পল টিবেটস নামের লোকটি আজ মারা গেলো। ৯২ বছর বয়সে। তার যখন ৩০ বছর বয়স তখন সে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ে সর্বাধিক মানুষকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার কাজে শামিল হয়েছিলো। জাপানের হিরোশিমায় ১৯৪৫ সালের ৬ অগাস্ট সর্বপ্রথম যে আণবিক বোমা ব্যবহার করা হয়, সেই বোমাবাহী বিমানের চালক ছিলো পল টিবেট। এই বোমায়, আদর করে যেটির নাম দেওয়া হয়েছিলো "ছোট্টো বালক" (লিটল বয়), নিমেষে এক লক্ষ মানুষ পৃথিবী থেকে নেই হয়ে যায়।
আমেরিকান বিমান বাহিনীর সদস্য হিসেবে পল টিবেট তখন আদেশ পালন করেছিলো মাত্র - এইভাবে হয়তো ঘটনাটিকে দেখা চলে। কিন্তু এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে একদিনের জন্যেও কিছুমাত্র অনুতাপ-পরিতাপ তার হয়নি। অথচ তার জবানিতেই জানা যাচ্ছে ধ্বংসের পরিধি কী বিশাল ছিলো। তাকে ব্রিফিং দেওয়া হয়েছিলো এই মর্মে যে, এই বোমাটি বিস্ফোরিত হবে ২০ হাজার টন ডিনামাইটের ধ্বংসক্ষমতা নিয়ে।
পল জানাচ্ছে, "দান্তে সেদিন আমাদের বিমানে থাকলে আতংকিত হতেন। কয়েক মিনিট আগেও সকালের উজ্জ্বল রোদে যে শহরটি দেখিছলাম তা এখন অতি কদর্য একটি দৃশ্যে পরিণত হয়ে গেছে। আগুন আর ধোঁয়ায় আর কিছু দেখা যায় না। সব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।"
এতোবড়ো ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে গেছে জেনেও পল বলেছিলো, সেই রাতে সে খুব ভালো ঘুমিয়েছিলো। ঘটনার পর আরো ৬২ বছর বেঁচে ছিলো সে, তার কখনো অনুতাপ হয়নি।
খবরের কাগজ এবং আলোচনা-প্রতিবাদের শিরোনামে থাকা আমাদের দেশের কোনো কোনো টিবেট-শাবককে কি মনে পড়ে যায় না? এক হিসেবে পল টিবেট এদের পিতৃস্থানীয় তো বটেই!
মন্তব্য
ছবির জন্যে ধন্যবাদ, অরূপ।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হারামীগুলাই বেশী দিন বাঁচে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
কেউ মরে তাপে, কেউ পরিতাপে
পরিতাপহীন যদিও দীর্ঘায়ূ হয়
তবু অমর তো কেউ নয়!?
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
সুন্দর বলেছেন।
তবে মানুষ যে অমর নয়, সে বোধও এই লোকটির ছিলো বলে মনে হয় না। কারণ, মানুষের অনুশোচনা ও অপরাধবোধের মূলে থাকে জীবনের নশ্বরতা ও অনিত্যতা।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
কীট পতঙ্গের অনুতাপ বোধ বলে কিছু আছে নাকি!
বাংলাদেশের ৭১এর দানবদের তুলতুলে থলথলে বাচ্চারা এখন জায়েজী তত্ত্ব লিখে। তীব্র ঘৃণা এদের প্রতি।
হ্যাঁ, টিবেটস যেমন ক্ষমা চাননি, ঠিক তেমনিই চীনে গণহত্যা এবং গণধর্ষণ জাতীয় অপরাধের জন্যে সেইসময়কার অনেক জাপানী এক্সট্রিমিস্ট জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনুতাপ বোধ করেননি বা এখনো যারা শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বেঁচে আছেন, তাদের অনেকে ব্যাপারটাকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না।
যুদ্ধাপরাধীরা কি মানসিকভাবে প্রকৃতিস্থ?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
বেচারিকে একা দোষ দিচ্ছি কেন? দুনিয়ার সব দেশের সব সামরিক সদস্যকেই দীর্ঘ শারিরীক ও মানষিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নিজের সকল আবেগ ও বোধের উর্দ্ধে উঠে নৃশংস হবার ও আদেশ পালন করবার। ঐ দিন এনোলা গে মেরেছিল ৪০ হাজার মাত্র। কিন্তু জানেন কি তারও ৫ মাস আগে ১০ই মে ১৯৪৫ হিরোসিমায় এক রাতে মাত্র আড়াই ঘন্টায় আমেরিকানরা আগুণে বোমায় মেরেছিল ১০০০০০ (হাঁ এক লক্ষ) মানুষ [দেখুন http://www.globalarming.org/]। আসুন খূজে দেখি এসবের পেছনে আসলে কারা এবং পরিশেষে কে লাভবান হয়।
-অপ্রিয়
নতুন মন্তব্য করুন