১.
বৈপরীত্যে ভরা মানুষের জীবন। হুমায়ুন আজাদের জীবনও তার ব্যতিক্রম ছিলো না। প্রশংসা করে লিখলেন শামসুর রাহমান : নিঃসঙ্গ শেরপা নামের বইটি, সেই শামসুর রাহমানের নামে এখানে ওখানে কুৎসা গেয়েছেন তিনি নিজে। মতামত প্রকাশে কিছুটা চমক সৃষ্টির ঝোঁকও তাঁর ছিলো বলে মনে হয়, যা তাঁর বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না।
আমাদের দেশে নির্ভয়ে সত্যউচ্চারণ করার মতো সাহসী বুদ্ধিজীবীরা ভয়াবহ রকম...১.
বৈপরীত্যে ভরা মানুষের জীবন। হুমায়ুন আজাদের জীবনও তার ব্যতিক্রম ছিলো না। প্রশংসা করে লিখলেন শামসুর রাহমান : নিঃসঙ্গ শেরপা নামের বইটি, সেই শামসুর রাহমানের নামে এখানে ওখানে কুৎসা গেয়েছেন তিনি নিজে। মতামত প্রকাশে কিছুটা চমক সৃষ্টির ঝোঁকও তাঁর ছিলো বলে মনে হয়, যা তাঁর বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না।
আমাদের দেশে নির্ভয়ে সত্যউচ্চারণ করার মতো সাহসী বুদ্ধিজীবীরা ভয়াবহ রকমের সংখ্যালঘু। অল্প সময়ের ব্যবধানে আহমদ শরীফ ও আহমদ ছফার মৃত্যুর পর মনে হয়েছিলো, এখন? শাসক, সমাজের মোড়ল ও ধর্মান্ধদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্যি কথাটি বলার মতো হাতে রইলেন এক হুমায়ুন আজাদ। তাঁকেও যেতে হলো। পূর্বোক্ত দু’জনকে হুমকি-ধামকি প্রচুর দেওয়া হয়েছিলো, প্রাণসংশয় হয় এমন শারীরিক আক্রমণের মুখে তাঁদের পড়তে হয়নি। হুমায়ুন আজাদকে হয়েছিলো। তাঁর মৃত্যুর জন্যে সেই আক্রমণকে হয়তো প্রত্যক্ষভাবে দায়ী করা চলে না, কিন্তু পরোক্ষে তা অস্বীকার করা অসম্ভব বলেই মনে হয়।
আর সব মানুষের মতো তিনিও দোষেগুণে মানুষ ছিলেন। ঔপন্যাসিক হিসেবে তাঁকে তেমন কিছু একটা কখনোই মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে নিজের বক্তব্যটিকে যেনতেন প্রকারে প্রচার করার জন্যে কিছু সম্ভব-অসম্ভব ঘটনা ও দ্বন্দ্বের অবতারণার দিকেই তাঁর ঝোঁক বেশি ছিলো। হুমায়ুন আজাদের ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে গবেষণাকর্ম নিয়ে আমি আদার ব্যাপারীও নই। কবি হিসেবে কতোখানি সফল-অসফল তা নিয়েও আমার মতামত দেওয়া সাজে না। তবে আধুনিক বাংলা কবিতা সংকলনে পক্ষপাতমূলক নির্বাচন তাঁর সুনাম বাড়ায়নি, বরং তাঁর বিবেচনাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী মানুষ ছিলেন তিনি। সেই আত্মবিশ্বাস, বিশেষ করে নিজের মৌলিক রচনাগুলি সম্পর্কে তাঁর ধারণা অনেকটাই বাস্তবতাবিবর্জিত মনে করা যায়। বাংলা ভাষায় লিখিত একমাত্র তাঁরই রচিত কিছু কবিতা ও গদ্য বিশ্বমানে পৌঁছাতে পেরেছে, এরকম বালখিল্য দাবিও তিনি একাধিকবার করেছেন।
২.
হুমায়ুন আজাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় আমার ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডরে কয়েকবার ছাড়া তাঁকে চাক্ষুষ দেখিওনি আর কোথাও। যদিও তাঁর লাল নীল দীপাবলী বইটি বিষয়ে আলোচনা লিখেছিলাম ১৯৭৭-এ। আমার ছোটো বোনের সরাসরি শিক্ষক ছিলেন তিনি। সে তাঁর ভক্ত হিসেবে আমাকে ৯২ সালে পাঠিয়েছিলো প্রবচনগুচ্ছ। ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে আমার অবিশ্বাস তার স্যারকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিলো আমার নামে। সে বই আমার হাতে আসার কয়েকদিন আগেই বইমেলা থেকে বেরিয়ে দুর্বৃত্তদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন খবর পেয়েছি। বইটি পৌঁছালে হুমায়ুন আজাদের স্বাক্ষরের নিচে তারিখ দেখে চমকে উঠতে হয়। ওই তারিখেই তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন।
পরিচিত এক ভদ্রমহিলা আমার অবিশ্বাস পড়তে নিয়েছিলেন। বইটি তাঁকে পড়তে দেওয়া যায় কি না, এই নিয়ে কিছু দ্বিধায় ছিলাম। এই বইয়ে হুমায়ুন আজাদ সকল ধর্মবিশ্বাসের প্রতি প্রবল অনাস্থা জানিয়েছেন, মানুষের ধর্মবিশ্বাসগুলির অযৌক্তিকতা ও অসারত্ব সবিস্তারে বলেছেন তীক্ষ্ণ যুক্তি দিয়ে। আমার দ্বিধা ছিলো সেই কারণেই। ভদ্রমহিলা বড়ো হয়েছেন ধর্মপরায়ণ পরিবারে, ছোটোবেলা থেকে ধর্মবিশ্বাস ও আচরণে নিষ্ঠ। এখন ধর্মাচরণে অনিয়মিত হলেও ভদ্রমহিলার বিশ্বাসটি অক্ষত ও অটুট। তাঁর বিশ্বাস আহত হোক তা আমি চাইনি। একরকম জোর করেই তিনি বইটি নিয়ে গেলেন।
পড়া হয়ে গেলে বইটি ফেরত দিয়ে মহিলা অপ্রত্যাশিতভাবে একটি আশ্চর্য মন্তব্য করলেন। গ্রন্থে উপস্থাপিত তথ্য ও যুক্তি সম্পর্কে তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন, একমাত্র আমার অন্ধবিশ্বাস ছাড়া আর কিছু দিয়ে তো আমি হুমায়ুন আজাদের যুক্তিগুলি অস্বীকার করতে পারছি না!
হুমায়ুন আজাদ জিতে গেছেন ঠিক এখানেই।
মন্তব্য
হুমায়ুন আজাদ কেনো তার নির্বাচিত সংকলনে আলমাহমুদের কবিতা রাখেননি,সেটা কিন্তু তিনি খুব স্পষ্ট করেই উল্লেখ করেছেন কোন রাখঢাক ছাড়াই । আলমাহমুদকে তিনি বাতিল করেছেন আদর্শিক অবস্থান থেকে ।
এই অবস্থানকে আমি সমর্থন করি । সমর্থন করি এই কারন যে মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক আদর্শের সংঘাত ফুরিয়ে যায়নি এখনো বাংলাদেশে । আমি ভুলি না যে,আল মাহমুদ ৭১ এর একজন অস্ত্রহাতে মুক্তিযোদ্ধা যখন শামসুর রাহমান নির্বিরোধ কিংবা সৈয়দ হক নিরাপদ জীবনের লোভে চেপে বসেছেন লন্ডন অভিমুখে ।
কিন্তু আজ ৩৬ বছর পর যখন সেই দুঃসময় ঘুরে ফিরে আসে,কি আশ্চর্য্য রকমভাবে অবস্থাব বদলায় ।
আমরা রাহমান কিংবা সৈয়দের একাত্তুরের ভুমিকার প্রশংসা করতে পারিনা কিন্তু একই সাথে অস্বীকার করতে পারিনা ঘাতক দালালের বিচার আয়োজনে যারা উদ্যোগী হয়েছিলেন এ দুজন তাঁদের মধ্যে অন্যতম । দুজনই রাষ্ট্রদ্রোহীতা মামলার আসামী ।
অপরদিকে আল মাহমুদ, রাজশাহীতে নিহত ঘাতক দালালদের শহীদ আখ্যা দিয়ে কবিতা লিখেন । অতীত যতো সম্মানিত হোক,বর্তমানের অবস্থান-ভয়ংকর করে তোলে বর্তমান ও ভবিষ্যতকে । আজকের আল মাহমুদকে স্বিকৃতি দেয়া মানে,ঘাতক দালালের এক সমর্থককে সীকৃতি দেয়া ।
অন্য ব্যপারগুলোতে আপনার মুল্যায়ন,আমার ভাবনার প্রায় কাছাকাছি । তার আচরনগত সমস্যা ছিলো,আমি নিজে দেখেছি কোন এক বইমেলায় । বিরক্ত হয়েছি, এই মানূষ এরকম আচরন করে কেনো?
কিন্তু হুমায়ন আজাদ শেষপর্যন্ত এমন এক মানুষ যাকে অস্বীকার করা যায়না ।
এই মানুষটার সাহস ছিলো ।সেই সাহস সৎ ছিলো ।
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ঠিক একই যুক্তিতে আল মাহমুদও বাংলা ভাষার এমন একজন কবি যাঁকে অস্বীকার করা যায় না। তাঁর বিষয়ে হুমায়ুন আজাদের আদর্শিক অবস্থানটি আমি বুঝি। আপনার যুক্তিতেও আমার দ্বিমত নেই আল মাহমুদের বিচ্যুতি নিয়ে। তাঁর মনন, আচরণ, রাজনৈতিক অবস্থান ও তৎপরতা নিয়ে আমারও প্রশ্ন আছে অসংখ্য, ক্ষোভ আছে। তারপরেও না বলে পারছি না যে, বাংলা ভাষার কবিতাগুলির একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংকলন হলে সেখানে আল মাহমুদ আসেন কবিতার শক্তিতে, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক অবস্থান সেখানে গৌণ করে দেখা চলে। আমরা খুনী রাজাকারকে মন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারলে (বাধ্য হয়েই) আল মাহমুদকে তাঁর অতীত অর্জনের ভিত্তিতেই স্বীকার করে নিতে বাধা দেখি না। তিনি অন্তত মুক্তিযোদ্ধা তো ছিলেন।
হুমায়ুন আজাদ বিষয়ে আপনার কথার সঙ্গে আমি একমত।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
নির্জলা একটা মিথ্যা যে - আল মাহমুদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এটা জামাতি ছাগুদের একটা প্রচার। আমি আজ পর্যন্ত এমন কোন শিবিরকর্মী পাইনি যার বাবা- চাচা - মামা- শ্বশুর ইত্যকারের কেউ না কেউ "মুক্তিযোদ্ধা" ছিলেন !!
মুক্তিযুদ্ধের সময় এই আল মাহমুদ কলকাতাতে "নিজের কাজে"ই ব্যস্ত ছিলেন। তিনি নিজেই লিখেছেন এটা। এই বিষয়ে ২৩/৮/২০০৮ এ এই ব্লগেই আরিফ জেবতিক লিখেছিলেন। (লিঙ্ক http://www.sachalayatan.com/arifjebtik/17812)
এ কারনেই তিনি হুমায়ুন আজাদ ।
আমি হলে হয়তো আল মাহমুদকে অস্বীকারের সাহস দেখাতে পারতাম না । ঐ যে আপনার যুক্তি,রাজাকারদের তো শাসক হিসাবে ও মেনে নিচ্ছি । আজাদ কিন্তু মানেননি তার লেখায়,কথায় এবং জীবনাচারনে ।
তার সামর্থ্যের মধ্যে ছিলো,তার সংকলিত গ্রন্থ থেকে আল মাহমুদকে বাদ দেয়ার । সামর্থ্য অনুযায়ী করেছেন ।ঐ যে যুক্তি,আজকের আল মাহমুদকে স্বীকৃতি দেয়া মানে-প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে মদদ দেয়া । মনে রাখা ভালো এই গোষ্ঠী যেদিন বাংলা কবিতার সংকলন করবে সেদিন তারা রাহমান,হক কিংবা আজাদকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে ।
কিচ্ছু যায় আসেনা । তার আজকের ভুমিকা সেদিনের ভুমিকাকে ম্লান করে অনেক দূর চলে গেছে । তাকে মুক্তিযোদ্ধা বলে শ্রদ্ধা করবো, ভদ্রলোক নিজেই তো তার সেই আদর্শিক অবস্থানকে এখন ভুল বলেন । জামাত শিবিরের কবিতার জলছার অতিথি হন ।
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমার যুক্তিকে আমি ফেলে দিতে পারছি না, আপনার যুক্তিকেও তো অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ধর্মানুভূতি বিষয়ক তুচ্ছ ব্যাপার গুলো যখন রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের খুব বড়সড় ফ্যাক্টর হয়ে যায়, কিংবা ব্যারাক থেকে উঠে আসা অশিক্ষিত সৈন্যদল যখন মাথার উপরে ছড়ি নাচায়, তখন হুমায়ুন আজাদ ছাড়া আমি আর কারও লেখায় আমার মননের আশ্রয় খুঁজে পাইনি।
সেই অর্থে হুমায়ুন আজাদ ও তাঁর লেখা আমার কিশোর ও তরুণ সময়ের বন্ধু এবং সত্য বলার প্রেরণা দিয়ে যাওয়া এক আগুনের পরশমণি।
আহমদ শরীফ সম্পর্কে বলতে গিয়ে হুমায়ুন আজাদ একটা বিশেষণ ব্যবহার করেছিলেন এই বলে " বামনের দেশে মহাকায় মানুষ আহমদ শরীফ"। আমি এই একই বিশেষণ হুমায়ুন আজাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করবো।
নানান মানবীয় ত্রুটি ধারণ করেও আমাদের ক্ষুদ্রকায় মানুষদের মাঝে তিনি যে বিশালত্ব নিয়ে বেঁচে ছিলেন - এই অদ্ভূত সময়ে অথবা ভবিষ্যতে অন্য কারও মাঝে খুঁজে পাবার প্রত্যাশা করাও কষ্টকর।
আপনার শেষ লাইনটাই সব কথা বলে দেয়। কৃতজ্ঞতা এরকম একটা লেখার জন্যে। অনুজ হিসেবে আপনার কাছে আরও শুনতে চাই।
------ooo0------
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
আপনার আবেগটি আমি বুঝতে পারি, সৌরভ। একেকজন অসাধারণ মানুষ এইভাবে কারো কারো জীবনে বাতিঘরের মতো থেকে যান। ভালো লাগলো আপনি হুমায়ুন আজাদের মানবিক দুর্বলতাগুলিকে উপেক্ষা করেননি। অন্ধভক্তি অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রবণতা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ভাল লাগছে এই লেখা আর মন্তব্যগুলো। সচলায়তন সত্যিই সার্থক। জুবায়ের ভাই, আপনার লাল নীল দীপাবলীর আলোচনা কি দেয়া সম্ভব? আমার মনে হয় অনেকেই এটা দেখতে/পড়তে চাইবে।
ভাই প্রকৃতিপ্রেমিক, আমার পুরনো কোনো লেখার কপিই আমার কাছে নেই। একদা ছিলো, কখন কোথায় হারিয়ে গেছে। লাল নীল দীপাবলী নিয়ে লেখাটি তেমন সিরিয়াস কিছু না। ছাপা হয়েছিলো বাংলা একাডেমীর কিশোর-পত্রিকা ধানশালিকের দেশ-এ। কী লিখেছিলাম মনে নেই, এখন দেখলে হয়তো নিজেই লজ্জা পাবো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য ও আগ্রহের জন্যে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
তাঁর সাহসের প্রশংসা করতেই হবে।
হুমায়ুন আজাদের লেখার স্টাইল অসম্ভব ভাল লাগে, আমার মনে হয়েছে তাঁর বাংলা লেখা সবচেয়ে নির্ভুল, বিশেষ করে যতিচিন্হের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ... ভাষার প্রকাশ অসম্ভব শক্তিশালী মনে হয়েছে তাঁর লেখা পড়ে
উল্টো আমি তাঁর 'এই জিতে যাবার' ব্যাপারটায় শক খাইছি ... যেজন্য তাঁরই অগ্রজ আহমদ শরীফকে আমি অনেক বেশী বিজয়ী ভাবি ... হুমায়ুন আজাদ হয়ত ভাবেননি তিনি এত তাড়াতাড়ি মৃত্যুবরন করবেন, তাই বলে যেতে পারেননি, কিন্তু তাঁর অন্তেষ্টিক্রিয়ায় একটা বিশেষ ধর্মমতের প্রয়োগ তাঁর জিতে যাওয়াকে কিছুটা হলেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ...
আর আমি নিশ্চিত না, তবে শুনেছি, তাঁর ছেলে নাকি বলেছেন ড. আজাদ নামাজ পড়তেন জাতীয় কিছু ... এটা অবশ্য পুরো শোনা কথা ... আমি যাস্ট জানতে চাইছি ব্যাপারটা নিয়ে একটা কৌতুহল ছিল বলে ... তবে ব্যাপারটা সত্য হলে ড. আজাদকে নিয়ে হিসেব মেলানোটা কঠিন হয়ে যাবে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
হুমায়ুন আজাদের ভাষা ব্যবহার ও শব্দপ্রয়োগের কৌশল সত্যিই ঈর্ষণীয়। আপনার সঙ্গে একমত।
তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বিষয়টি আমাকেও ভাবিয়েছিলো। ঘটনাটা যেভাবে ঘটেছিলো, তাঁকে দায়ী করা চলে না। আপনার অনুমান হয়তো সঠিক, এমন আচমকা প্রস্থানের সম্ভাবনা হয়তো তাঁর কল্পনায়ও আসেনি।
নামাজ পড়ার কথাটা আগে শুনিনি। সত্যি হলেও অবাক হবে না। ঐ যে শুরুতেই বলেছি, মানুষের জীবন বৈপরীত্যে ভরা।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আসলেই মানুষ বৈপরীত্যে ভরা ,,,
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
একজন মৃত মানুষের অন্ত্যেষ্টক্রিয়ার জন্য তাঁর জীবিত অবস্থায় লিখিত বা কথিত বক্তব্যকে প্রশ্নের মুখোমুখি করা কিছুটা কিশোরসুলভ কাজ। হুমায়ুন আজাদের কি কোন সুযোগ ছিলো নিজের সৎকারপ্রক্রিয়া নির্দেশ করার? তাঁর পুত্রকন্যাস্ত্রী, এঁরা হয়তো সৎকারের সংস্কার ছাড়তে পারেননি। তিনি হয়তো তাঁদের ধর্মবিশ্বাসকেই প্রভাবিত করেননি বা করতে পারেননি, বা করার কোন অভিপ্রায়ও তাঁর ছিলো না? আমার তো মনে হয়, বলা-ই ছিলো তাঁর কাছে মুখ্য, তাঁর কথা সবাই বেদবাক্য ধরে নিয়ে তদনুসারে জীবনযৌবনযাপন করুক, এমন কোন পয়গম্বরসুলভ উচ্চাভিলাষ তাঁর হয়তো ছিলো না। নাস্তিকতার মোল্লা হিসেবে তাঁকে দাঁড় করাতে চেয়েছে আস্তিকতার মোল্লারাই। এক মোল্লা প্রতিপক্ষ হিসেবে আরেক মোল্লাকেই দেখতে চায়, সে চায় একটি বিশ্বাসের প্রতিনিধিকে পরাজিত, পরাভূত করতে। হুমায়ুন আজাদের লেখায় বা আচরণে আমি একা, শুধু একা হুমায়ুন আজাদকে নিজের কথাই সশব্দে বলতে দেখি। মোল্লাদের মতো সদলে তিনি নিজের বিশ্বাস কারো ওপর চাপানোর জন্য রাস্তায় নামেননি, যুদ্ধে নামেননি, তাঁবু গাড়েননি, শুধু কতগুলো গ্রন্থরচনা করেছিলেন।
ধর্মবিশ্বাসের ব্যাপারে হুমায়ুন আজাদের বক্তব্যের জন্য কেউ যদি তাঁর প্রতি বিদ্বিষ্ট হন, তাহলে তা তার নিজের ধর্মবিশ্বাসের দুর্বলতাকেই প্রকট করে দেখায়। কারো ঈশ্বর যদি এক হুমায়ুন আজাদের ছুঁড়ে দেয়া কথায় হুড়মুড় করে পড়ে যান, কিংবা বিপন্ন হন, তাহলে গলিয়াথ ঈশ্বর তো দাভিদ হুমায়ুনের সামনে হ্রস্ব হয়ে যান।
কেউ জোর গলায় বলেন না, হুমায়ুনের ওপর হামলার তদন্ত এবং বিচারের রায় কার্যকর করার কথা। হুমায়ুনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়েছে, তার নারী গ্রন্থটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, কিন্তু তার ওপর যারা আঘাত করেছে সেই জিঘাংসুদের আইনের মুখোমুখি করতে পারেনি। অনেকেই এতে গভীর তুষ্টি গোপন করতে পারেননি, কেউ কেউ বহু কষ্টে গোপন করে বলতে চেয়েছেন অলমতি বিস্তারেণ, কিন্তু একটা অপরাধের বিচার চাওয়ার মতো মেরুদন্ডই অনেকে ধারণ করতে পারেননি নিজের মধ্যে। হুমায়ুন আজাদের হামলা থেকে নিজের ঈশ্বরকে রক্ষা করার জন্য এত ব্যতিব্যস্ত সশস্ত্র জিঘাংসুরা? না। কোন ধার্মিক হামলা করেনি হুমায়ুনকে, করেছে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদারদের সহযোগিতাকারী রাজাকার-আলবদরের উত্তরসূরীরা। হুমায়ুন আজাদকে স্বাধীন বাংলাদেশে আক্রমণ করে, তার পুত্রকে অপহরণ করে ভয় দেখিয়ে তাঁকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এসব কিছুই নয়, তিনি নামাজ পড়তেন কি পড়তেন না সেটিই মুখ্য? দু'দিন পর এই শোনা কথাই সত্য হয়ে যাবে অনেকের কাছে, আরো শোনা যাবে তিনি পকেটে তসবি রাখতেন, কোন এক পীরেরও সাগরেদ ছিলেন ...।
আপনি সম্ভবতঃ আমার মন্তব্যটিকে বেশী সিরিয়াসলি নিয়েছেন @অতিথি
হুমায়ুন আজাদের নির্ভয় মতপ্রকাশের ফলে তাঁর যে শক্তিশালী ইমেজ গড়ে উঠেছিল আমার মনে, সেটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ঐ দুটো ঘটনায় (যদিও একটার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত না)।
হুমায়ুন আজদের উপর হামলার বিচার চাই, কিন্তু কোথায় চাইব? যেই দেশে যুদ্ধাপরাধীদেরই বিচার হয়নি এখনও, সেখানে?
আপনার কমেন্টটাকে আমার করা কমেন্টের প্রতিক্রিয়া মনে হয়েছে বলেই বললাম, আপনি একটু অন্য লাইনে পারসিভ করে ফেলেছেন আমার কমেন্টটাকে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
জ্বিনের বাদশা, আপনি প্রযুক্তি বিশারদ, সম্ভবত পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করে ফেলেছেন, এবং প্রসঙ্গটি একজন মৃত মানুষকে ঘিরে। আপনি আলোচনা করেছেন তাঁর ব্যক্তিগত ধর্মচর্চা সম্পর্কিত একটি জনশ্রুতিকে নিয়ে। আপনার বক্তব্যকে সিরিয়াসলি নিতে হয়, কারণ আপনার কাছ থেকে ছড়ানো জনশ্রুতির বিবরণ "গ্রহণযোগ্যতা" পেয়ে যেতে পারে অনেকের কাছে। জনশ্রুতি অনেক শক্তিশালী ও দ্রুতগামী "কৌশল"। জানেন বোধ করি, '৪৭ এ কলকাতায় হিন্দু-মুসলমান খুনাখুনির পেছনে একটি সস্তা পত্রিকায় ছাপা হওয়া কাল্পনিক হত্যাযজ্ঞের বিবরণ কী ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলেছিলো মানুষের মনে।
"শোনা কথা" জাতীয় উল্লেখের ব্যাপারে আপনার মতো একজন কোয়ালিফায়েড ব্যক্তির তাই অন্যের চেয়ে বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
হুমায়ুন আজাদের ওপর জীবনঘাতী হামলার বিচার কোথায় চাইবেন, এ প্রশ্নটিও কিশোরসুলভ। বলুন তো ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা কোথায় কার কাছে চাই? রাষ্ট্রের কাছেই তো, নাকি? রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাওয়া যায় প্রেসে, মিডিয়ায়, ব্লগে, খোলা আকাশের নিচে চিৎকার করে। এই চাওয়াটাও কম নয়, ন্যূন নয় কোন অংশে।
আমি আপনাকে একজন সংবেদনশীল নম্র প্রকৃতির মানুষ হিসেবে ধারণা করে নিয়েছি। আমার উচ্চারণে ক্রোধ যদি প্রকাশিত হয়েছে বলে আপনি মনে করেন, জানুন যে এ ক্রোধ আপনার প্রতি উদ্দীষ্ট নয়।
ধন্যবাদ বিষয়টি আরো "পরিস্কার" করার সুযোগ দেয়ার জন্য।
সুন্দর পোস্ট, সুন্দর মন্তব্য, সুন্দর প্রতিমন্তব্য।
ধন্যবাদ সব সুন্দরদের।
-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥
প্রযুক্তি বিশারদ, পিএইচডি ডিগ্রী --এসব কোন মাপকাঠি না @অতিথি ,,,
আমি সাধারণ মানুষই ,,,আমারও কৌতুহল আছে ,,,কাজেই আমার ব্যক্তিগত পরিচয় না আসলেই খুশী হব
জুবায়ের ভাইয়ের লেখায় আমার মনে হয়েছে তিনি দেশে থাকতে এরকম সিনিয়র সার্কেলে পরিচিত ছিলেন ,,, অনেক জানেন ,,,সেজন্যই কৌতুহল মেটাতে প্রশ্নটা করেছি ,,,হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে অনেক লেখা আগেও অনেক পোস্ট হয়েছে, সেখানে কৌতুহল মেটাতে যাইনি।
বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে প্রশ্ন জাগবেই ,,, সেটা করতে আমি কোন দোষ দেখিনা ,,, সেটাতে দোষ দেখলেতো "নবীর সমালোচনার প্রতিক্রিয়ার মোল্লাদের মতো আচরণ" হয়ে যাবে, তাইনা? ,,,
ফ্যাক্টটা আসলেই কি সেটা জানা বেটার না?
একজন মানুষ এত সাহস নিয়ে প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে নিজের মতবাদকে প্রকাশ করলেন ,,, ধর্ম-স্রষ্টার অস্তিতৃহীনতা নিয়ে সাহসী ও পরিষ্কার বক্তব্য রাখলেন ,,,বাংলাদেশে!! আপনি নিশ্চয়ই জানেন, এখানে এটা কত কঠিন কাজ!!
এরপর আপনি যদি শোনেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট ধর্মের রিচুয়াল পালন করতেন, আপনার প্রশ্ন জাগবেনা?
আমার কাছে হুমায়ুন আজাদের মূল পরিচয়ই তাঁর 'সাহসী ধর্মের বিরুদ্ধতা' ,,, কাজেই এখানে তাঁর নামাজ পড়ার ঘটনা খুবই ক্রুশিয়াল হয়ে যাবে ,,, ব্যক্তি হুমায়ুন আজাদকে যখন আমি নিজের কাছে ব্যাখ্যা করতে যাব তখন আমি সেই বৈপরিত্যের গোলক ধাঁধায় পড়ব ,,, আমার মনে প্রশ্ন জাগবে তিনি আসলে তাঁর সাহসী উচ্চারণ দৃারা কি চেয়েছিলেন? ,,, সেজন্যই জানতে চেয়েছি
"শোনা কথা" দেখেই তো ফোরামে তুললাম, হয়ত কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারবে, আমি দুঃখিত আমি এতে দোষের কিছু দেখিনা
"হুমায়ুন আজাদের ওপর জীবনঘাতী হামলার বিচার কোথায় চাইব" এটা হতাশা থেকে বলা ,,, তাঁর উপর আঘাতের হামলার বিচার আমিও চাই, বোধসম্পন্ন নাগরিক কে না চাইবে?
কিন্তু আমাদের দেশটাকে দেখে কি আপনার একটু হতাশাবোধ হয়না, বিশেষ করে ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে? ,,, সেখান থেকেই হতাশাবোধ করছি।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
একটু বাড়াবাড়ি রকমের সাহসী ছিলেন লোকটা। এই স্পষ্টবাদিতার জন্যই পছন্দ করি তাঁকে। আরেকটা কারণ আছে, সেটা হলো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল বইটি। এই বইটি পড়ে স্বৈরশাসকের ক্ষমতাচ্যুতির পাঁচ বছর পরেও এক কিশোর মনে দাবানল জ্বলেছিলো, ইচ্ছে হয়েছিলো শুয়োরটাকে খুন করি। সেটাই বোধহয় আজাদ স্যারের প্রতি শ্রদ্ধাটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তসলিমা নাসরিন (নির্বাচিত কলাম গ্রন্থে খুব সম্ভবত পড়েছিলাম)আমাদের বুদ্ধিজীবিদের সমালোচনা করে একটা ঘটনার কথা লিখেছিলেন- হুমায়ুন আজাদ প্রকাশ্যে আমার কবিতার সমালোচনা করে পত্রিকায় বিবৃতি দেন। তসলিমা এখনো কবি হয়ে উঠতে পারেনি। ওর কোন লেখাই কবিতা পদবাচ্যের যোগ্য নয়। অথচ বইমেলায় এক ষ্টলে গিয়ে উনি জিজ্ঞেস করেন তসলিমার কবিতার বই আছে কিনা। বিক্রেতা নাই বলাতে উনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ভালো বইগুলো আপনাদের কাছে থাকে না কেন?
সত্যি বড় বিচিত্র মানুষের জীবন, মানুষের মন।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
একেই বলে উত্তর-আধুনিক।
বাম থেকে এক খাবলা নিয়েছি বলে আমি ডান থেকে এক খাবলা নিবো না, এমন নয়।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
এখন হুমায়ুন আজাদ সেটা ক্ষুব্ধ হয়ে না কৌতুক করে বলেছিলেন সেটা কে জানে আর কে বোঝাবে?
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
হুম!
হুমায়ুন আজাদ তো আর জন্ম থেকেই নাস্তিক নন, জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে নাস্তিক। তাই অভ্যাস থেকে নামাজ পড়তেও পারেন। আমি যেমন সিগারেট খাই অভ্যাস থেকে, কিন্তু সিগারেট যে ক্ষতি করছে সেটা অস্বীকার করি না।
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
ধন্যবাদ অতিথি, জ্বিনের বাদশা, ঝরাপাতা ও আর সবাইকে প্রাণবন্ত তর্ক-প্রতিতর্ক উপস্থাপনের জন্যে। সবগুলো মন্তব্য পড়ে ওঠা সম্ভব হয়নি এখনো। পরে করতে হবে। তখন আমার কথাও কিছু বলা যাবে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
নামাজ পড়াকে যদি শুধুমাত্র সামাজিকতা ধরা হয় তাহলে সমস্যা কি? হূমায়ুন আজাদ ধর্মীয় আবেগতাড়িত হয়ে নামাজ পড়তে গেছেন এটা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য না। আমার কাছে এটা ভন্ডামীও মনে হচ্ছে না। সামাজিকতার বশেই তো আমরা সালাম দেই, স্রষ্টা আপনার মঙ্গল করবেন এই কামনায় সালাম দেই বলে তো মনে হয় না।
ঝরাপাতা, আপনার দেয়া উদাহরনটা বরং বেশ প্রাণবন্ত ,,, একজন সত্যিকারের শুভাকাং্খির মতো ,,, সমালোচনা করলেন তসলিমাকে আরো বেশী প্রচেষ্টা চালাতে চ্যালেঞ্জ অনুভব করার জন্য ,,, আবার বইবিক্রেতাদের উদৃুদ্ধ করলেন তসলিমার বই রাখার জন্য ,,, কারণ অন্যগুলোও তো একই রকম ,,, তসলিমা নাসরিন নিশ্চয়ই এতে খুশী হয়েছেন ,,,
শোহেইল ভাই'র টার্মটা পছন্দ হয়েছে ,,, উত্তরাধুনিক ,,, তবে হুমায়ুন আজাদকে আমার সিম্পলি যুগের স্রোতে গা ভাসানো মনে হয়নি ,,অন্ততঃ তার লেখা পড়ে ,,, মনে হয়েছে তিনি একটা যন্ত্রণাবোধ থেকে লিখেছেন
অমিত আহমেদ আর অয়ন, অভ্যাস বা সামাজিকতাকে বুড়ো আঙুল দেখাতে পারবেন তো হুমায়ুন আজাদই ,,, এজন্যই প্রসঙ্গটার অবতারণা
যেমন, জিকো'র 'টেলিফোন রিসিভ করে "স্লামালিকুম" না বলার ব্যাপার'টা সামাজিকতাকে জয় করার উদাহরণ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
কোনো লেখায় এতোগুলো মন্তব্য পেতে আমি অভ্যস্ত নই, স্বীকার করে নিচ্ছি। পেয়ে একেবারে ক্যাবলাকান্ত হওয়ার দশা। সেটা জরুরি বিষয় নয়। প্রত্যেকেই চমৎকার সব মন্তব্য করেছেন। সময়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করা আমার হয়ে ওঠেনি। ব্লগে বিষয় এবং আলোচনা দ্রুত পচনশীল বস্তুর মতো। বাসি হয়ে যাওয়া জিনিসে সবার রুচি না হলে দোষ দেওয়া যায় না।
ধন্যবাদ সবাইকে আপনাদের চিন্তার শরিক করার জন্যে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
"আধুনিক বাংলা কবিতা সংকলনে পক্ষপাতমূলক নির্বাচন তাঁর সুনাম বাড়ায়নি, বরং তাঁর বিবেচনাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।"
নির্মম হলেও আমি জুবায়ের ভাইয়ের সাথে একমত । সৈয়দ আলী আহসান (আমার পুর্ব বাংলা ) , আবু জাফর ওবায়্দুল্লাহ (আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ) আল মাহমুদ ( সোনালি কাবিন ,কালের কলস ) প্রমুখদের বাদ দিয়ে আধুনিক বাংলা কবিতা সংকলন প্রশ্ন এর সম্মুখীন হবেই ।
ধরা যাক , এক্জন রেডিক্যাল মুসলিম সংকলক তার আধুনিক বাংলা কবিতা সংকলনে রবীদ্রনাথ কে বাদ দিল এই যুক্তিতে যে তিনি শিবাজি উৎসব নিয়ে কবিতা লিখেছেন । এটা যেমন হাস্যকর তেমনই ঘটেছে আজাদের ঐ সংকলনে ।
স্বয়ং হুমায়ুন আজাদের সাথে আমার এ নিয়ে তর্ক হয়েছে ।
আহমদ শরীফ, আহম্দ ছফা আর হুমায়ুন আজাদ -এই তিনজনেরই অনুরাগি আমি আর তারাই আমাকে শিখিয়েছেন তর্ক ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
প্রথমেই ধন্যবাদ জুবায়ের ভাইকে এত সুন্দর একটা লেখার জন্য । বৈপরীত্যের এক অদ্ভুত হেয়ালীতে যেন নিজেকে ঢেকে রাখতেন এই লোক, আমার সেরকমই মনে হয়। আমার দেখা ভয়াবহ সাহসী একজন বাঙ্গালী, উনার অনেক কিছুই আমি পছন্দ করি না, অনেক কথাই মানি না, তবু উনি আমার খুব পছন্দের একজন ।
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ব্লগের পাতা দৈনিক খবরের কাগজের মতোই দ্রুত পুরনো হয়ে যায়। এই পুরনো লেখায় হঠাৎ দুটি নতুন মন্তব্য দেখে তাই মজাই লাগলো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনারা দুজনেই আজ আর নেই।
স্মৃতি তর্পণে তবু আছেন হুমায়ূন আজাদ, প্রিয় জুবায়ের ভাই।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার সাথে হুমায়ন আযাদ এর আলাপ হয়েছিল একবার.........রীতিমতো ঝগড়া লেগে গিয়েছিলো কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে। আবার ওনার লেখা একটি কবিতা আমার বেশ পছন্দ, তা হলো হাজার বছর ধরে তোমার দিকে আসছি......
আপনি খুব সুন্দর ভাবে ওনাকে ওনার দোষ গুন সহ তুলে ধরেছেন.........ওনার সর্ম্পকে আমার নিজের ও ঠিক একি মত......শুধু অনুভূতি গুলো ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নেই।ধন্যবাদ আপনাকে ।
কী আশ্চর্য !
যিনি লিখলেন, যাকে নিয়ে লিখলেন- কেউই আর আমাদের মধ্যে নেই।
ভালো থাকুন দু'জনই
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমিও বলি - ভালো থাকুন দুজনেই, দুই প্রিয় মানুষ
...
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
দু'জনের প্রতি শ্রদ্ধা!
জুবায়ের ভাইয়ের লেখাগুলি হঠাৎ করে এভাবে আসলে মন কেমন জানি করে ওঠে।
সহমত। কারণ আজকের আলোচনায় সেই রকম বোধ করছি।
মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....
ভালো থাকুন দু'জনেই। বেদনা মনে করিয়ে দিলো লেখাটি। মডুদের ধন্যবাদ লেখাটি খেয়াল করে তুলে আনবার জন্য।
জুবায়ের ভাইয়ের আরও অনেক দেওয়ার ছিলো, সে-কথায় পুনর্বার মনে করিয়ে দিলো লেখাটা।
লেখাটা দেখে প্রথমে কিছুটা ধন্দে পড়ে গেছিলাম। পরে তারিখ দেখে ভ্রান্তি দূর হল। জুবায়ের ভাইয়ের কথা অনেক মনে পড়ছে।
--------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
হুমায়ুন আজাদ আর জুবায়ের ভাই
আপনাদের দু'জনের পূনর্জন্মের প্রত্যাশায় আছি----
বিনম্র শ্রদ্ধা
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
`আমাদের দেশে নির্ভয়ে সত্যউচ্চারণ করার মতো সাহসী বুদ্ধিজীবীরা ভয়াবহ রকমের সংখ্যালঘু। '
ধন্যবাদ জুবায়ের, আপনার চমৎকার লেখার জন্য।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
`মুহম্মদ জুবায়েরের মৃত্যু আছে, লুপ্তি নেই।'
হুমায়ুন আজাদ আর মুহম্মদ জুবায়ের- দু'জনেরই পূনর্জন্মের প্রত্যাশায়।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
দু'জনকেই বিনম্র শ্রদ্ধা।
..................................................................
ঐ যে হাঁটছি মুদ্রা দোষে নাকটা ঘষে
আড্ডা মানেই সেকেণ্ড হাফে খেলছি সোলো
গুজবো না শার্ট আমার পাড়া স্মার্ট পেরিয়ে
সে রোদ্দুরের স্মরণ সভাও লিখতে হল
"ব্লগে বিষয় এবং আলোচনা দ্রুত পচনশীল বস্তুর মতো।"
"ব্লগের পাতা দৈনিক খবরের কাগজের মতোই দ্রুত পুরনো হয়ে যায়।"
জুবায়ের ভাইয়ের এই উক্তি দুটি আমরা যারা নিয়মিত ব্লগ পড়ার এবং লেখার চেষ্টা করি তাদের জন্য প্রাতঃস্মরনীয়। ব্লগ পড়া, ব্লগে লেখার পাশাপাশি অপচনশীল বা চিরনবীন বিষয় ও আলোচনার ব্যাপারেও আমাদের ভাবা উচিত।
বিঃদ্রঃ যারা "থান্ডারক্যাটস" কার্টুনটি দেখেছেন তারা "জাগা" চরিত্রটিকে চেনার কথা। যিনি বিপদে পরামর্শ দেবার জন্য হাজির হন - নিজ উদ্যোগে, কিন্তু অশরীরি বলে নিজ হাতে বিপদ দূর করে দিতে পারেন না। কথাটি কেন বললাম সচলরা বুঝবেন আশা করি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুঝতে পারছি না লেখাটা ভালো বলবো, নাকি মন্তব্য। লেখক নিজেও মন্তব্যকারী। এইরকম আরো বেশি লেখার প্রত্যাশায় থাকলাম।
আমি অতিথি তোমার দেশে.....
আমি অতিথি তোমার দেশে.....
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: বুধ, ২০০৯-০৮-১২ ০৪:৩৫)
লেখাটি যে পুনপ্রকাশিত , মডারেটরদের কাছ থেকে তাঁর একটা ছোট্ট ঘোষনা আশা করি।
দু'জনের প্রতি শ্রদ্ধা!
নৈশী।
সবজান্তা লিখেছেন- [ভালো থাকুন দু'জনই]
@সবজান্তা- দুজনেই ভাল থাকবেন বুঝলাম, কিন্তু কোথায় ভাল থাকবেন?
এই যে নামহীন [অতিথি] স্যার, সবজান্তার শুভকামনা/প্রার্থনা নিয়ে আপনার মাথাব্যথার কারণটাতো বোঝা গেলনা। পোস্ট নিয়ে আপনার কোনো কথা বলার থাকলে নিজের নাম/নিক্সহ এখানে বলুন। আর সবজান্তার উক্তি নিয়ে মাথাব্যথা হলে সবজান্তাকে মেইল করুন। দয়া করে এইখানে ত্যানা প্যাঁচাবেন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ জুবায়ের ভাইকে এত সুন্দর একটা লেখার জন্য। হুমায়ুন আজাদের অনেক কিছু আমি মানিনা, পছন্দ করিনা। তারপরও উনাকে অনেক পছন্দ আমার। অনেক পুরোনো লেখা আমার জন্য নতুন যেহেতু তাই কমেন্ট করলাম।
গত কয়েকদিন ধরে জুবায়ের কাকার কথা মনে পড়ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা কত যে কথা হত। বলেছিল ডিসেম্বর মাসে আসবে, সেই আসা আর হয়নি।
গত কয়েকদিন ধরে জুবায়ের কাকার কথা মনে পড়ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা কত যে কথা হত। বলেছিল ডিসেম্বর মাসে আসবে, সেই আসা আর হয়নি।
চমৎকার লেখা। খারাপ লাগলো অনেক পরে পড়লাম।
দু'জনের কেউই আজ নেই। ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।
দেবা ভাই
-----------------------------------------
'দেবা ভাই' এর ব্লগ
সৌরভ কবীর
শ্রদ্ধা!
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
শ্রদ্ধা!
মডারেটরবৃন্দকে ধন্যবাদ। এভাবেই সবাই বেঁচে থাক।
সচলায়তনে নতুন হওয়ার কারনে জুবায়ের ভাইয়ের লেখার সাথে আগে পরিচয় ছিল না।
অদ্ভুত শক্তিশালী এই লেখকের জন্য রইলো অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে উৎসারিত অকৃত্রিম শ্রদ্ধা।
-অয়ন
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
[ লেখাটা অনেক পুরনো, প্রথমে বুঝতে পারিনি।।]
নতুন মন্তব্য করুন