এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর এই লেখায় আমার নিজের,পরিবারের আর বন্ধুদের কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো ভেবেছিলাম। কিন্তু মন্তব্যের আকার বড় হয়ে যাওয়ায় ভাবলাম নারী সপ্তাহের জন্য আলাদা পোস্ট দিয়ে দেই। এখানে শুধু নিজের কিংবা কাছের মানুষের অভিজ্ঞতাগুলোই দিচ্ছি।বাস্তবে নারীরা কর্মক্ষেত্রে এর থেকে বেশি যন্ত্রনার স্বীকার হন।
১) একজন সিংগল মায়ের অভিজ্ঞতা।
আমার বাবা নেই। আম্মা কাজ করেন একটা আধা সরকারী ব্যংকে। আমার মা বলে বলছিনা, উনি সত্যিই অনেক পরিশ্রমী মানুষ। সবসময় অনেকের তুলনায় অনেক বেশি কাজ করেছেন। কিন্তু সেই তুলনায় স্বীকৃতি মেলেনি। সমসাময়িক অনেকের তুলনায় অফিসে উনার অবস্থান অনেক নীচে।
ডিভোর্সি হবার কারণে কলিগ/ইন্সট্রাক্টর/ম্যানেজার অনেকেই বিভিন্নরকম বাজে ইঙ্গিত দিত। কেউ কেউ চাইতেন আম্মা তাদের সাথে ফোনে কথা বলুক কিংবা ঘুরতে যাক। এদের মধ্যে একজন একটা সাহায্যের বিনিময়ে আম্মাকে রীতিমতো পার্মানেন্ট মিস্ট্রেস হবার প্রস্তাব করেছিলেন। তার কথা ছিল এরকম, আপনি তো ডিভোর্সি। আমার বউয়ের সাথে সম্পর্ক ভালো না। আমরা একটা বোঝাপড়ায় আসি, তাহলে আপনার এখানকার সব ঝামেলা আমি দেখবো ...
উনি সম্ভবত ছিলেন সিবিআইয়ের নেতা।
আম্মা তার নৈতিকতা বিসর্জন দেননি। দুই বাচ্চা সামলে অনেক কষ্টে ব্যাংকিং প্রফেসনাল পরীক্ষা গুলো পাশ করেছেন। কিন্তু উপর লেভেল এ তোষামোদি না করায় তার প্রাপ্য প্রমোশন মেলেনি।
কখনো কাজের স্বীকৃতি পেলেও চারপাশে ফিসফিস করে কলিগেরা বলেছে আরে উনারতো হাসব্যান্ড নেই। সিনিয়রদের কীভাবে খুশি রাখতে হয় উনি জানেন।
২) আমার নিজের প্রথম কাজ
আমি শখের বশে একটা এয়ারলাইন এ কেবিন ক্রুর জন্য ট্রেইনিং নিয়েছিলাম। কথা ছিল ওখান থেকে যারা যোগ্য তাদের কেবিন ক্রুয়ের জন্য নেয়া হবে। প্রশিক্ষনের শুরু থেকে সবাই আমার ব্যাপারে খুব আশাবাদী ছিল। আমার আত্মবিশ্বাস, উপস্থাপনা সব নাকি ভাল। শুরু থেকেই আমি ভাল কাজ করতে পারবো।
কেবিন ক্রুদের জন্য প্রথমে একটা দল ঠিক করা হলো যারা একটা ছোট ট্রেইনিং এর জন্য সৌদি আরব যাবে। সেই দলে আমার নাম আসলোনা দেখে সবাই খুব অবাক হলো। কজন বললেন, কিছু টাকা ঢালো তাহলেই কাজ হবে। আমি বলে দিলাম ভাই আমিতো ঘুষ দিয়ে চাকরী করবোনা। পরে সেই ট্রেইনিং বাতিল হয়ে গিয়েছিল কিন্তু হজ্ব ফ্লাইট হয়েছিল যেখানে সব যোগ্যতা থাকার পরেও আমাকে নেয়া হয়নি।
আমার বুঝতে অনেক সময় লেগেছিল ওখানে কাজে ভালো করার প্রাথমিক শর্ত ছিল বসের সাথে কাজের বাইরেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বসের সাথে ব্যক্তিগত-পারিবারিক সম্পর্ক রাখতেন। ছেলেরা রাতে ফাইভ স্টার হোটেলে ড্রিংক এর পার্টনার ছিল, বসের গাড়িতে লিফট নিলে উনি খুশি হতেন। মেয়েরাও তার গাড়িতে লিফট নিত, শপিংয়ে যেত। পরে শুনেছি উনি কজনকে উনার সাথে হোটেলে থাকার জন্য বলেছিলেন।
বলা উচিত আমার কিছু কলিগ ছেলে এবং মেয়ে উভয়েই আমার জন্য খুব যুদ্ধ করেছিলেন। এরকমও বলেছিলেন আমাকে না নেয়া হলে তারাও ফ্লাইটে যাবেন না। পরে একসময় আমি নিজেই কাজটা ছেড়ে দেই।
৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিলাম ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে মাস্টার্স করবো বলে। প্রায় বিনা পড়াশোনাতেই যখন লিখিত পরীক্ষায় টিকে গেলাম তখন মনে হলো মৌখিকেও পারবো।
ভাইবায় প্রথম পাঁচমিনিটের মতো ছিল কোর্সের সাথে সম্পর্কিত প্রশ্ন। মনে হলো আমার উত্তর উনাদের ভাল লেগেছে। আমার কিছু কর্মশালাও করা ছিল, যেটার কারণে আমার পক্ষে উত্তর দেয়াও ছিল সহজ।
এরপরই শুরু হলো ব্যক্তিগত প্রশ্ন।
আপনি কি ম্যারিড?
- জি স্যার।
আপনি কি জানেন এই ডিপার্টমেন্ট এ কত পড়া?
-জি স্যার জানি। আমার স্বপ্ন এখানে পড়া। আমি প্রাণপণ চেষ্টা করবো।
আপনার শ্বশুরবাড়ি তে সমস্যা করবেনা? সন্ধ্যায় বাইরে থাকতে হবে, সারাদিন ল্যাব।
- স্যার তারা কেন কিছু বলবেন? এটা আমার জীবন।
তারপর আরো কিছু টুকটাক আলাপ।
আমরা এই ডিপার্টমেন্ট এ আসার আগে বলি বয়ফ্রেন্ড থাকলেও ছেড়ে আসতে, আপনার তো হাসবেন্ড আছে। আমি কি শপিং করি? এই ডিপার্টমেন্ট এ ভর্তি হলে শপিং ভুলে যেতে হবে। পিজি তে রাত বিরাতে কাজ করতে হবে। বাসায় কী বলবে? হাসবেন্ড কী করে? ভবিষৎ এ বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা আছে কিনা কারন আজকাল সবাই বিদেশে যেতে চায়। বাংলা মিডিয়াম দিয়ে পড়ে ইংলিশ ভার্সন কাভার করতে পারব কি? ইত্যাদি।
বলা বাহুল্য আমার সেই সেই ভাইবায় পাশ করা হয়নি। সম্ভবত বিবাহিত হওয়াই ছিল আমার অপরাধ।
৩) সামরিক বাহিনীতে নারীদের অবস্থান
আমার এক কাছের বড় আপু আর্মিতে মেজর। উনি উনার কাজ নিয়ে খুব হতাশ। বলছিলেন আর চাকরী করবেন না।
মেজর হবার পর উনার পোস্টিং হবার কথা ইউনিটে। কিন্তু সেখানে অন্য পুরুষ অফিসারদের মতো উনাকে দায়িত্ব দেয়া হয়না। ছেলেরা লেফট্যানান্ট কর্নেল হবার পর থেকেই ইউনিটে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নারী অফিসারের ক্ষেত্রে এটা আলাদা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের দিয়ে করানো হয় অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজগুলো। গ্রাউন্ড লেভেল কাজে মেয়েদেরকে অন্তত দুজনের দলে পাঠাতে হয় বলে ঝামেলা মনে করা হয়। এছাড়াও মেয়েদের গ্রাউন্ড লেভেলের শুরুর কোর্স, যারা সামনে গিয়ে কোম্পানি কমান্ডার(2C) বা কমান্ডিং অফিসার হিসেবে কাজ করার কথা কিন্তু তাদের কে আদৌ 2C Rank দেয়া হবে কিনা এই ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। তাছাড়া অনেক নারী অফিসার বলেন সৈনিকেরা তাদের ততটা সম্মান দেখান না কিংবা কমান্ড পালন করেন না যতটা পুরুষ কমান্ডারদের করেন।
৫) চেহারা দিয়ে যোগ্যতা বিচার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ে আমার এক বন্ধু। একটা মৌখিক পরীক্ষার পর তাকে বলা হলো, তোমাকে দেখেই বুঝেছিলাম তুমি পারবে। তুমিতো দেখতে ভালো না, কালো মেয়েগুলো পড়াশোনা ভালো পারে। চেহারা সুন্দর মেয়েগুলো মাথা ফাঁকা।
এই কথাগুলো বলেছিলেন আইন বিভাগের একজন অধ্যাপক।
ওপরের অভিজ্ঞতাগুলো আসলে খুব বেশি কিছু না। কর্মস্থলে সব পর্যায়েই নারীরা এর থেকেও খারাপ অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়। আশা করি নারীর জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র আন্দোলন নিয়ে সরকার এবং সাধারণ মানুষ সবাই এগিয়ে আসবে।
-----------
আফরোজ
মন্তব্য
খুব কষ্ট লাগলো ঘটনা গুলো পড়ে। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটা কষ্টকল্পনা; তবে আইন করে একজন চাকরিপ্রার্থীকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন (পারিবারিক/বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, বর্ণ, ইত্যাদি) জিজ্ঞাসা নিষিদ্ধ করা উচিৎ।
আমার এক বন্ধুর চাকরির ইন্টার্ভিউতেও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল সে বিবাহিত কিনা। সে উল্টে জিজ্ঞাসা করেছিল প্রশ্নকারী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে আগ্রহী কিনা।*
Emran
*ঘটনাটা অবশ্য ঘটেছিল আমেরিকায়। বাংলাদেশে মনে হয় না এটা সম্ভব।
হয়ত একদিন এই অবস্থার পরিবর্তন হবে। কিন্তু, আপনি ঐ যে শেষ লাইনে লিখেছেন - আন্দোলন, সেই আন্দোলন ছাড়া হবে না মনে হয়।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সরকারের মুখ চেয়ে বসে থাকলে হবে না আসলে। ঘরে বাইরে আমাদের সরব হতে হবে।
বৈষম্যমূলক আচরণের বা অন্যায়গুলোর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হতে হবে জোরেশোরে।
রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব না, কিন্তু প্রতিবাদের চর্চাটা সব পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে নিশ্চয়ই একটা ভালো ফল পাওয়া সম্ভব হবে।
বর্ণ আর লিঙ্গ বৈষম্য দেখতে আর ভালো লাগেনা! ঘটনাগুলো পরে খুব খারাপ লাগলো।
নারীরা মানুষ পরে, আগে নারী!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
১. আপনার মায়ের প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা। আমার মা অল্প বয়সে বিধবা হয়ে তার অপোগণ্ড ছেলেমেয়েদের বাঁচিয়ে রাখার, মানুষ করার সংগ্রাম করে গেছেন দীর্ঘ দিন। আমি তাঁর সংগ্রামের ইতিহাস একটু হলেও জানি। আর বিধবা নারীর প্রতি সব হুলো বেড়ালই মুখ বাড়ায়। এই মানসিকতা সহসা পরিবর্তন হবার নয়।
২. কিছু কিছু ইন্ডাস্ট্রিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে ব্যক্তিগত খাতির রাখা, পুরুষ অধস্থনরা তার ফাইফরমাশ খাটা, নারী অধস্থনরা তার শয্যাসঙ্গী হওয়াটা মোটামুটি কালচার হয়ে গেছে। যারা কাজের মাঠে নেমেছেন তারা কোন ইন্ডাস্ট্রির কালচার কী সেটা অল্প দিনেই বুঝে যান। এই কালচার সহসা যাবার নয়।
৩. আপনি যা ভাবছেন ব্যাপারটা অমন নাও হতে পারে। ঢাবি'র প্রফেশনাল স্কুলগুলোতে সাধারণত লিখিত পরীক্ষায় সিট সংখ্যার দ্বিগুণসংখ্যক জনকে পাশ করানো হয়। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করাদের যাদের নম্বর নিচের অর্ধেকে থাকে তারা মৌখিক পরীক্ষায় খুব ভালো না করলে সাধারণত বাদ পড়ে। আর যাদের নম্বর উপরের অর্ধেকে থাকে তারা audacity, idiocy, stupidity দেখালে বা বিষয়সংলগ্ন সোজা প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে সাধারণত বাদ পড়ে।
৪. অনাদিকাল থেকে সামরিকবাহিনীতে শুধু পুরুষরা কাজ করে এসেছে। সুতরাং সামরিকবাহিনীর সংস্কৃতি ও মানসিকতাতে রাতারাতি পরিবর্তন আশা করা যায় না। তবু যা কিছু হচ্ছে তার মধ্যে বেআইনী কিছু হলে তার প্রতিকার চাওয়ার উপায় সামরিকবাহিনীতেই আছে। কেউ অন্যায় আচরণের শিকার হলে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন। সামরিক বাহিনীতে নারীদেরকে অন্তর্ভূক্ত করতেই যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এখন নারী সৈনিকরা যদি অল্পতে হাল ছেড়ে দেন তাহলে ভবিষ্যতে তো সামরিকবাহিনীতে নারীদের ঢোকার পথই বন্ধ হয়ে যাবে।
(একটা গল্প বলি। এক তুতো বোন সামরিকবাহিনীর অফিসার। তিনি অসুস্থ অবস্থায় এক সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমি হাসপাতালের রিসেপশনে গিয়ে তাঁর নাম, পদবী ও কর্মস্থলের বিবরণ জানিয়ে জানতে চাইলাম তিনি কোন কেবিনে বা ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন সেটা জানাতে। রিসেপশন থেকে বলল,
- উনার হাজবেন্ডের নাম কী?
- উনি তো বিবাহিতা নন্। আর উনি নিজেই তো সামরিকবাহিনীর অফিসার। আপনাকে তো তাঁর নাম, পদবী ও কর্মস্থলের বিবরণ বললাম।
- তাইলে গাইনী ওয়ার্ডের লিস্টটা চেক করেন।
- উনি তো অন্য সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উনার তো গাইনী ওয়ার্ডে থাকার কথা না।
- তাইলে উনার হাজবেন্ডের নাম বলেন আমি অন্য ওয়ার্ডের লিস্টগুলা দেখি।
- আমি তো বললাম উনি বিবাহিতা নন্, উনি নিজেই সামরিকবাহিনীর অফিসার।
এমন সময় আরেকজন এসে বললো, আপনি তিনতলায় গিয়ে কেবিনের লিস্টটা চেক করুন তো ওখানে না পেলে এখানে আবার আসবেন।
ভাগ্যিস তিনতলার লিস্টে তাঁর নাম পেয়ে গেলাম। আমি মনে মনে ইসমত চুঘতাইয়ের 'একটি স্বামীর জন্য' গল্পটা মনে করতে করতে তাঁর কেবিনের দিকে রওয়ানা হলাম।)
৫. এই ধারণাটা নারীপুরুষ নির্বিশেষে আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। এর আরেকটা ভার্সান হচ্ছে, 'সুন্দরী মেয়েদের কোন কিছু জানার/শেখার দরকার নেই; এমনিতেই সবাই তাদের কাজ করে দেবে'। এই মানসিকতাও সহসা যাবার নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আপনার মায়ের নিশ্চই আরো অনেক গল্প আছে।
উনার চাকুরী চালিয়ে যাবার ছেলে মেয়ে বড় করার গল্প আরো বিশদভাবে শুনতে চাই।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমার অফিসের সব লেভেলের বস নারী হওয়ায় হয়তো এই সমস্যায় পড়তে হয়নি কখনো। তবে একই প্রতিষ্ঠানের অন্য এক উইং-এ কর্মরত আমার ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র কেঁদে ফেলেছিল একদিন বাসে দেখা হলে। চাকুরি ছেড়ে দেবে বলেছিল। ওকে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছিলাম ম্যানেজ করার, জানি না হয়ত নিজেই ম্যানেজ করে ফেলেছে। এখন চাকুরিটা করছে, ঝামেলাও আর হচ্ছে না জানিয়েছিল পরে।
আমার নিজের খুব ইচ্ছা ছিল রিসার্চে কাজ করার, ফেলোশিপও ছিল পড়ার সময় কিন্তু অন্যদের অভিজ্ঞতা শুনে মনে হয়েছে যা করছি করতে থাকি, গবেষক হওয়া আমার কম্ম নয় ।
বিসিএস-এর ভাইভা দিলাম শুনে আমার এক সহকর্মী অন্য এক সহকর্মীর কথা শোনালেন। সেই আপু ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, বিয়ের পরেই জয়েন করেছিলেন, বসের যন্ত্রণায় চাকুরি ছাড়তে বাধ্য হন-খুব নাকি কেঁদেছিলেন তিনি তখন।
আমার ম্যাজিস্ট্রেট বন্ধুর সাথে কথা হলেই সে একটা কথা জানায়, ‘সকল বস নারীবান্ধব হন না’...
দেবদ্যুতি
নতুন মন্তব্য করুন