ইট ওয়াজ নট এ পিস অফ কেইক

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৪/০৫/২০১৫ - ১:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা সময় ছিলো যখন আমি ব্যক্তিগতভাবে আলাদা করে নারী স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলাটাকে হিপোক্রিসি ভাবতাম। অনেক কিছু দেখে আস্তে আস্তে নারী’র স্বাধীনতা বিষয়ক আন্দোলন নিয়ে আমার ধারণা পাল্টেছে।

আসলে গড়পড়তা বাঙ্গালী মেয়েদের তুলনায় নিজের জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে আমি মোটামুটি অবিশ্বাস্যরকমের স্বাধীনতা পেয়েছি। পরিবার থেকে, পরিচিত জনদের কাছ থেকে কম-বেশি সহযোগিতা পেতে থাকায় আমার পেশাজীবন মোটামুটি নির্ঝঞ্ঝাট কেটেছে। এই কারণেই হয়তো একটা সময় পর্যন্ত মনে হয়েছে স্বাধীনতা তো নিজের ইচ্ছাশক্তির ব্যাপার, এ নিয়ে হাউ-কাউ করার কী আছে?
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো ছকে বাঁধা দশটা-পাঁচটা অফিসের বৃত্ত থেকে বের হয়ে যখন ব্যবসা শুরু করতে গেলাম, আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করলাম যে আমার মত প্রিভিলেজ পাওয়া মানুষ খুব একটা বেশি নাই। আর আমিও এতদিন পর্যন্ত প্রিভিলেজ পেয়ে এসেছি কারণ আমার কাজ-কর্ম সামাজিক মানুষের চোখে মোটামুটি গতানুগতিক ভালো মেয়ে গোত্রীয় ছিল।

আমাদের ব্যবসার শুরুটা আসলে ঝোঁকের বশে। আমি যে কখনো ব্যবসা করবো এরকমটা ভাবিনি। এমনিতে খাবার নিয়ে আগ্রহের একটা জায়গা ছিলো, তবে আমার বাবা আমাকে কখনো রান্না করতে দিতে চাননি। দিনরাত পড়াশুনা করার বুলি আউড়ে গেছেন। মেয়ে বলেই রান্না করতে হবেই, কিংবা বিদ্রোহী হতে গিয়ে রান্না করবোই না এই দুই ধারণার কোনটার সাথে আমি একাত্মতা পোষণ করতে পারিনি। রান্নার শুরুটা আমার গ্রাজুয়েশান এর পরে, আমার নিজের আর ছোট ভাইবোনদের জন্য রাঁধতে গিয়েই আমার এই শখের যাত্রা শুরু।

ভাই বোনদের জন্যে শুরু হলেও চাকরিজীবনে সহকর্মীদের উপরেও প্রচুর রান্নার এক্সপেরিমেন্ট করেছি। ২০১২ এর মাঝামাঝির দিকে আমার এক প্রাক্তন সহকর্মী আমাকে প্রথম সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বেকিং ক্যাটারিং এর ধারণার সাথে পরিচয় করান। দেশি দু’চারজন নারী উদ্যোক্তার কাজ দেখতে দেখতে এক সময়ে মনে হতে থাকে এরকমের কিছু আমিও শুরু করতে পারি। তবে চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আর কিছুটা আমার আলসেমীর কারণেও করবো করবো করেও শুরুটা আর হচ্ছিলো না। তাছাড়া একেবারে নিজে নিজে রেসিপি বই দেখে আর You Tube tutorial দেখে শেখা বিদ্যা দিয়ে ব্যবসা শুরু করবো কিনা এ নিয়েও সন্দিহান ছিলাম।

২০১৩ এর শুরুর দিকে আমার ছোট বোন আর তার কিছু বন্ধু আমাকে বেশ উৎসাহ দিতে লাগলো , তাদের ভাষ্যমতে আমি যদি শুধু পরিচিত মহলেও ব্যবসা শুরু করতে পারি, তাতে করেও নতুন কিছু শেখা হবে আর বাড়তি কিছু উপার্জনও। আমাদের বেকারীর যাত্রা এরকম ভাবেই শুরু, পায়ের নিচে শক্ত মাটি পাবো কখনো এরকমটা ভাবিনি তখনো।

কাজ শুরু করার পর থেকে একটু একটু করে নানা রকমের অদ্ভুত বিপত্তির সম্মুখীন হতে থাকলাম। পরিবারের ভেতরেও প্রথমে কেমন একটা ভাগাভাগি তৈরী হয়ে গেলো, যদিও আমার বাবাকে বাদ দিয়ে ভাই-বোন কিংবা মা এই ব্যাপার সমর্থন দিয়ে এসেছে একদম গোড়া থেকেই। আপত্তি এসছে মূলত extended family থেকে আর যারা আপত্তি করছিলেন তাদের বেশিরভাগেরই আপত্তির বিষয়বস্তু ছিলো ‘তুমি মেয়ে হয়ে ব্যবসা করবে?’

আমার একদম ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধবেরা অবশ্য আমার ব্যবসা শুরু করাটাকে খুব বেশি সিরিয়াসলি নেয়নি প্রথমে। তবে আমার কাজে তাদের সমর্থন ছিলো প্রথম থেকেই। সবচেয়ে বেশি উৎসাহ পেয়েছি আমার মা আর ভাই বোনদের থেকে। আমার সমস্ত কিছুতে আমার মায়ের অগাধ বিশ্বাস আমাকে এমন একটা ভরসার জায়গা দিয়েছে যে আমার কাছে সবকিছু অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।

যাই হোক... আমি, আমার বোন আর আমাদের এক বন্ধু মিলে মাত্র ব্যবসা শুরু করেছি, আলাদা কারখানা নেই আমাদের তখনো, বাসায় বসেই কাজ করতে হবে, তাই বাড়িওয়ালা খালাম্মাকে জানানো হলো ব্যবসা শুরুর কথা। উনি বাসায় এলেন দেখতে আমরা কী কী অঘটন ঘটাচ্ছি। আমার বাবার সাথে, বোনের সাথে অনেক কথা বললেন, কথার ফাঁকে আমার বোনকে বললেন, ‘ তোমরা তো চাকরী করছোই, আবার ব্যবসা শুরু করতে গেলে কেন? তোমার বাবাও দেখি কিছু বলছেন না তোমাদের, মেয়ের টাকায় চলতে চান নাকি’।

আমার মৃদুভাষী বোন কী জবাব দিয়েছিলো আমার ঠিক মনে নেই। তবে প্রতিবাদের সারমর্ম ছিলো এই যে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের আর্থিক সহায়তা সন্তান মাত্রেরই করার কথা, সেক্ষেত্রে ছেলে কিংবা মেয়ে সন্তানের প্রসংগ কেন আসবে? আর মেয়ের টাকা নিলে বাবার কেন অসম্মান হবে? এ কোন রকমের সম্মান?

বাড়ির মালিক যেই খালাম্মা বাড়িটা আমাদের চার ভাই-বোনকে ভাড়া দিয়েছিলেন আমি ডিভোর্সী বলে তার বক্তব্য ছিলো এরকম যে আমাদের মত অসহায় (!!!) মেয়েদেরকে সাহায্য না করলে কী করে চলবে? প্রথম প্রথম মোটামুটি ঠিক-ঠাক চলছিলো। আমাদের বাসায় এমনিতে খুব একটা লোক সমাগম কখনো ছিলোনা। কিন্তু কোন মানুষ , বিশেষ করে আমাদের কারো ছেলে বন্ধু এলে হাজারটা প্রশ্ন আসতে শুরু করতো। এর মধ্যে আমার ব্যাবসায়িক পার্টনার যেহেতু একজন ছেলে, এই নিয়ে আস্তে আস্তে তারা নানা রকমের অদ্ভুত ইংগিত দিতে শুরু করলেন।

ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্ব বা একসাথে কাজ করার মানেই যে friendship with benefit নয়, এই কথাটা মনে হয় তাদের মাথায় একবারও আসে নাই। প্রথমত আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তাদের এত মাথা ব্যথার কোন কারণই নাই, আর দ্বিতীয়ত আমি ডিভোর্সড বলে আমার কোন ছেলে বন্ধু থাকতে পারবেনা এইরকমের যুক্তিও মেনে নেওয়া অসম্ভব।

বাবার বন্ধুদের সাথে আমার ছোটবেলা থেকেই অন্যরকমের একটা বন্ধুত্ব আছে, আমি তাদের রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক আলাপের দোসর, তাই দুই একজন বাদে সবাই আমাকে সাপোর্ট-ই দিয়েছেন। যেই কজন বিরোধিতা করেছেন তাদের সবাই বাবাকে বকেছেন কেন আমাকে বিয়ের বয়েস থাকতে থাকতে আবার বিয়ে না দিয়ে এইসব আজেবাজে কাজে জড়াতে দিচ্ছেন। আমি পছন্দসই পাত্রের একটা অবিশ্বাস্য গুণাগুণ-ওয়ালা লিস্ট বাবার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছি এরকম পাত্র পেলে খবর দিও, বিয়ে করে নেব, তার আগ পর্যন্ত এই কাজ করতে থাকি।

আমার বাবা মা প্রথম দিকে উত্তরায় থাকতেন তাদের বাড়ি দেখাশুনার জন্য। ক্রমাগত অভিযোগে বিরক্ত হয়ে তারা আমাদের এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স এ আরেকটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে চলে আসেন। মায়ের দিক থেকে কোন রকমের সমস্যা কিংবা সন্দেহ কখনো আসেনি। তবে বাবা বেশ বিচলিত হয়ে যেতেন। আমাকে সরাসরি কিছু না বলে হয়তো মা-কে বলেছেন।

একটা সময় ছিলো যখন বাবাকে ভয় পেতাম সবাই, কিন্তু অনেকদিন হল তার সাথে তর্ক করে বা বুঝিয়ে তার ভুল ভাঙ্গানোর দায়িত্ব সব ভাই বোন মিলে নিয়ে নেওয়ার এখন আর তিনি আমাদের সাথে খুব একটা সুবিধে করে উঠতে পারেন না। কিন্তু এরপরেও ঝামেলা শেষ হয়না, আমাদের বাসায় যেকোন মানুষ এলেই তাদের সাথে অভদ্র ব্যবহার করা হতো নিচের গার্ডরুম থেকে।

আমরা মোটামুটি বিরক্ত হয়ে আগের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে নতুন বাড়িতে গেলাম। এখানে বাড়িওয়ালাকে জানানো হলো আগেই যে আমি বাসায় বসে কেক বানিয়ে বিক্রি করি। এদিকে ততদিনে আমাদের অল্প-বিস্তর নাম হয়েছে, তো এখন ঝামেলা শুরু করলেন প্রতিবেশীরা। একদম পরিচিত বা বন্ধু-বান্ধবদের ছাড়া আর কেউ কেক নিতে কখনো বাসায় আসতেন না, গলির মোড়ে একটা পিক-আপ পয়েন্ট ঠিক করা হয়েছে, সেখান থেকেই ডেলিভারী দেওয়া হতো।

কিন্তু মাঝে মাঝে বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়স্বজন বাসায় এলেই তারা ঝামেলা শুরু করে দিলেন, মেয়েরা বাসায় বসে ব্যবসা করছে এই কথাটেকে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বাজেভাবে বলতে শুরু করলেন।

আমার ছোট বোনের এক জার্মান বান্ধবী আমাদের বাসায় এক সপ্তাহের মত ছিলো, তার জন্যে মোটামুটি কমিটি গঠন করে মিটিং-মিছিল করে একাকার। এই বাড়িতে আমাদেরকে বাদে সকলেই ফ্ল্যাট মালিক, সব মালিক একত্রিত হয়ে আমাদের বাসায় আসা প্রতিটা বন্ধু-বান্ধবকে ধরে জেরা করতে শুরু করলেন এবং বাড়ির মালিককে বিচারও দিলেন । তাদের ভাষ্যমতে , “এতদিন নিজেরা ব্যবসা করেছে, এখন বিদেশী নিয়েও ব্যবসা শুরু করছে।" এই কথা দিয়ে তারা কী বলতে চেয়েছে সেই কথা সহজেই অনুমেয়।

এতসব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে শেষ-মেষ একটা কমার্শিয়াল জায়গা ভাড়া করে কাজ-কর্ম শুরু করে দিলাম। এই জায়গা খুঁজে পাওয়া আর সেখানে কিচেন আর অফিস সেট আপ দেওয়ার পর্বটা খুব সহজ ছিলোনা। আমাদের যেহেতু এসব ব্যাপারে ধারণা খুব কম তাই আমার পার্টনারও প্রথমে খানিকটা গররাজী ছিলো পরবর্তী ঝামেলার কথা ভেবে, সব মিলিয়ে বেশ দিশেহারা অবস্থা ছিলো। কিন্তু এখানেও আমার মা আর ছোট বোনেরা সাহস দিলো।

আমার মেঝ বোন স্থপতি, সে আর আমার বাবা –মা মিলে একটা চলনসই জায়গা খুঁজে দিল। আমরা মোটামুটি পুরা পরিবার আর আমার পার্টনার মিলে চট্টগ্রাম থেকে কম দামে জাহাজী ফার্ণিচার কিনে আনলাম সাশ্রয় এর জন্য। ওখান থেকে ফেরত আসার সময়ে পা ভেঙ্গে ফেলায় এক-মাস নড়া চড়া বন্ধ হয়ে গেল। সেই সময়টা আমার পার্টনার আর পরিবারের বাকি সবাই মিলে আমাদের কিচেন স্টুডিও তথা বেকিং ফ্যাক্টরি’র ডেকোরেশান আর ইনস্টলেশানের সব কাজ কর্ম দেখাশুনা করতো। এভাবেই চলেছে কাজ।

দু বছর পার্ট-টাইম কেক বিক্রি আর ফুল টাইম শিক্ষকতা করে হাতে যা টাকা ছিলো সেই টাকা দিয়ে আসলে ঢাকায় বসে কমার্শিয়াল স্পেস ভাড়া করার আশা মোটামুটি বালখিল্যতার পর্যায়ে পড়ে। আমি কস্মিনকালেও ধার-দেনা করিনা, অথচ এর জন্যে হেন লোক নাই যার থেকে ধার নেওয়া লাগে নাই।

সেই ধার শোধ করবার জন্য গত সাত মাস ধরে কি পরিমাণে কাজ করতে হয়েছে বা হচ্ছে সে কথা কাউকে বোঝানো মুশকিল। আশে পাশের পরিচিত মহলে মোটামুটি ডুমুরের ফুলের তকমা পেয়ে গেছি । সেই জায়গা আবার কদিন আগে আমাদের বাসার বাড়িওয়ালা এসে দেখে গেলেন, সম্ভবত বুঝতে যে আমরা আসলে কি করে বেড়াই।

এর মধ্যে আমি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরিটা ছেড়ে দিলাম, ব্যবসা আর চাকরী এই দুই মিলিয়ে কিছুতেই আর কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছিলো না। আমার কলিগদের অবশ্য বেশিরভাগেরই ধারণা ছিলো আমি দুই ই পারবো। তবে কেউ কেউ উন্নাসিকতার ভাব-ও দেখিয়েছেন। ‘কোথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর কোথায় বেকারী মালিক!’ কিছুটা এরকমের মনোভাব ও দেখেছি মানুষের ভেতরে।

তবে একটা জিনিস যা আমি দেখে এসেছি সব সময়ে, সবার আগে নিজের প্রতি নিজের সম্মান তৈরি হওয়া জরুরী। নিজেকে, নিজের কাজকে নিজে সম্মান করলে অন্যরাও একসময়ে সম্মানের জায়গাটা দিতে বাধ্য হয়।

চাকরি ছাড়ার আগে আমি বেশ হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলাম সবকিছু সামলাতে গিয়ে। আধা-আধি কোন কিছুই করা আমার পছন্দ না। যখন স্পষ্ট বুঝলাম যে এভাবে বেশিদিন ব্যালেন্স করতে পারবো না, কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললাম।

এই খবর জানানোর পরে আশে-পাশে মানুষ বিশেষ করে কিছু কিছু বন্ধু-বান্ধবদের কথায় মনে হলো শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ কাজটা আমি করেছি। এত বছরের পড়াশুনা সব জলাঞ্জলী দিয়ে একি কাণ্ড বাধিয়েছি! প্রথমে আমি ঠিক বুঝি নাই সমস্যাটা কোন-খানে। কয়েকজন অতি উৎসাহী হয়ে জানালেন আমার বয়েস যাচ্ছে বেড়ে, আরো একবার বিয়ে করা উচিত জলদি; মা হবার বয়েস পার হয়ে গেলে আমাকে নাকি আর পার করা যাবেনা।

একজন আরো এক কাঠি সরেস, ঠারেঠোরে বলেই ফেললেন আমার এমনিতে যা শরীরের গঠন তাতে করে বিয়ে হওয়া মুশকিল, এমন অবস্থায় চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে নিজের পায়ে নাকি কুড়ালই মেরেছি।
তাদের কথা শুনে মনে হচ্ছিলো, আমি বাংলা সিনেমার হতভাগ্য নায়িকা , যে ৩ হাত আঁচল দিয়ে বেলাভূমি ঝাড়ু দিতে দিতে বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজে বেড়াচ্ছে।

প্রথমে কয়েকজনের সাথে জোর তর্ক করেছি, পরে দেখলাম সেই তর্ক উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মত। সিদ্ধান্ত নিলাম এর চেয়ে আমি আমার কাজ করে যাই, মানুষের যা ভাবার ভেবে শান্তি পাক। আমি নিজের কাছে যতদিন ঠিক আছি, বাকি আর কিছু নিয়ে ভাববার সময় বা দরকার কোনটাই নেই।
তাছাড়া, অনলাইনে পরিচয় হওয়া একটা অসাধারণ কমিউনিটি তখন আমার পাশে। সেইসব মানুষদের আমি আলাদা করে কখনো ধন্যবাদ জানাই নি হয়তো। কিন্তু তারা আমাকে কি পরিমাণে সাহস জুগিয়ে গেছেন সেই কথাটা তারা নিজেরাও হয়তো জানেন না।
আজকাল অবশ্য অন্যদের চেহারাও পাল্টে গেছে। কিছু তথাকথিত নাক-সিঁটকানো বন্ধু বান্ধবকে যখন দেখি কথার মোড় ঘুরিয়ে অন্যদের কাছে গর্ব সহকারে গল্প করে যে আরে এ তো আমার বন্ধুর ব্যবসা, তখন হাসি পায়।

আমার বাবা যিনি কিছুদিন আগেও, মানে আমার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরেও মানুষজনকে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষকের পরিচয়টাই দিতেন, তিনিও মাঝে মাঝে বাসায় বেড়াতে আসা বন্ধু-বান্ধবদের ডেকে খবরের কাগজে ছাপা হওয়া আমাদের কোন গল্প দেখান, তখন আমি নিজের মনে বিড়বিড় করে বলি, হতে পারে আমি তেমন কিছু করে উঠতে পারিনি জীবনে, কিন্তু নিজের শর্তমতে বাঁচার স্বাধীনতা টুকু তো অর্জন করে নিয়েছি।

এসব আসলে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, এসবের বাইরেও ব্যবসায়ের জন্যে পেজ খোলার পর থেকেই পেজ এ এসে সেক্সিস্ট মন্তব্য দেওয়া, আমাদের ব্যবসায়িক নম্বর এ ফোন দিয়ে আজেবাজে কথা বলা ইত্যাদি নানা রকমের ঝামেলা তো হয়েছেই।

তবে পুরো অভিজ্ঞতা থেকে একটা ব্যাপার স্পষ্ট বোঝা গেছে যে অধিকার কেউ থালায় তুলে এসে দিয়ে যাবেনা, মনের জোর রেখে লড়াইটা চালিয়ে গেলে একটা সময় সফলতা আসতে বাধ্য, সে ছেলে হোক আর মেয়েই বা হোক।
তবে আশে-পাশের মানুষদের সহযোগিতাটা জরুরী, এই পুরো সময়টা পরিবারের বেশ কিছু মানুষ আর বেশ কিছু পরিচিত –অপরিচিত মানুষ যেভাবে আমার যোগ্যতার উপরে আস্থা রেখে গেছে, সেইভাবে সাহস আর শক্তি ধার না দিলে যুদ্ধটা নিশ্চিতভাবে অনেক বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়াতো।

তবে আমি শুধু মেয়ে ব্যবসায়ী হিসেবে সফল হতে চাইনি কখনো, মানুষ হিসেবে লিঙ্গ নির্বিশেষে যোগ্যতা অনুযায়ী আমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সমান পদক্ষেপের অধিকার চেয়েছি মাত্র। চেয়েছি এবং এখনো চাইছি যাতে করে কোন glass ceiling effect এর শিকার না হই। এবং সেই সাথে পরিবারের অন্যদের এবং আশে পাশের মানুষদের বিশেষ করে মেয়েদেরকে নিজেদের পেশা নির্বাচনের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি, আমাকে দেখে আরো দশটা মেয়েও যদি নিজের স্বাধীনতার চাবি নিজের হাতে নিয়ে নেয় তাতে মন্দ কী?

---------------------------
আনিকা আলম


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার লেখা শেষে আমি মনে মনে উঠে দাঁড়িয়ে হাত তালি দিলাম। ব্রাভো!!!

আনিকা আলম এর ছবি

হাসি

ইয়ামেন এর ছবি

আপু, চমৎকার। যেসব মানুষ কথা বলার তারা বলবেই। তাদের কথায় কান না দিয়ে অথবা তাদের সাথে তর্কতে না গিয়ে নিজের কাজ নিজের মত করে যাচ্ছেন, সেটাই ভালো। আপনার সাফল্য দেখেই হয়ত একদিন তারা তাদের ভুল চিন্তাভাবনা থেকে সরে আসতে পারবে। আর যদি না পারে, তাও সমস্যা নেই। আপনি আপনার জায়গায় ঠিক থাকলেই আর প্রফেশনাল সেটিস্ফেকশন পেলেই হলো। আপনাকে সাধুবাদ।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

আনিকা আলম এর ছবি

ধন্যবাদ

এক লহমা এর ছবি

কুর্নিশ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আনিকা আলম এর ছবি

হাসি

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

এভাবেই জয়ী হতে হয়। শুভ কামনা।
আপনার 'কেক শিল্প' আসলেই দারুণ! দেখে এবং চেখে মুগ্ধ হয়েছি। হাসি

আনিকা আলম এর ছবি

লইজ্জা লাগে

শিশিরকণা এর ছবি

আপনের সেই বাড়িওয়ালা বলে নাই, " আরে আমার বাসা থেকেই তো সব শুরু করছিল, আমি না দিলে কি আর এতদূর আসতে পারতো নাকি?"?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

আনিকা আলম এর ছবি

তা বলতে পারিনা, বলেও থাকতে পারে খাইছে

আয়নামতি এর ছবি

সাবাশ! এমনটাই তো চাই। নিজের কী ভালো লাগবে নাকি লাগবেনা সেটা নিজেকেই ঠিক করতে হয়।
রোবট তো না যে অন্যের প্রোগ্রাম করা ফরম্যাট মত মানুষের জীবন চলবে।
আপনাকে অভিনন্দন আনিকা। শুভকামনা থাকলো।
------
ইয়ে এক পিস কেক পাবো নাকি ঢাকায় গেলে? দেঁতো হাসি আশাদি'র ওয়ালে আপনার গুণগানই শুনেছি তাহলে!

আনিকা আলম এর ছবি

নিশ্চয়ই পাবেন। আশাদি তো খালি ভালো কথাই বলেন। হাসি

নীলকমলিনী এর ছবি

তুমিতো জানোই তোমার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আর ভালবাসার কথা। প্রায় আড়াই বছর ধরে তোমার শিল্পকর্ম দেখে আসছি। একটার পর একটা চমক থাকে কেকের কারুকার্যে। প্রথম যখন তোমার কেকের ছবি দেখি তখনি মনে হচ্ছিলো এই মেয়ে শুধু বন্ধু বান্ধব দের জন্য বানায় কেন, ওর তো বেকারি দেয়ার কথা। কিন্তু এও জানি দেশে মেয়েদের ব্যবসা করা অত সহজ নয়। তুমি যে সব বাঁধা জয় করে এতদূর এসেছো আমার অনেক ই ভালো লাগছে। লাভ এন্ড হাগস।

আনিকা আলম এর ছবি

শিল্প কতটুকু কি হয় জানিনা, চেষ্টা করে যাচ্ছি আর কি । আর বেশিরভাগ কাজ টিম এফোর্ট, সম্মিলিত প্রয়াসের কাজ মনে হয় মোটামুটি চলন্সই হয়ে যায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন একটা কঠিন সময় পার করছি, চাকরি ছেড়ে দিয়েছি ৬ মাস হলো, বিয়ের বয়স তো পার হয়ে গেল দেখে বাপ মা কাউকে চেহারা দেখাতে পারেননা, আত্মীয়স্বজন তো মোটামুটি 'আহা আহা' করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে দেশের কার্বন ডাই অক্সাইড ৫০-৬০% বাড়ায় দিচ্ছে (মেয়েদের বেশি পড়ালে এরকমই কন্ট্রোলের বাইরে চলে যায়, আগেই বলেছিলাম, হু হু)। বেশ কিছু জিনিস কিছু টুকটাক শিখছি, কিন্তু এখনও ফিগার আউট করে উঠে পারিনি কি করব। এই লেখা পরে বড় অনুপ্রানিত হলাম। অন্তর থেকে দোয়া থাকলো- যেন অনেক অনেক অনেক সফল হতে পারেন।

আনিকা আলম এর ছবি

খারাপ সময়ের একটা ভালো দিক হল এক সময় ফুরিয়ে যায়। চেষ্টা করুন, এক সময়ে নিজের প্যাশান খুঁজে পাবেন আশা করি। ভালো থাকুন।

শেহাব এর ছবি

ছোট বাচ্চাদের পাঠ্যবইয়ে এই লেখার একটি সহজ সংস্করণ দেয়া গেলে ভাল হত।

ধুসর জলছবি এর ছবি

ব্রাভো হাততালি হাততালি হাততালি সবাই বলে এগিয়ে যাও, জয়ী হও, আপনি করে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে হতে হয়। হাসি

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

পুনি, দা পিস অফ কেক দ্যাট ইউ মেইড ওয়াজ সুইট আফটার অল! হাসি

তবে এর জন্য যতোটা ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তার কিছুটা নিজের চোখে দেখা না হলে আসলে বিশ্বাস হতোনা যে মানুষ এতো আজব কথা ভাবতে আর বলতে পারে। যাইহোক, তুমি যা, তুমি তাইই, অন্যের জন্য নিজের ইচ্ছা বস্তাবেধে পানিতে ফেলে দেবার আর সময় নাই এখন। নিজের স্বাধীনতা, ভালোথাকা সবকিছুর সিদ্ধান্ত নিজেকেই যখন নিতে হয় তখন কে কি বললো তা নিয়ে সময় নষ্ট করার সময় কোথায়?

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি তো একসাথে বেশ কয়েকটা যুদ্ধ প্যারালালি চালিয়ে যাচ্ছেন!
১. চাকুরি ছেড়ে ব্যবসা করা
২. বাবা-মা/স্বামী ছাড়া বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা
৩. ভাড়া বাসায় থেকে সেখান থেকে ব্যবসা করা
৪. সিঙ্গেল ওম্যান হিসেবে থাকা।

একজন পুরুষকে ঠিক ঠিক এই পরিস্থিতিতে যে সমস্যাগুলোতে পড়তে হতো নারী বলে আপনাকে তারচেয়ে কিছু বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। আমাদের দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এটা স্বাভাবিক। তবে সেটার বিরুদ্ধে কণ্ঠ তোলাটা জরুরী।

আমি আনন্দিত যে আপনি হার না মেনে যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে আপনি 'বেকার' থাকেন বা না থাকেন, আবার বিয়ে করেন বা না করেন কোন না কোন ব্যবসা চালিয়ে যাবেন এমনটা কামনা করি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক । লড়াকু মানুষ ভাই আপনি, সাহস পাই এমন লেখা পড়লে...

দেবদ্যুতি

তানিম এহসান এর ছবি

হাসি চালিয়ে যান, আপনাদের কিচেনের খাবার খেয়েছি, তাই আবারও বলি, চালিয়ে যান। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুণ!! অনুপ্রেরণা পেলাম!! আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা। মাঝেমাঝে আমিও ভাবি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করব কিছু একটার, কিন্তু সেটার যোগ্যতা বা ধৈর্য কোনটাই নাই।।।

নাশতারান এর ছবি

ম্যারি মেহ, আনিকা আলম! দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনিকা আলম এর ছবি

ওরে বাবা, এত কমেনট দেখে ডরাইসি, হাতে রাজ্যের কাজ, রাতে জবাব দিতে চেষটা করব।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

সবার আগে নিজের প্রতি নিজের সম্মান তৈরি হওয়া জরুরী। নিজেকে, নিজের কাজকে নিজে সম্মান করলে অন্যরাও একসময়ে সম্মানের জায়গাটা দিতে বাধ্য হয়।

আপনার সাথে আলাপ হবার পরে আপনার সাথে আমার চিন্তাভাবনার এই টুকিটাকি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কিছু মিল দেখে ভালো লেগেছে আমার। নিজেকে 'মেয়ে' ভাবার আগে 'মানুষ' ভাবা জরুরি ছেলেদেরও আগে মেয়েদের নিজেদের, আর মা-দের। আপনার আম্মা সবসময়ে আপনার সব কাজে সাপোর্ট দিয়েছেন, আমার আম্মা দুশ্চিন্তা বেশি করেন দেখে আমাকে সব সময়ে সবার আগে তাকেই বেশি বোঝাতে থাকতে হয়, কিন্তু আমি জানি জোর করে নিজের মনমতো চলে অর্জন করা আমার প্রতিটা সাফল্যে তিনিই সবথেকে বেশি খিশি হন - তার কারণ, আমি খুশি থাকি।

আমিও ভেবেছিলাম আপনি শিক্ষকতা আর ব্যবসা দু'টোই চালাতে পারবেন একসাথে, তবে আপনার ঐ কথাটাতেও মিল পাই যে, কোন কাজ পুরোটা এফোর্ট দিয়েই করা উচিত করলে। আধা-খ্যাচড়া কাজ আমারো পছন্দ হয় না। হয়তো বেকারি শক্তভাবে দাঁড়িয়ে গেলে, একটা নিয়মানুবর্তিতায় এলে, এবং সবথেকে বড় কথা আপনার ইচ্ছা করলে আপনি আবারও শিক্ষকতা বা আর কিছু করবেন একই সাথে।

জগতের সকল মানুষ নিজের ইচ্ছার কাজগুলো (যতক্ষণ তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কারো জন্যে ক্ষতিকর নয়), করতে পারুক। স্বেচ্ছাচারিতা না, কিন্তু নিজের ইচ্ছায় জীবন্যাপনের স্বাদ যে না পেয়েছে তার স্বাধীনতা নেই। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আনিকা আলম এর ছবি

আমার আম্মাকেও বোঝাতে হয়, তবে তিনি আমার কথা শুনে নিজের মতামত জানান। বাংলাদেশে কালিনারি প্রশিক্ষণ নিয়ে বড়-সড় কিছু করার প্ল্যান। শেখানোটা রক্তে ঢুকে গেছে, শিক্ষকতা পুরোপুরি ছেড়ে দিতে পারব না, তবে এমন কিছু শেখাতে চাই যাতে আমার আর শিক্ষার্থীর দুই এর ই আগ্রহ আছে।

স্বাধীনতা না থাকলে বেঁচে থাকাটার বিশেষ মানে থাকেইনা।

টিউলিপ এর ছবি

আপনার কেক খাওয়া হয় নি, কিন্তু একমনে যে র‍্যাপানজেল বানাচ্ছিলেন, সেটা দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেছি আমি। চালিয়ে যান আপু।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

আনিকা আলম এর ছবি

বেচে থাকলে হয়ত খাওয়াতে পারব একদিন।

চরম উদাস এর ছবি

হাততালি
চলুক
গুরু গুরু

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

স্যালুট আপনাকে। আসলে একটা প্রতিষ্ঠিত কিছু একটা দেখে আমরা ভাবতেই পারি না এর পেছনে কত সংগ্রামের গল্প আছে। তার সাথে শুধু মেয়ে হবার কারণে যে অতিরিক্ত যে কষ্টগুলো নিতে হয়েছে সেটা হয়ত আমরা ছেলেরা অনেক সময় ভাবতেই পারি না। আপনার পায়ের ধুলা না নিতে পারলেও আপনার কিচেনের ধুলা তো নিছি দেঁতো হাসি আরেকদিন এসে না হয় বাগড়া দিয়ে যাব নে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনিকা আলম এর ছবি

আবার আড্ডা দিতে আস ( আপনি না তুমি বলেছিলাম সেইবার সেইটা ভুলে গেসি ) খাইছে

দময়ন্তী এর ছবি

হাততালি
চলুক
আপনার কেকের ছবি যতবার দেখেছি, দেখি ততবার মনে মনে ঠিক করি ঢাকা গেলে অন্যান্য বিখ্যাত খাবারদাবারের সাথে পুনিজ-এর কেকও আমায় খেতেই হবে।

অনেক শুভকামনা আনিকা

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

আনিকা আলম এর ছবি

নিশ্চয়ই আসবেন। হাসি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনি যখন কেক বানানোর কথা চিন্তাও করেন নাই, সেই তখন থেকেই আমি আপনের ফ্যান হাসি

লেখাটা দারুণ হয়েছে। স্যালুট।
আপনা ফেজবুক পেজের লিঙ্কটা এই লেখায় জুড়ে দিতে পারেন, তাহলে আপনার কাজ সম্পর্কে পাঠক ধারনা পাবেন।

এগিয়ে যান।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আনিকা আলম এর ছবি

নজরুল ভাই, ইচ্ছে করেই পেইজ এর নামটা দিই নাই, কেমন যেন বিজ্ঞাপনের মত মনে হত।

নিটোল এর ছবি

অসাধারণ! গুরু গুরু

_________________
[খোমাখাতা]

রানা মেহের এর ছবি

আনিকা বেগম, আপনাকে অনেক অনেক প্রেম-ভালুবাসা দেঁতো হাসি

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনিকা আলম এর ছবি

আপনাকেও ভালুবাসা, আপনি ঠ্যালা না দিলে আমি লিখতামই না ।

ধ্রুব আলম এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

সাহসিকতার গল্প ভাল লাগলো।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার লেখার শিরোনামটা মজার। কেইক বানানোর গল্পের শিরোনাম, ইট ওয়াজ নট আ কেইক। এই ডাইকটমিটা আরো চমৎকারভাবে ফুটৎ যদি শিরোনামটা এরকম হত: "মেকিং আ পিস অভ কেইক, ওয়াজ নট আ পিস অভ কেইক" বা "ইট ওয়াজ এ পিস অভ কেইক, বাট ইট ওয়াজ নট এ পিস অভ কেইক"। দেঁতো হাসি

আনিকা আলম এর ছবি

শিরোনামের কৃতিত্ব রানা মেহের আপুর, আমি কোন কিছুর শিরোনাম কোনকালেই খুঁজে পাইনা। আপনার দেওয়া শিরোনামটাও পছন্দ হইসে। লইজ্জা লাগে

তিথীডোর এর ছবি

সাবাশ বেকিং কুইন! চলুক চলুক চলুক

আমি কেক খাই না বড়-একটা, তবে সুযোগ পেলে আপনার কেক চাখতে তো আসবো-ই। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মাসুদ সজীব এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু

সাহসী গল্পগুলো ছড়িয়ে যাক স্বপ্নচারী মানুষের মাঝে হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এতদিন কেক দেখে মুগ্ধ ছিলাম, এখন ঘটনা শুনে স্যালুট দেয়া দরকার মনে হলো। নিজের অধিকার আদায়ের মতো আত্মসম্মানের কাজ আর কিছুই হয় না। পরেরবার ঢাকা গেলে মিস করবো না এক টুকরো কেক। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আনিকা আলম এর ছবি

সবার স্যালুট দেখে খানিক ঘাবড়ে যাচ্ছি, কোন কিছু করার সময়ে আমি অত সাত-পাঁচ ভেবে কিছু করি নাই। আমি এমনিতে বোকা-সোকা ভীতু মানুষ, খালি একটু রগ ত্যাঁড়া, কেউ কথা শোনালে মাথায় ক্যারা উঠে যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় এত ঝামেলা না লাগলে মনে হয় এতদূর গুরুত্ব দিয়ে আগানোই হতো না। কেক খেতে অবশ্যি আসবেন।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আপনার মত সাহস আর উদ‌্যোগী মনোভাব খুব কম মানুষেরই থাকে।
আপনার আরও সাফল্য আসুক।

শুভেচ্ছা হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি

ব্রাভো!!!

মরুদ্যান এর ছবি

হাততালি

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।