বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নরম পালকে ঢেকে রাখা সামরিক নখ-দাঁত এখন প্রকাশ্য হতে শুরু করেছে। আগেও কমবেশি শোনা যাচ্ছিলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাটির পর তা আর লুকিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
কী ঘটনা ঘটেছিলো? পত্রপত্রিকার বিবরণে যা জানা যাচ্ছে তা এইরকম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিভাগের মধ্যে ফুটবল খেলা চলছিলো। কয়েক সেনাসদস্যের খেলা দেখা বিঘ্নিত হচ্ছিলো এক ছাত্রের খোলা ছাতার কারণে। সুতরাং গালাগালি এবং প্রতিবাদ করলে ছাত্রটিকে সম্মিলিত প্রহার। ষাধারণ ছাত্ররা প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশের বেধড়ক মারে শতাধিক আহত।
এখন যদি প্রশ্ন করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে খেলায় সেনাসদস্যদের উপস্থিত থাকার কী দরকার পড়েছিলো? তারা যখন ক্যান্টনমেন্টে খেলাধূলা করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হবে? হবে না, কারণ সেটা তাদের তালুক। সেই যুক্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ ছাত্রদের তালুক হবে না কেন? মানা গেলো, খেলা দেখতে এসেছে। তা মাস্তানিটা কেন? দেখতে অসুবিধা হচ্ছিলো, একটু সরে বসলেই হতো। অনুমান করি, গ্যালারি উপচে-পড়া দর্শক সেই খেলায় ছিলো না। তাহলে? আসলে শুধু ক্যান্টনমেন্ট নয়, পুরো বাংলাদেশকে তারা নিজেদের তালুক ভেবে বসে আছে এবং সকল শ্রেণীর মানুষকে তারা দাসানুদাস মনে করছে।
গত আট মাস ধরে একটা নতুন শব্দ শুনে আসছিলাম। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার "সেনাসমর্থিত"। এই শব্দের সঙ্গে আমাদের আগে পরিচয় ঘটেনি। যদিও বাংলাদেশের ভাগ্যে সেনাশাসক বা সেনাসমর্থিত সরকারই বেশিরভাগ সময় ছিলো এই রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পরে এখন দেখার বিষয় কখন তা বিশুদ্ধ সেনা সরকারে পরিণত হয়।
যখন বোধবুদ্ধি হয়েছে তখন আইয়ুবের সামরিক শাসন। তারপর ইয়াহিয়া। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সাড়ে তিন বছর সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় ছিলো না। জীবনে সেই প্রথম অসামরিক শাসন পেলাম। তার কিছু সময় রক্ষীবাহিনীর দাপট ছিলো, কিন্তু তাদের শাসন করার ক্ষমতা ছিলো না।
ফল যা হয়েছে, সেনাশাসনকে কোনোকালে মানতে পারিনি। এখনো না। অথচ আমার দুর্ভাগা দেশ বারবারই সামরিক বুটের তলায় কাতরায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিক্ষোভ কোনো আন্দোলনে রূপ নেবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। মহাজনরা বলেছেন, ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো শিক্ষা হলো, ইতিহাস থেকে কেউ শেখে না। এই বিশ্ববিদ্যালয় রুখে দাঁড়ালে সারা বাংলাদেশ জাগ্রত হয়। সেই শক্তির সামনে কোনো মহাপ্রতাপশালী টিকে গেছে, এমন উদাহরণ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো ছাত্র হিসেবে লাঞ্ছিত ছাত্রদের জন্যে আমি আজ কয়েক ফোঁটা চোখের পানি বিসর্জন দিতে পারবো। এর চেয়ে বেশি কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই। তাদের শরীরে পুলিশের লাঠির যে আঘাত, তা তো আসলে আমার মাথায়ই এসে লাগে।
মন্তব্য
দুঃখ করতে ভালো লাগে না।
আর কি করা যায় বলেন।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
শুধু দুঃখ থাকবে কেন? আছে ক্রোধ এবং দ্রোহ।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
পতনের পদধ্বনি শুনতে পাই...।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
তবে তাই হোক।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
তাদের নখ-দাঁত এখন প্রকাশ্য হচ্ছে।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
দরকার ছিলো। ঢাবি খুব খারাপ স্থান। স্বৈরাচারের পতন এখান থেকেই শুরু হয়।
সুশীলরা কিন্তু এখনও আর্মির হাতে সব তুলে দিতে রাজি। এরাই আবার দেখা যাবে হাসিনা-খালেদা-নিযামীর খাস অতিথি।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখবেন, সুশীল বলে পরিচিতরা একটা পর্যায় পর্যন্ত যায়, তারপর খাবি খেতে থাকে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
বিপ্লব রহমান, আপনি কি একটি নিউজপোস্ট দিতে পারেন, যেখানে আপনি একটু পর পর আপডেট জানিয়ে দিতে পারেন?
বিপ্লব, ভেবে দেখতে পারেন।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
রক্ত টগবগ করে ওঠে। দেখে নিতে ইচ্ছে করে এক একটাকে!
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
ঠিক, অমিত আহমেদ।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
পুরো বিষয়টি হচ্ছে সরাসরি মার্শাল ল দেবার একটা হীন ষড়যন্ত্র।
-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...
সেই কথাই বলেছি। এখ দেখার বিষয় কতো তাড়াতাড়ি সেনাসমর্থিত সরকার সরাসরি সেনাশাসিত সরকার হয়ে যায়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ষড়যন্ত্র সফল হোক ।
থলের বেড়াল পুরোপুরি বের হয়ে আসলে তারে পিটাইতে আরো বেশী মজা
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বেশি দেরি নেই মনে হয়। তবে এইমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের খবর শুনলাম। তাতে কি শেষ রক্ষা হবে?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমার মনে হয় এটা পরবর্তী একশনের পূর্ব-অবস্থা। সেনা হয়তো উঠে যাবে, সাময়িকভাবে, লোক দেখানো; যা আন্দোলনকে থেমে দেবে। তবে তাদের পদচারণা অপ্রকাশ্যে হয়তো বেড়ে যাবে। সেটা আমাদের সবারই মাথায় রাখতে হবে।
ঢাবি'র নিয়ন্ত্রন কেউই হাতছাড়া করতে চাইবে না। আল্টিমেটলি সেনাশাসনের পরিকল্পনা থাকলে তা আরো বেশী সত্যি।
অতিথি ও জুবায়ের,
এই ব্লগে নিউজপোস্ট দিতে চাই না। এখানে মৌলিক লেখা লিখতেই আমার আগ্রহ বেশী। আপডেট খবরের জন্য বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর সাইট ভিজিট করতে পারেন।
আপনাদের ধন্যবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আরিফ, হাসান মোরশেদ ও প্রকৃতিপ্রেমিকের জল্পনা-কল্পনার সূত্র ধরে বলছি, সেনাশাসন দেয়াটা একটু কঠিন। আম্রিকার মানা আছে। মোশাররফ দিয়া কাজ হয় নাই। এদের হাঁটু দুর্বল থাকে। নিজের গদি নিয়া এত ত্রস্ত থাকে যে আম্রিকার প্রজেক্ট বাস্তবায়নে সাহস কইরা আগাইতে পারে না। সুতরাং সেনাশাসন প্রকাশ্যে আসছে না।
তবে সেনাদের আশীর্বাদ নিয়া একটা দলকে তারা ক্ষমতায় বসাইতে চান। আর দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ পোস্টে সেনা কর্মকর্তা। পেছন থাইকা হুমকি ধামকি দিয়া তারা চালাইতে চাচ্ছেন।
কিন্তু তাদের প্রতিটা টেস্ট ফেইল করছে।
তবে তাদের প্ল্যান বি, প্ল্যান সি, প্ল্যান ডি রেডি।
বহুদিন যুদ্ধ-ফুদ্ধ নাই দেশে। তারা মিলিটারি সায়েন্সে পড়া বিদ্যা একটু মাঠে প্রয়োগ কইরা দেখতেছেন।
একটা দাবী জোরে শোরে তোলা দরকার:
মিডিয়াতে সেনাপ্রধান ও সেনা কর্মকর্তাদের বক্তব্য যেন প্রথম পাতায় না আসে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
মিডিয়ার কথা বলছেন? ইন্টারনেটে কালকের জনকণ্ঠ দেখে আমি সত্যি তাজ্জব বনে গেছি। প্রথম পাতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা সম্পর্কে একটি হরফও তন্ন তন্ন করে খুঁজে পাইনি। অবিশ্বাস্য। অন্য পাতায় ছিলো কি না দেখার রুচি হয়নি। সমকালে দ্বিতীয় বা তৃতীয় লীড করেছে। আমাদের সময় যাবতীয় বিষয়ে ব্যানার হেডিং করে, কালকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুই বড়ো হরফে আসেনি।
এই মিডিয়ার কাছে আপনি কী আশা করেন?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ভাল পয়েন্ট ,,
দাবীটাও যৌক্তিক ,, তবে জুবায়ের ভাই যেটা বললেন, মিডিয়া তো উল্টাপথে যাচ্ছে
অন্যন্য বিশৃবিদ্যালয়েও কি সেনা ক্যাম্প আছে? সেগুলো প্রত্যাহারের দাবী একটা পোটেনশিয়াল নেক্সট স্টেপ হতে পারে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
সেনা সমর্থিত পুতুল সরকার আগামীতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বে। মুহাহাহাহা। তারপর পুরা দেশরে হাজত বানাইয়া রাখবো কুত্তার বাচ্চারা।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
দেশ থেকে যা খবর পাই, এখনই তো প্রায়-হাজত হয়ে গেছে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
নতুন মন্তব্য করুন