলি, আমাকে জুবায়ের ভাই ডাকো ঠিক আছে, কিন্তু আমাকেও তুমি করে বলবে।
অবাক হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সে বলে, বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে আপনি-আপনি বলার প্রবণতাটা খুব বেশি দেখি। খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও পরস্পরকে আপনি বলেন দেখেছি। অথচ পষ্চিম বাংলায় অত্যন্ত দূরবর্তী বা শিক্ষক ও গুরুস্থানীয় কেউ না হলে আপনি বলা হয় না।
পশ্চিম বঙ্গে বাস্তবতা আসলেও তাই। বয়স্করা শিশুদের অবধারিতভাবে তুই করে বলবে। বাবা-মা ও অন্য সব বয়োজ্যেষ্ঠ আত্মীয়-পরিজনকে তুমি বলার রেওয়াজ। আপনি দিয়ে শুধু সম্পর্কের দূরত্ব বা শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশিত হবে। সেখানেও বন্ধুদের মধ্যে কোথাও কোথাও আপনি সম্বোধন বলবৎ থাকে, তবে তা ব্যতিক্রম বলেই ধরা হয়।
আমাদের দেশেও শহরাঞ্চলে কিছু বদল ঘটেছে। আজকাল শিশুরা বাবা-মাসহ বড়োদের আপনির চেয়ে তুমি বেশি বলে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে তুই-তুমি প্রাধান্য পাচ্ছে। এগুলি চমৎকার ও সহজ সম্পর্কের নির্দেশক বলেই আমার বিশ্বাস।
গত কিছুদিনে সচলায়তনে কারো কারো সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। বয়সে বড়ো হওয়ার কারণে এদের অনেককেই তুমি বলার অনুমোদন পেয়ে গেছি। অথচ কাউকেই বলা হয়ে ওঠেনি যে, তারাও আমাকে জুবায়ের ভাই, তুমি বললে খুশি হই। সৌম্যকে সহজে বলতে পেরেছিলাম। কিন্তু আমাদের মধ্যে ওই চল এখনো গড়ে ওঠেনি বলেই হয়তো বলা যায়নি।
মানুষের জীবন যে কতো অসঙ্গতিতে ভরা তার একটি উদাহরণ আমি ঘরেই তৈরি করে রেখেছি। একদিন খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, আমি আমার মেয়েকে তুই বললেও ছেলেকে তুমি করে বলি। কী করে ঘটলো জানি না। কারণ খুঁজে পাওয়া গেলো না। মানুষের আচরণ আসলে খাপছাড়া হয়েই থাকে – এরকম একটা যুক্তিহীন যুক্তি দিয়েই তাকে যুক্তিসিদ্ধ করা সম্ভব। আর কোনোভাবে নয়।
মন্তব্য
এই আপনি তুমি তুই নিয়ে আমার ঝামেলা মারাত্মক
আমার মুখে তুমি শব্দটা প্রায় আসেই না
আমার প্রচুর ফ্রেন্ডের সাথে আমার সম্পর্ক আপনি
তারা আমাকে তুমি বললেও আমি আপনি আপনি করি
ছোটদের প্রায় সবাইকে বলি আপনি
আর যারা আপনির বাইরে তারা সবাই তুই
এর মূল কারণ আমার মায়ের একটা আজব শিক্ষা ব্যবস্থা
আমার ফ্যামিলিতে তুমি শব্দটা একেবারেই নেই
সব বড়োরা আপনি আর সব ছোটরা তুই
আমি আমার পিঠাপিঠি বড়ো ভাইয়ের সাথে যখন মারামারি করতাম তখনও তাকে গালি দিতাম- আপনি একটা শুওরের বাচ্চা
সেই অভ্যাসটা এখনও রয়ে গেছে
অন্যদের চাপে পড়ে মাঝে মাঝে এখন তুমি বলা শিখছি
'আপনি একটা শুওরের বাচ্চা'
হা হা হা
এইটা দারুণ !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমিও অপেক্ষাকৃত কমবয়সীদের আপনি করে বলি, যতোক্ষণ না তুমি বলার অনুমতি মেলে। একটা বয়সে অচেনা কেউ (বয়স্ক হলেও) তুমি সম্বোধন করলে আমার সহ্য হতো না।
* * * * * * * * * * * * *
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমিও মোটামুটি সবাইকে পাইকারি হারে নাম ধরে এবং আপনি বলে সম্বোধন করি - যেমন আপনাকে অন্য সবাই 'জুবায়ের ভাই' বললেও আমি সবসময়
আমার যুক্তি - একটা বয়সের পরে কে কত 'ছোট' বা 'বড়' তা দিয়ে আর ওইসব 'সামাজিক সম্মান' নির্ধারন করার মানে হয় না। তবে একটা কথা সত্যি, আপনার সাথে যদি আমার কোন বাঙ্গালী দাওয়াতে পরিচয় হত আপনাকে নাম ধরে ডাকার সাহস আমার হতো না, কিন্তু এখানে তো আমরা সবাই লেখালেখির সুত্রে সম্পর্কিত - তাহলে আর অসুবিধা কি? 
'মুহাম্মদ জুবায়ের' বলে থাকি
আর ডাকতে হলেও আমি ভাই না ডেকে দাদা বা আপা না ডেকে দিদি ডাকবো।
পশ্চিম বঙ্গের এই ব্যাপারটা আমার কিন্তু বেশ পছন্দই হয় - যত্তসব অদরকারী ফর্মালিটি বাদ দিয়ে শুরু থেকেই তুমি, বেশ ভালো।
তবে তাই হোক।
দাদা/ভাই, দিদি/আপা এইসব নিয়ে একটা লেখার চিন্তা আছে। দেখা যাক, কবে হয়ে ওঠে।
* * * * * * * * * * * * *
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
তবে কি হোক ? অনুমতি/সম্মতিটা ঠিক কিসের হলো ?
ভাই বা দাদা এবং তুমি। এবং তুমিও এখন থেকে তুমি।
* * * * * * * * * * * * *
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হাহাহাহা
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
হা হা হা।
আপনার ব্লগটা পড়ে আমি নিজেই নিজের দিকে একবার তাকালাম।
আমার নাইনটি পারসেন্ট ব্যাচমেট আমাকে জাহিদ ভাই বলে ডাকে আর আপনি করে সম্বোধন করে
যদিও আমার নাম জাহিদ না; জিহাদ। এই রকম ব্যাপার কখন যে শুরু হইসিল আমি নিজেও ঠিকঠাক মনে করতে পারিনা। মাঝে মাঝে সিনিয়ররাও এরকম সম্বোধন শুনে দ্বিধার মধ্যে পড়ে যায়। অতি উৎসাহী কেউ হাতের কাছে কাউকে পেলে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস পর্যন্তও করেছে যে- ও কি তোমাদের ব্যাচমেট না?
অবশ্য এরকম সম্বোধনে এখন মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বরং কেউ নিজের নাম ধরে ডাক দিলেই আজকাল কেমন অস্বস্তি লাগে। অচেনা অচেনা লাগে।
কি মুশকিল বলেন তো
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
ক্যামনে কী? আমার তো ধারণা ছিলো, আজকাল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠীদের মধ্যে তুই-তোকারিই বেশি চলে!
* * * * * * * * * * * * *
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ভাল লেখা লেখছ (এন)। তবে একটা বিষয় বাদ গেছে। গ্রামে বড় ছেলে বা মেয়ের নাম দিয়ে বাবা বা মা বলে সম্বোধন করাটা। আমার মা বাবাকে ডাকত মুর্শেদের বাপ+আপনি, বাবা মাকে ডাকত মুর্শেদের মা +তুমি।
ছেলেমেয়ের বাপ বা মা বলে সম্বোধন এখানে আমার ঠিক প্রাসঙ্গিক মনে হয়নি। আপনি-তুমি-তুইতে সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছিলাম। তবু উল্লেখ করার জন্যে ধন্যবাদ।
সংকোচের কোনো কারণ নেই, তুমি শোনার জন্যে আমি তৈরি।
* * * * * * * * * * * * *
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
সম্বোধনের ব্যাপারটা অদ্ভূতই। বিয়ের আগে আপনি করে বলতাম। কিন্তু বিয়ের পরও বউকে তুমি বা তুই করে বলতে পারিনি। এমন কি এই বুড়ো বয়সেও না। কেউ কেউ বলে- কেমন কথা? বউরে আপনে কইরা কয় কে?
জবাব দেই- আমি।
-জুলিয়ান সিদ্দিকী
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
এটা আমিও আগে শুনিনি। মন্দ কি!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমার একজোড়া নানা-নানী (মায়ের মামা) একজন আরেকজন কে সবসময় আপনি করে বলেন এখনো।
আমি আব্বা-আম্মাকে আপনি করে বলি। ভাইবোনদের সবাইকে বলি তুই। একদম বড়াপু যার বড় ছেলে প্রায় আমার সমবয়সী তাকে তুমি করে বলি। আর বন্ধুদের শালা/শুয়োর তুই এইসব...
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
বন্ধুদের জন্য শালা,শুয়োর তো অনেক ভাল সম্বোধন
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
আমার ছোটো বোনের সঙ্গে আমার বয়সের পার্থক্য দেড় বছরের। সে আমাকে ডাকে ভাই এবং তুই।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হা হা হা হা হা হা হা
স্থানীয় সংস্কৃতি একটা বড় প্রভাবক। তাই আপনাকে আপনিই বলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি .... যদিও আপনার স্থানে এটাকে তুমি শুনতে বেশি আরাম লাগে।
একই রকম ব্যাপার আছে যখন ডান আর বাম হাত দিয়ে দেয়া-নেয়াটা ভদ্রতার পরিচায়ক হয়। জাপানে দুই হাত-ই সমান। বাঁ হাত দিয়ে দিলে বা নিলে কেউ ওটাকে খেয়াল-ই করবে না ... ... বাংলাদেশে এসে জাপানি ল্যাবমেটরা এটা নিয়ে মাঝে মাঝে অস্বস্তিতে পড়ে ... ... মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে যেতে হয়।
আমরা কাগজের বাম থেকে ডানে লিখলেও সেটা টেবলের পাশের সাথে সমান্তরাল রেখায় নয় - মোটামুটি ৪৫ ডিগ্রী কোণে। অর্থাৎ কাগজটা টেবলের পাশের সাথে কিছুটা কোণ তৈরী করে। কারো কারো ক্ষেত্রে তো এটা অনেক বেশি। ...... জাপানে আমার প্রফেসরের অফিসের সহকারী বুড়ি বলেছিলেন এভাবে লেখাটা not a good manner. সবসময় কাগজটা টেবলের সাথে উলম্ব হয়ে থাকবে এবং লেখা বাম থেকে ডানে টেবলের পাশের সাথে সমান্তরাল হবে - সেটাই আদব; অথচ ঐ কোনে লেখার কথা চিন্তা করাও আমার জন্য মুশকিল।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ঠিক এই কথাটাই বলার ছিলো, আপনি স্পষ্ট করে দিলেন। ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমার এক সহকর্মী কাম সবচেয়ে ভাল বন্ধুর সাথে সম্বোধনের ধরণটা বেশ অদ্ভুত রকমের। প্রথম পরিচযের পর থেকে আমি তাকে তুমি আর সে আমাকে আপনি সম্বোধন করতো। একসময়ে হঠাৎকরে সে আমাকে নিজে থেকেই তুই বলা শুরু করে । সাথে সাথে আমিও শুরু করি। কিন্তু একবার ও আমার ও তার সম্বোধনকে তুই বলাতে মনে কোন প্রশ্ন জাগেনি। মনে হয়েছে এটাই স্বাভাবিক। এটাই হওয়ার কথা সব সময়।এখনও তার সাথে অম্ল মধুর সম্পর্কের মাঝে ওতুইটা বহাল তবিয়তে আছে। অনেক তুইএর ভীড়ে এই তুই টা খুব উপভোগ করি।
চমৎকার। এরকম গল্প শুনতেও ভালো লাগে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনি তুমি তুই - এগুলো আসলেই ঝামেলার ব্যাপার।
_
তবে 'তুই'এর কিছু সুবিধা আছে।
খুব জোর দিয়ে বলা যায় - 'তুই রাজাকার'।
এর পরে আর কথা নাই!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
স্বামী শব্দটার বিকল্প 'বর' চলে না, জুবায়ের ভাই?
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
স্বামী অর্থ মালিক বা প্রভূ। আর স্ত্রীর স্বামী অর্থ সহমর্মী অথবা স্বয়ং +আমি=স্বামী। আমার প্রণীত অর্থগুলা বাংলা অভিধানে সংযোজন করা হোক।
-জুলিয়ান সিদ্দিকী
পছন্দ হলো। ক্ষমতা থাকলে এক্ষুণি অভিধানে যোগ করে দিতাম।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
শিমুল, 'বর' শব্দটার মধ্যেও কিন্তু এক ধরনের পুরুষ-তোষণের গন্ধ আছে। বর মানে তো আশীর্বাদ বা পুরস্কার জাতীয় কিছু। তা পুরুষরা কোন পুণ্যের জোরে কারণে এই অভিধা পাবে?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
বর শব্দটা ব্যবহার করলে দেবররা একটু বেশি সুবিধা পায়
কারণ
দেবর= দ্বিতীয় বর
অন্তত দুই জোড়া দম্পতিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি যাঁরা পরস্পরকে তুই করে বলেন। আমাদের মধ্যবিত্ত নাগরিক সংস্কৃতিতে স্বাভাবিক তো নয়ই, রীতিমতো ব্যতিক্রম ও বিপ্লবাত্মক।
জুবায়ের ভাই, তুমি কিন্তু (আপনার ভালোলাগাটাকে সম্মান জানালাম) উপরের জোড়া দম্পতির পরিচয় দাও নি। পরিচয়ে সঙ্কোচ থাকলে ঐ ডাকাডাকিতে আর মাজেজা কোথায় !
আমার জানামতে এরকম একজোড়া দম্পতি আছেন, আমরা সবাই চিনি। (লুৎফর রহমান রিটন ভাইয়ের মুখে শুনলেই বেশি ভালো লাগতো এবং নিশ্চিত হতাম আমার জানা সঠিক কি না। ভুল হলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।)
আমি যাঁকে এখন তুমি ডাকি, আগে ডাকতাম তুই। সে ডাকতো আপনি, এখন তুমি। আমি আমার বাবাকে ডাকি আপনি, মাকে ডাকি তুমি। আমার সন্তান আমাদের দুজনকেই তুমি ডাকে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
খুব খুশি হলাম, রণদীপ। দুই দম্পতির পরিচয় দিইনি, দরকার মনে হয়নি বলে। দুটোর একটাকে তুমি (অনুমতির অপেক্ষা করলাম না
) চিনে ফেলেছো।
* * * * * * * * * * * * *
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
দম্পতিদের ক্যারফা কিন্তু অন্য রকম
আমার এক ফ্রেন্ড আছে তার স্বামীকে প্রকাশ্যে সে মামা ডাকে
আর আরেক সিনিয়র ফ্রেন্ডের স্ত্রী তাকে প্রকাশ্যে ডাকে- অমুক ভাই
আর তুই তোকারি আমাদের অনেকগুলো ফ্রেন্ড কাপলের মধ্যেই দেখেছি
০২
আমার মনে হয় না ডাকে কিছু এসে যায়
নির্ভর করে ডাকটা কোন গলায় ডাকা হচ্ছে
আমার আশিভাগ ফ্রেন্ডকে আমি স্যার ডাকি
কাউকে সরাসরি ডাকি কুত্তার বাচ্চা কিংবা লিখতে না পারার মতো শব্দ দিয়ে
কোনোদিনও কোনো ঝামেলা হযেছে বলে খেয়াল করিনি
কিন্তু তুমি শব্দটা আমার মুখে কিংবা লেখায় আসতে বেশ কষ্ট হয়
আমার অসংখ্য প্রেমের (তথাকথিত) কবিতা আছে যেগুলো আপনি আপনি কিংবা তুই তোকারি করে লেখা
তুমি শব্দটা নিয়ে আপনার অস্বস্তির কারণ হয়তো আপনারই বর্ণিত পারিবারিক সংস্কৃতির মধ্যে রয়ে গেছে। ক্ষতি কিছু নেই, আপনার পছন্দ না হলে থাক। যাদের ভালো লাগবে তাদের জন্যে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
- শুধু মাত্র বউয়ের ক্ষেত্রে আপনি জিন্দাবাদ।
আর বাদ বাকী ক্ষেত্রে তুই / তুমি।
জার্মান ভাষায় সম্বোধনের এরকম একটা ক্যাচাল রয়ে গেছে।
Sie (জি) = আপনি
Du (ডু / দু) = তুই / তুমি
এরকম কেচাইল্যা শব্দ সম্বলিত ভাষার ব্যাকরণ গুলো আরও ক্যাচাইল্যা হয়। আমাদের মাতৃভাষায় ব্যাকরণ হলো এর একটা খাসা উদাহরণ। জার্মান ভাষার খাইষ্টা ব্যাকরণের কথা নাহয় নাই বললাম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বাপ রে! ব্যাকরণ শুনলেই গায়ে জ্বর আসে।
জার্মান ভাষায় একই শব্দ দিয়ে তুই/তুমি বোঝা যায়? ভুল জায়গায় তুমির জায়গায় তুই বললে বিপদ হয় না?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমি সবাইকেই তুমি বলতে পছন্দ করি
আর বলিও তুমি, যদিনা কেউ আপত্তি করে। 'তুমি' বলা বেশি পছন্দ কারণ যাকে বলা হচ্ছে তাকে বেশি কাছেও না আবার দুরেও না এরকম একটা জাগায় রাখে। আমি মনেহয় জীবনেও কাউকে 'তুই' বলি নাই 
--------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
মজার তো! কমবয়সী বালক-বালিকা কাউকে বলে দেখতে পারেন। মনে হয় মন্দ হবে না অভিজ্ঞতাটা।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
জুবায়ের ভাই এই পোস্টের প্রথম লাইনে যে জাতীয় দম্পতির কথা বলেছেন আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই দলে পড়ি
। অনেক বকাবকি শুনেছি মুরুব্বীদের, এমনকি কোন কোন বন্ধুরও। কিন্তু অনেকদিনের চেনা সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে বিয়ে করা মাত্র আলগা সম্মান দেখানোর জন্য "তুমি" করে বলতেই হবে, এটা মনে করি না। "তুমি" খুব সুন্দর ডাক, আমি ইচ্ছে হলে "তুমি" বলতে পারি। "তুই" আরো সুন্দর, আমাদের কাছে। তাই ইচ্ছে হলে "তুই"। আরও হাবিজাবি অনেক কিছু বলেই আমি আমার প্রিয় মানুষকে ডাকতে পারি। তাইতেই যদি আমার ভালোবাসা, কাছে থাকা, সম্মান, শ্রদ্ধা প্রকাশ পায়, আমি-আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি; সেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধটাই তো আসল।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
সম্পূর্ণ একমত। আপনার জীবন আপনিই যাপন করবেন, অন্যে নয়। সুতরাং নিজের অভিরুচি অনুয়ায়ীই তা করা উচিত।
চাক্ষুষ দেখাসাক্ষাত না ঘটলেও আপনাদের তো চিনি। সে হিসেবে আমার চেনা তুই-বলা দম্পতি দুই থেকে তিনে গেলো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমার খুব কাছের এক জোড়া বন্ধু - তারাও বিয়ের পরও দুজন দুজনকে তুই করেই বলে।
বদলাতে হবেই এমন কোনো কথা তো নেই।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমার পরিবারের একটা ব্যাপার বেশ অদ্ভুত। আমরা ভাইবোনরা সবাই সবাইকে তুই করে বলি। আমার চেয়ে ১০-১২ বছরের বড় ভাই বোনকেও তুই করে বলি। বাইরের কেউ শুনলে ভ্রু কুঁচকে তাকায় - তখন অনুভব করি ব্যাপারটা বেশ ব্যতিক্রমী। কিন্তুএমন না যে আমাদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধের অভাব আছে- এ ডাকে আসলে আমরা বেশ হৃদ্যতা অনুভব করি।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
শহুরে মধ্যবিত্ত মনোভাবের কাছেই হয়তো সেটা অদ্ভুত। আপনার পরিবার সম্ভবত সেই মানসিকতা থেকে খানিকটা দূরে। ফলে তা খুবই স্বাভাবিক আপনাদের কাছে। এই তো!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
(এই বিষয়ে আমার স্মৃতি অনেক বড়, মূল ব্লগের চাইতে মন্তব্য বড় হয়া যাইতে পারে... পাঠক হুশিয়ার)
আমার বাপ মা ভাই বোন সবাইকেই আপনি বলতাম... মাঝখানের দুই ভাইকে কিভাবে যেন তুমি বলা শুরু করেছিলাম। কিন্তু আবার আমার পিঠের বড় বোনকেও আপনিই বলতাম।
আমি বড় হইছি একেবারে মহল্লা কালচারে। মহল্লার সকলেই এক ইশকুলে পড়ি এক মাঠে খেলি... সিনিয়র জুনিয়র সবাই বন্ধুর মতো ছিলো। কিন্তু প্রতিবছর মহল্লাতে একটা গ্যাঞ্জাম কমন ছিলো... তা হইলো তুই বাচক মারামারি। একসাথে যারা এতদিন সিগারেট খাইছি তারাই যখন কলেজে উঠে... বাইরের দুনিয়ার চেহারা দেখে আর বাইরের বন্ধুগো লগে মেশে তখন তারা নিজেরে বড় মনে করে । প্রতিবছরের সিনিয়র জুনিয়র মারামারিটা আমাদের বেলায় মারাত্মক আকার ধারণ করছিলো। আমগো ব্যাচের এক পোলারে সকালে সিগারেট চাওনের অপরাধে ঘুষি মারলো আগের ব্যাচের পোলাপান... দুপুরে আমরা একজোট হয়া তাগোরে পিটাইলাম... বিকালে আমিসহ তিনজন ধরা খাইলাম... আমগোরে এক কনস্ট্রাকশন চলতে থাকা বাড়িতে নিলো পিটাইতে... খবর পায়া মহল্লার মুরুব্বীরা উদ্ধার করলো। তার প্রতিশোধ নিতে পরদিন আমরা যে বাহিনী মহল্লায় আইনা মহড়া দিলাম... তা রীতিমতো ভয়ঙ্কর ছিলো... সারা রাইত বোমা বানানো হইছিলো আর আর্মস আসছিলো বাঙলা কলেজ থেকা। সে এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড। কপাল জোরে আর মুরুব্বীদের হস্তক্ষেপে রক্তারক্তি ঘটে নাই।
তবে সেইখান থেকাই আমার বোধোদয়... আপনি তুমি তুই-এর ক্যাচাল আর ভালো লাগতো না।
তার বহু পরে যখন আমার পিঠ ছড়ানো লম্বা চুল আর দাড়ি গোফসমেত অদ্ভূত একখান চেহারা হইলো... তখন দেখা দিলো এক বিড়ম্বনা। যেই আমারে একবার দেখে সেই মনে রাখে... কিন্তু আমি তো এতজনারে মনে রাখতে পারি না। এই নিয়া পরে বিব্রত পরিস্থিতি হয়। তখন দুইটা শব্দ হেফজ করলাম... বস্ আর আপনে। কেউ যখন আন্তরিকতা নিয়া কথা বলে তখন তারে না চিনলেও বস্ আর আপনে বললে সে ঠাহরই করতে পারে না যে আমি তারে চিনি নাই। সেই থেকা আপনি বলাটা অভ্যাসে পরিণত হইলো। সেই অভ্যাস এখনতক আছে।
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের হয়া স্কুলে স্কুলে বই পড়াইতে যাইতাম। বিশেষ করে বালিকারা তুমি বলার আব্দার করতো... কিন্তু আমি সকলেরে আপনিই বলতাম। একবার এক বালিকা ইশকুলের দশম বালিকারা আমার সম্মুখে দাখিল করিলো তৃতীয় শ্রেণীর এক বালিকাকে... আমি তাকেও আপনিই বলিলাম।
আমার অনেক খুব ঘনিষ্ট বন্ধু আছে যাদেরে আমি আপনি বলি তারা আমারে বলে তুমি। এবং অনেকেই ধারনা করে আমি বুঝি তাদের ছোট... আমি সেইটাতেও আপত্তি করি না।
আবার নতুন পরিচয়ে আপনি বলাটা স্বভাব... কিন্তু অনেকেই এই ব্যাপারটা মানে না। এবং আমার স্বভাবের সুযোগে অনেকেই আমাকে ভাবে তার চেয়ে ছোট... (এক্ষেত্রে আমার চেহারাও দায়ী... এই বদনে বয়সের ছাপ জোটেনা... আমারে এখনো ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট বইলা চালান যাইবে... ছবি দ্রষ্টব্য... এইটা তোলার সময় আমার বয়স ৩০+... কেউ বিশ্বাস করবো?) এবং দিব্যি আমারে তুমি বা তুই বলে। অনেক পরে যখন টের পায় তখন লজ্জা পায়। সেইটা আমার দেখতে মজা লাগে।
আমি একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক... যৌথতায় আরেকজন আছে। তো আমাদের একজন মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ লাগবে... পরিচিত একজনের রেফারেন্সে একজন আসছে বইলা পার্টনার জানাইলো... আমি বললাম নিয়া নেন। নেওয়া হইলো... আমি তিনদিন তিন রাইত এডিটিং কইরা সকালে শর্টস আর ময়লা গেঞ্জি পইরা অফিসে পেপার পড়তেছিলাম... তখন তিনি অফিসে ঢুকলেন টাই গলায় ঝুলায়া... এবং প্রথমেই আমারে অর্ডার করলেন চা আনতে... অবশ্যই তুই সম্বোধনে... আমি তারে চা আইনা দিলাম... পরে যখন সে জানলো আমি তার বস... এবং বয়সেও তার চেয়ে বড়... তখন তার যা চেহারা হইছিলো!!! হা হা হা হা... সে এখন অন্য প্রতিষ্ঠানে আছে... আমি এখনো তারে আপনি বলি... সে আমার অনুমতি সাপেক্ষেই আমারে তুই বলে।
আমি যার সাথে ৮ বছর প্রেম করছি... তারে আমি তখনও এখনও আপনি বলি... সেও বলে। এছাড়াও আমার যতো নারী সুহৃদ... তাদের প্রত্যেকের সাথেও আমার আপনা আপনিই সম্পর্ক।
খালি অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পরে আমার বউ তারে তুমি বলাইতে পারছে। কিন্তু এখনো কোনও বিষয় আলোচনা করতে গেলে মাঝপথে তারে আপনে বইলা ফেলি।
উফ... এবার কেউ আমারে থামান... স্যরি জুবায়ের ভাই... আমি মন্তব্য ছোট রাখতে পারলাম না... আর আপনারেও তুমি বলতে পারলাম না। তবে আমারে যে যা খুশি ডাকতে পারে... আমি এক্কেরেই মাইন্ডাই না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমি যার সাথে ৮ বছর প্রেম করছি... তারে আমি তখনও এখনও আপনি বলি... সেও বলে। এছাড়াও আমার যতো নারী সুহৃদ... তাদের প্রত্যেকের সাথেও আমার আপনা আপনিই সম্পর্ক।
খালি অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পরে আমার বউ তারে তুমি বলাইতে পারছে।
---------মানে টা কি? বউ আর প্রেমিকা কি প্রকাশ্যেই আলাদা?
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
বুঝছি... ব্যাকারন জটিলতা... এই আট বছর দুই বছর আগে গত হইছে। এখন দুইজনেই আলাদা আলাদা বিবাহিত। কিন্তু বন্ধুত্ব বহাল আছে। সেইটা বউয়ের গোচরেও আছে। আজকাও বউ জিগাইলো আমি তার বিবাহবার্ষিকীতে উইশ করছি কি না।
এখন আর তারা কেউ প্রেমিকা নাই... সকলই সাবেকালাপ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
@ নজরুল ইসলাম, আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে অনেক কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো। সেসব পরে কখনো কোথাও বলা যাবে। তবে লিখেছেন চমৎকার। মন্তব্য না বলে এটাকে সম্পূরক পোস্ট হিসেবেও ধরা যায়।
ধন্যবাদ সময় করে পড়ার জন্যে, এবং লেখার জন্যে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমার দেখা দুটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ:
আমার এক বন্ধুর ফ্যামিলি বেশ মজার। তাদের বাড়ীর সব বড়রা ছোটদের আপনি করে বলে যেমন "চড় মেরে আপনার দাঁত ফেলে দেব।" আর ছোটরা বলে যেমন "কাকা তুই আমাকে চকলেট কিনে দিবি?"। যৌথ ফ্যামিলির (মুসলিম) কর্তা রাশভারী বাবা একমাত্র ব্যতিক্রম এ রুলে।
এক কাজিনের প্রেমের বিয়ে, সহপাঠী বলে তুইতোকারিতে সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরে তুই বলে ফেলে বহুবার তাদের গুরুজনের সামনে অপ্রস্তুত হতে দেখেছি।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
@ রেজওয়ান, প্রথমটা সত্যিই ব্যতিক্রমী। ঠিক তুলনীয় নয়, তবু তারাপদ রায়ের বাচ্চাদের জন্যে লেখা সিরিজ 'ডোডো-তাতাই পালাকিহিনী' মনে পড়ে গেলো। ডোডো ও তাতাই নামের দুই বাচ্চা ছেলে পরস্পরকে ডোডোবাবু ও তাতাইবাবু সম্বোধন করে এবং আপনি-আপনি করে কথা বলে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
নিজেদের ছেলেমেয়েদেরকে অনেকে তুমি করে ডাকে। যদিও এটা যার যার পছন্দের ব্যাপার; কিন্তু আমার মনে হয় এখানে তুই ডাকটাই ভালো। আপনির চাইতে তুমি যেমন কাছে, তুমির চাইতে তুই তেমনি সুহৃদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ব্লগস্পট ব্লগ...ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আব্বা আমাদের সব ভাইবোনকে তুমি বলতেন, আম্মা বলেন তুই।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
কোলকাতার দিকে কলেজে সিনিয়ারদের তুমি আর ক্লাসমেট ও জুনিয়রদের তুই করেই বলার রীতি। জুনিয়রের সাথে প্রেম হলে তুই থেকে তুমি বানাতে হয় ছেলেকে। আর বাংলাদেশে জুনিয়রের সাথে প্রেম হলে আপনি থেকে তুমি বানাতে হয় মেয়েকে ... উদ্ভট এক সমস্যা ...
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সত্যিই ছকে ফেলা মুশকিল।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
তুমি সম্বোধন করার মতো মানুষ খুব কম আমার জীবনে। হয় আপনি, নয় তুই। খুব কাছের জনদের তুই ছাড়া বলতে পারি না। আমার বউর সঙ্গেও তুই-তোকারি সম্পর্ক।
তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই
তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই
রুশ ভাষায়ও নাকি শুধু আপনি এবং তুই।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমি সহজে কাউকে তুমি বলতে পারিনা। ছোট হোক বড় হোক আপনি-টাই চলে আসে। আমি নিজের ছেলে মেয়ে কে তুমি বলি। আবার নিজের ভাই বোনদের তুই বলি। এর যে কি রহস্য জানিনা। হঠাৎ একদিন ব্যাপারটা খেয়াল করি।
নন্দিনী
এত মন্তব্যের পর আর কোনো মন্তব্য লেখার মানে হয় না। সব লেখা হয়ে গেছে। আমি তাই আর কিছু লিখলাম না।
বউরে সাধারণত তুইই বলি, তুমিও বলা হয়, মাঝে সাঝে আপনি... একি অবস্থা তারও।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
অনেক শেষে পড়লাম।
বাবাকে "আপনি", মা কে "তুমি", বড় ভাইবোনদের "তুই" বলি।
বাবা অনেক দূরের মানুষ ছিলেন, তাই তাকে সবাই আপনি বলতো।
কিন্তু মা খুব কাছের।
অন্য ভাইবোনেরা মা কেও "তুই" বলে।
বাসায় থাকতে কোনদিন খেয়াল করি নি, জীবনের প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ার পর হঠাৎ একদিন দুম করে মনে হয়েছিল, আরে, আমি কেনো মা কে "তুই" বলি নি কখনো?
জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনীকে "তুই" বলে আজকাল অনেকে। কেমন যেন কানে বাঁধে। আমার মনের ভিতরে পুরনো মানুষ রয়ে গেছে একটা বড়সড় সম্ভবত।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
আমাদের ফার্স্ট ইয়ারের দুই বন্ধু সেকেন্ড ইয়ারে এসে যুগলবন্ধী হয়ে যায়। তারপর তুই-তোকারি থেকে সোজা তুমি-তুমি! খুবই হাস্যকর লাগে আমার কাছে। হেহেহেহ...
তুই তুই করে বললে সমস্যা কী?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
নতুন মন্তব্য করুন