আমার কম্পুকানা প্রজন্ম

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: বুধ, ৩০/০৭/২০০৮ - ৯:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকায় এক বন্ধুকে ইমেল করেছি একটা দরকারি প্রশ্ন করে। অপেক্ষায় সপ্তাহ কেটে যায়, উত্তর আসে না। অগত্যা ফোন করি। বন্ধু ঘুমচোখে হ্যালো বলেন।

দোস্ত, তোকে একটা ইমেল পাঠিয়েছি সপ্তাহখানেক আগে। পেয়েছিস?

তাই নাকি? না রে দোস্ত, খুব ব্যস্ত ছিলাম। ইমেল খোলা হয়নি।

এটাই প্রথম বা শেষ নয়, দেশে আমার অনেক বন্ধু আছেন, যাঁদের সঙ্গে এই ধরনের কথোপকথন নিয়মিতই হয়। এঁরা কমপিউটার-বিমুখ অথবা কম্পুকানা প্রজন্মের প্রতিনিধি। এঁদের প্রায় সবারই কর্মস্থলে কমপিউটার ব্যবহার অনেকটা বাধ্যতামূলক। হয়তো নেহাত ছক-বাঁধা কাজগুলি তাঁরা করেন মোটামুটি যান্ত্রিকভাবে, নাক-চোখ-মুখ বন্ধ করে, কোনোমতে শেষ হলেই বাঁচোয়া। কারো কারো বাড়িতেও আছে, তবে তা হয় ছেলেমেয়েদের প্রয়োজনে অথবা স্রেফ শোভাবর্ধনের জন্যে।

ইমেল পাঠিয়ে কয়েকদিন অপেক্ষার পর ফোন করে ইমেল খুলতে বলাটা হাস্যকর বটে। দুঃখেরও। তাহলে আর ইমেল করা কেন? সময় নষ্ট না করে ফোনটাই করা যতো দিনকয়েক আগে।

আগেভাগেই বলে রাখি, আমি নিজে কম্পুকানাদের দলে যদিও কর্মসূত্রে সর্বক্ষণ কম্পু নাড়াচাড়া করতে হয়, ঘরেও অনেকটা সময় কম্পুতেই যায়। কিন্তু সে বিষয়ে আমার বিদ্যা বা দক্ষতা নিচের দিকে। আমার জানার পরিধি ততোটুকুই, যা হলে কোনোমতে কাজ চলে যায়। এর বাইরে আরো কিছু জানা বা শেখা দরকারি মনে হলেও সেই বাসনা নিবারণের মহৌষধ, কী দরকার! এই তো বেশ চলে যাচ্ছে।

কমপিউটারে টাইপিং স্পীড দেখে আমার দশ বছর বয়সী পুত্র হাসাহাসি করে। বলে, এই স্পীড নিয়ে তুমি কাজ করো কী করে?

আমি হাসি আর মনে মনে বলি, চুপ। একদম চুপ, কেউ যেন না শোনে!

বস্তুত আমি এমন এক প্রাচীন এবং প্রযুক্তির বিচারে অক্ষম-অসহায় প্রজন্মের মানুষ যাঁদের কমপিউটার সম্পর্কে এক ধরনের জড়তা ও ভীতি আছে। জড়তার ধরণ, ‘আমি কি পারবো? না পারলে খুব লজ্জার কথা।’ ভীতিটা হলো, ‘টেপাটিপি করতে গিয়ে যদি কম্পু নষ্ট হয়!’

অতি-সতর্কতা ও অর্থহীন ভীতি আমার প্রজন্মের অধিকাংশ মানুষকে কম্পুকানা করে রেখে দিয়েছে। এঁরা একান্ত বাধ্য না হলে কমপিউটারের আশেপাশে ক্কচিৎ-কদাচিৎ ভেড়েন, অন্যথায় সম্পূর্ণ সংস্রবহীন থাকতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে কমপিউটার ও আনুষঙ্গিক অনেক প্রযুক্তি আজকের পৃথিবীর বাস্তবতা এবং সেসব আমাদের জীবনধারণ ও জীবনাচরণের অংশ হয়ে গেছে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তা খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করে এবং তা ব্যবহার করে অনায়াস দক্ষতায়। সমস্যা শুধু অপেক্ষাকৃত বয়স্কদের নিয়ে, যাঁরা আমার প্রজন্মের মানুষ। অথচ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কমপিউটার না জানা মানুষকে অশিক্ষিত গণ্য করা হবে বলে ধারণা করি। আমার বন্ধু ও সমবয়সীরাও তা জানেন এবং স্বীকার করেন, কিন্তু বিচিত্র উপায়ে চোখ ফিরিয়ে রাখতেও তাঁরা সক্ষম।

কম্পুতে বাংলা লেখা সম্ভব জেনে এঁদের কেউ কেউ আজও বিস্মিত হন। যাঁরা অল্পবিস্তর কম্পু ব্যবহার করেন, তাঁরা শেখার আগ্রহ দেখান। সেই আগ্রহ স্থায়ী হয় না। তাঁদের কিছুতেই বোঝাতে পারি না, আমরা যারা দুরূহ বিজয় কীবোর্ড শিখেছিলাম, সে তুলনায় আজকাল কম্পুতে বাংলা কতো সহজ হয়ে গেছে, রোমান হরফ ব্যবহার করেও বাংলা লেখা যায়।

ব্যতিক্রম দেখিনি, তা নয়। আমার এক বন্ধুর অধ্যাপক পিতা আমেরিকা এলেন বেড়াতে। ঐ স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস করে কমপিউটার শিখে ফিরে গেলেন।

কমপিউটারে আমার কিছু আগ্রহ জন্মায় আশির দশকের শেষে। হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার ইত্যাদি একদম প্রাথমিক বিষয়গুলি শেখার জন্যে ক্লাস করতে গেলাম, সব মাথার ওপর দিয়ে গেলো। একজন পরামর্শ দিলেন, কমপিউটার কিনে বাড়িতে নিজে হাতেকলমে শেখা সবচেয়ে ভালো। প্রথমটা কিনলাম ৯০-এর অগাস্টে, স্পষ্ট মনে আছে। যন্ত্রটি ছিলো আইবিএম পিএস-টু, সিপিইউ-মনিটর একত্রে। আর কী ওজন তার! একটা আইবিএম প্রিন্টারসহ দাম পড়লো এক হাজার ডলার, হোক না অন্যের ব্যবহার করা পুরনো জিনিস। অপারেটিং সিস্টেম ডস, যতোদূর মনে পড়ে উইন্ডোজ তখন এসে গেছে, কিন্তু এই কমপিউটারে চলবে না। সেই শুরু আমার কম্পু-কম্পু খেলা।

আমেরিকা ও কানাডায় বসবাসকারী আমার সমবয়সী কিছু বন্ধুবান্ধব ছোটোখাটো কম্পু-প্রশ্ন নিয়ে আমাকে মাঝেমধ্যে ফোন করেন। দুরূহ কিছু হলে আমি নেই, কিন্তু এইসব প্রাথমিক স্তরের জিনিসগুলি বিষয়ে সমাধান বাতলে দিতে পারলেও আমাকে তাঁরা বিশেষ প্রতিভাবান মনে করেন। বিশ্বাসই করেন না যে আমার বা তাঁদের ছেলেমেয়েরাও এই সমাধান দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম।

একবার এক বন্ধু তাঁর কম্পুতে একটা প্রোগ্রাম ডাউনলোড করে ইনস্টল করবেন। ফোনে তাঁকে আমি কী করতে হবে ধাপে ধাপে বলে যাচ্ছি। এক পর্যায়ে তিনি আটকে গেলেন। ভীষণ গিট্ঠু। আমি যতো সহজ করে বলার চেষ্টা করি, তিনি কিছুতেই বুঝতে পারছেন না। অধৈর্য তিনি প্রায় হাল ছেড়ে দিতে উদ্যত। শেষ চেষ্টা হিসেবে তাঁকে বললাম, আপনার মেয়েকে ফোনটা ধরিয়ে দিন, সে এক মিনিটে বুঝে যাবে।

খুবই অনিচ্ছায় তিনি বিশ্বিবদ্যালয়ে-পড়ুয়া মেয়েকে ডাকলেন এবং আমার অনুমান ঠিক, মেয়ে এক মিনিটে সমাধান করে ফেললো। তার কাছে এটা ডালভাত।

বন্ধুকে বললাম, বলেছিলাম না ও ঠিক পারবে?

বন্ধু গম্ভীর গলায় জবাব দিলেন, দেখতে হবে না কার মেয়ে!


মন্তব্য

এম. এম. আর. জালাল এর ছবি

আমেরিকা ও কানাডায় বসবাসকারী আমার সমবয়সী কিছু বন্ধুবান্ধব ছোটোখাটো কম্পু-প্রশ্ন নিয়ে আমাকে মাঝেমধ্যে ফোন করেন। দুরূহ কিছু হলে আমি নেই, কিন্তু এইসব প্রাথমিক স্তরের জিনিসগুলি বিষয়ে সমাধান বাতলে দিতে পারলেও আমাকে তাঁরা বিশেষ প্রতিভাবান মনে করেন।

আমি এদের মধে্্য্য একজন ।

এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"


এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

বিলটা এখনো পাই নাই। দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সৌরভ এর ছবি

আমি হাসি আর মনে মনে বলি, চুপ। একদম চুপ, কেউ যেন না শোনে!

হেহে।
আপনারা আছেন বলেই, আমরা কম্প্যুজ্ঞান বেচে দুটো খেতে পাই।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ক্ষতি কি আমাদের অজ্ঞানতা যদি কারো কাজে লাগে! দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমার মা কম্পিউটার ব্যবহার শিখেছে শুধু এবং শুধুই আমি বিদেশে আছি বলে। অন্যথায় তাকে কম্পুমুখো করা যমেরও অসাধ্য। এখন অনায়াসে ভিডিও চ্যাট করে। বাইরে আসার পর একাকিত্ব ঘোচানোর জন্য অনলাইনে চ্যানেল আই, ইত্যাদি দেখা শিখেছে। ইমেইল করতে শিখেছে কাজ থেকে ওভাবেই যোগাযোগ করে বলে।

প্রকৃত অর্থে সব পর্যায়েই কম্পুশিক্ষা প্রয়োজন দ্বারা সীমায়িত। যে-কারণে আপনি নৈমিত্তিক কাজটুকু পর্যন্ত জানেন, যে-কারণে আমি শুধু C পর্যন্ত জানি, সেই একই কারণে আপনার ঢাকাস্থ বন্ধুরা টেলিফোনে সীমিত।


রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

প্রয়োজনের ব্যাপারটাই তো আসল কথা। আজকের পৃথিবীতে কমপিউটার অতি আবশ্যকীয় বস্তু। বন্ধুদের সম্পর্কে আমার নালিশ, তারা এই প্রয়োজনটা বোধ করে না কেন?

কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে এক বন্ধু ফোনে অনুরোধ করলেন ইন্টারনেট থেকে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে দিতে। শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝলাম না। কারণ, ইন্টারনেট সুবিধাসহ একটি আস্ত কমপিউটার বন্ধুর অফিসের টেবিলে মজুত আছে। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমাদের অফিসে এখনও নিয়মিত - কাউকে ইমেল করলে তাকে ফোন করে কনফার্ম করতে হয়, "অমুক সাহেব আপনাকে একখানা ইমেল করা হয়েছে। দয়া করিয়া চেক করিবেন।"
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ইহাই আমার কাহিনী। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

কনফুসিয়াস এর ছবি

হো হো হো
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

হো হো হো

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

guest_writer এর ছবি

আমার খালার বাসায় গেলেই আগে খালা বলতেন, 'বাবা, আমাকে একটু কম্পিউটার টা শিখিয়ে দিও তো।'

কেন???? কারণটা আর কিছুই না......ওনার ছেলে -আমার দুবছরের বড় খালাতো ভাই নাকি শেখাতে চায় না......

সেদিন গেলাম বাসায়......বললেন, 'বাবা, তুমি ফেসবুক পার? নর্থ ক্যারোলিনাতে বড়মেয়েটা নাকি সুন্দর ফুলের বাগান করে ছবি তুলে ফেসবুক না কোথায় দিয়েছে......ও বদমাশটাতো (আমার খালাতো ভাই) কিছুই দেখায় না!!!'

দেখিয়ে দিলেম আমার একাউন্ট থেকে......

এবার......'বাবা, আমাকে একটু ফেসবুকটা টা শিখিয়ে দিও তো।'

- টিকটিকির ল্যাজ

সৌরভ এর ছবি

খাইসে! গড়াগড়ি দিয়া হাসি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার অফিসেও এক বয়স্কা একদিন ফেসবুক সম্পর্কে জানতে চাইলেন। আমি নিজেই দেখিনি কখনো, তাকে কী বলি! আগ্রহ কখনো হয়নি তা নয়, আসলে সময় নেই।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

স্বপ্নাহত এর ছবি

আমি আমার বাবাকে এখনো ঠিক ঠাক কম্পিউটার অন করাই শেখাতে পারিনি।

অফ করা শেখানোর সময় বোধহয় এখনো আসেনি, তাইনা? হাসি

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ঠিক কথা। অফ করার আগে তো অন করতে হবে। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমাকেও প্রায়ই ইমেইল করার পর এসএমএস করে জানাতে হয় যে একটা মেইল পাঠিয়েছি! হাসি

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

প্রমাণিত হচ্ছে, ভুক্তভাগী আমি একা নই। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সবজান্তা এর ছবি

আর ভাই কম্প্যুটার ! আমার বাবাকে যে কত কষ্টে মোবাইল ব্যবহার করাই শিখালাম।

কম্প্যুটার মাঝে মধ্যেই শিখতে চায়, কিন্তু সময় আর আগ্রহ দুই-ই হারিয়ে ফেলে পরে।


অলমিতি বিস্তারেণ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমি একজনের কথা জানি, তাঁর হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান করার খুব শখ। শিখতে গিয়ে দেখলেন, দুই হাত একসঙ্গে চলছে না। বাঁ হাত চললে ডান হাত বন্ধ। ডান হাত হারমোনিয়ামের রীডের ওপর যখন চলছে, বাঁ হাত ততোক্ষণে থেমে গেছে। দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নিঘাত তিথি এর ছবি

হা হা হা। আমি আবার কাউকে কাউকে দেখেছি, দুই হাত একই তালে চলে। ডান হাতের আঙ্গুল নাড়ালে বাম হাতের আঙ্গুলও একই গতিতে চলতে চায়! অথচ হারমোনিয়াম বাজাতে গিয়ে তো বাম হাতের আঙ্গুল নাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

বাঁ-হাতি হলে? চোখ টিপি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

দ্রোহী এর ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ের ঘটনা। শহীদুল্লাহ হলে তখন ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। কম্পিউটারের মালিকগন অবসরে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গেম খেলে।

"হাউজ অব দ্য ডেড" নামে একটা গেম খুব জনপ্রিয় হয়ে গেল। গুলি করে জোম্বি মেরে কিছু মানুষকে উদ্ধার করার গল্প।

এমন সময়ে শহীদুল্লাহ হলে এক অত্যাশ্চর্য খেলেোয়াড়ের সন্ধান মিললো। সে যখন আঙুল দিয়ে মাউস টিপে গুলি করে জোম্বি মারে তখন আঙুল নাড়ানোর তালে তালে তার জিহবা সাপের মত ঢুকে-বের হয়। সে এক অসাধারণ দৃশ্য.... না দেখলে বোঝা সম্ভব না!

সে যখন গেম খেলত আশেপাশে মানুষের ভীড় জমে যেত। জিহবা দেখার জন্য।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমিও কম্পুকানা !

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ক্যাম্নে কী? আপনি তো আমার প্রজন্মের মানুষ না বলেই জানতাম! দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

রণদীপম বসু এর ছবি

আমার মতো আকামা মানুষ হলে ইমেইলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিৎ। কেননা সারাদিনে আসে সর্বোচ্চ গোটা দশেক। তাই ঠিকই দায়িত্ববান হবার সুয়োগ একটা থেকে যায় বৈ কি। কিন্তু ধরুন পত্রিকা অফিসে পাঠালেন কিছু। কি মনে হয় ? ইহ জনমে ওটা কি ঘোমটা খুলবে ? ওখানে হয়তো ইমেল যায় ঘণ্টায় ১৮০ টা। পরিচিত হলে পরে ফোন করে প্রেরণ সংবাদ দিতে হবে । আর রিকোয়েস্ট করতে হবে খুলে দেখার জন্য। কিন্তু পরিচিত না থাকলে ? অতএব সেই ডাকবাবুর যুগের সীলগালা করা খামেরই নিশ্চয়তা বেশি।

ভুতের পা নাকি পেছনের দিকে থাকে। পত্রিকা অফিসের ই-মেল সুবিধা সে রকমই।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সারাদিনে আসে সর্বোচ্চ গোটা দশেক।

আমি যাদের কথা বলছি, তাঁরা ইমেল পান সপ্তাহে গোটা দশেকের বেশি না। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

শেখ জলিল এর ছবি

দেখতে হবে না কার মেয়ে!
..খুব হাসলাম।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ক্যামেলিয়া আলম এর ছবি

আমি শুধু কম্পুকানাই না কম্পুকালাও------ কেউ কিছু বললে বুঝি তো না আরও ভয়াবহ সমস্যার জালে জড়ায় যাই। কম্পিউটার থেকে নাকি কিছুই যায় না /হারায় না/টিপাটিপি করলেই শেখা যায় ইত্যাদি ইত্যাদি কতগুলা কথা এক ইতরের কাছে শুনে আমি এই পর্যন্ত ১০/১৫টা ফাইল গায়েব করে দিছি। কিছুদিন আগে আমার লেখা এক নাটক গায়েব করে দিছি। খুবই মনক্ষুন্ন মন নিয়ে মনে হল একজনকে তো হার্ড কপি দিয়েছিলাম তার থেকে আবার নিয়ে কম্পোজ করব-----শালারে জানানোর পর থেকে সে নাটকও দেয় না আমার মোবাইলও আর রিসিভ করে না
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........

.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........

রেনেট এর ছবি

কম্পিউটার থেকে নাকি কিছুই যায় না /হারায় না/টিপাটিপি করলেই শেখা যায় ইত্যাদি ইত্যাদি কতগুলা কথা এক ইতরের কাছে শুনে আমি এই পর্যন্ত ১০/১৫টা ফাইল গায়েব করে দিছি।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

কম্পুকালা! নতুন একটা শব্দ পাওয়া গেলো। দেঁতো হাসি

কিন্তু আপনার সমস্যা তো জটিল। অতোটা খারাপ না হলেও আমার নিজেরও এরকম অবস্থা হয়েছে দুয়েকবার। এখন থেকে নিজের দরকারি ফাইলপত্রগুলির ব্যাকআপ রাখার (কম্পুর বাইরে) তরিকাটা জেনে নিন কোনো "উপযুক্ত" শিক্ষকের কাছে। আমিও ঠেকে শিখেছি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নিরিবিলি এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
আমি ভাই আব্বুকে আগের দিন যা শিখাই পরের দিনও তাই শিখাই কোন উন্নতি নাই।

আব্বুর কথা কি বলি আমারও তো অনেক কিছুই মাথার পাশ দিয়া যায়। আর টাইপ তো শিখলাম সেদিন।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

লেগে থাকলে হয়ে যাবে একদিন... দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আমার আব্বুও অনেক স্লো টাইপ করে, আর আম্মুতো আরো কম জানে খাইছে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

তবু তো পারেন তাঁরা! হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

তানভীর এর ছবি

বিগত কিছুদিনের মধ্যে আমার একসাথে দু'দু'টা 'কম্পুবিয়োগ' হয়েছে- মানে ডেটা-মেটাসহ একেবারে পটল তোলা আর কী। আপনে তো শখের কম্পুকানা আর আমি এখন আমি কম্পু কানা-খোঁড়া সব হয়ে বসে আছি মন খারাপ

টিনের বাক্সে জনগণ টেকা দিয়া যান, দুর্দিনের বাজারে জরুরী ভিত্তিতে কম্পু সাথে একটা এক্সট্রা হার্ড ডিস্ক কেনা লাগবে

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

কমপি-বিয়োগে সমব্যথিত হয় বলি: ইন্নালিল্লাহে ওয়া...

আমি শখের কম্পুকানা কে বললো? কিন্তু তুমি দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ, কম্পু-বিপর্যয়ে টিনের বাক্স বাড়িয়ে দেওয়ার কায়দাটা কোথায় শিখলে? ঠিকাছে, লাগে টাকা ভাগে দেবো, না লাগলে কিন্তু একাই দেবো - আগেই বলে রাখছি। চোখ টিপি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

তানভীর এর ছবি

'বিপদে বন্ধুর পরিচয়'- বিপর্যয়ের সময়েই তো টিনের বাক্স বাড়িয়ে দেয়া লাগে দেঁতো হাসি

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

দ্রোহী এর ছবি

আমার আব্বাজান টাইপরাইটার ব্যবহার করতে জানেন তাই তিনি ওয়ার্ড প্রসেসর আর ইমেইলের ব্যবহার জানেন। যতদুর জানি খানিকটা এক্সেলও জানেন, কাজের সুত্রে ব্যবহার করতে হয়।

আর আমি কিছুই জানি না।

আমার ক্ষেত্রে প্রজন্ম উল্টে গেছে।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

দ্রোহীর বিনয়! দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অনিন্দিতা এর ছবি

আর আমি এতই কম্পুকানা যে সচলায়তনে শুধু কমেন্ট দিতে পারি ,কোন লেখা দেওয়ার তরিকা বের করতে পারি না।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ইহা অজুহাত মাত্র। প্রবাদ বলছে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।