সিয়েরা লিয়নের সেকেন্ড ল্যাঙ্গোয়েজ এখন আমার বাংলা ভাষা। আই অ্যাম প্রাউড অফ মাই ল্যাঙ্গোয়েজ। কয়েক সপ্তাহ ধরে, গ্রামীণ ফোনের এই বক্তব্যসমৃদ্ধ টিভি বিজ্ঞাপন আমাদের চোখে পড়েছে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার উৎসবের আয়োজন করে এই কোম্পানিটি। গতকাল দেশের বিশিষ্ট গায়েনবৃন্দের অংশগ্রহণে এই উৎসবটি প্রায় সবগুলো বেসরকারি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
বাংলাদেশে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার যে নির্দিষ্ট রীতিমালা রয়েছে গ্রামীণ ফোন আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে সেই রীতি মানা হয়নি।
বেশিরভাগ সময়েই নাগরিক রীতিমালা খামখেয়ালের ফল নয় (খাম শব্দটি ফার্সি, অর্থ অপরিপক্ক)। জাতীয়সঙ্গীত সংক্রান্ত রীতিগুলোরও ঐতিহাসিক ও আদর্শিক কার্যকারণ থাকতে পারে। যে মার্কিন দেশকে জাতীয় প্রতীকের (যেমন পতাকার) বিচিত্রমুখী প্রদর্শনের উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়, সেও এর ব্যতিক্রম নয়। উদাহরণ দেয়া যাক। ১৮৯২ সালে মার্কিন যাজক ও খ্রিষ্টীয় সমাজবাদী লেখক ফ্রান্সিস বেলামি যুক্তরাষ্ট্রের প্রজাতন্ত্র ও পতাকার প্রতি আনুগত্য প্রকাশের শপথকথা - প্লেজ অফ অ্যালিজেন্স - রচনা করেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগে পতাকার দিকের ডান হাত তুলে ধরে সেই শপথ পড়তে হত। এটাকে বেলামী স্যালুট বলা হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট, নাৎসী স্যালুটের সাথে মিলে যায় বলে, এই বেলামী স্যালুট উঠিয়ে দিয়ে, বুকের ওপর ডান হাত রাখার নিয়ম প্রস্তাব করেন। তাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময়ও একই রীতি মানা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনের ৩৬ শীর্ষকের ৩০১ ধারার সি উপধারায় একথা লেখা আছে যে, জাতীয় সঙ্গীত চলার সময় ডান হাত বুকের ওপর রাখতে হবে। উর্দি ও উর্দিছাড়া সকল নাগরিকের জন্যই এই রীতি মান্য।
গ্রামীণ ফোন আয়োজিত জাতীয় সঙ্গীত উৎসবে, আয়োজকদের (ও তাদের আমন্ত্রিত গায়েনবৃন্দকে) সম্ভবত মার্কিন সংবিধান মান্য করতে দেখা গেছে। তবে কেবল মার্কিনই নয়, পৃথিবীর আরও বহু দেশে এই রীতি দেখা যায়। ফুটবল বিশ্বকাপের সময় বিভিন্ন দলের জাতীয় সঙ্গীতের সময় এমনটা আমাদের চোখে পড়েছে। আমাদের দেশে সেসব দেশের অংসখ্য ভক্ত রয়েছেন।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বাংলাদেশে রাষ্ট্রের প্রতীকসমূহ যেমন জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের রীতিমালা সুনির্দিষ্ট। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সূচনালগ্ন থেকেই এই রীতিগুলো সাধারণভাবে মান্য, এবং পরবর্তিতে যথাযথ আইনী নির্দেশনা হিসেবে প্রকাশিত। গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ১ম ভাগের ৪র্থ অনুচ্ছেদে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীকের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নোটিফিকেশন (২০০২ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আইনে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার একটাই অনুমোদিত ভঙ্গী আছে। সেটি হচ্ছে, সামরিক স্যালুট ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে ‘সাবধানে’ দাঁড়ানো। ‘সাবধানে’ বা অ্যাটেনশনে দাঁড়ানোর অর্থ হচ্ছে, দুই হাত শরীরের দুই পাশে স্বাভাবিকভাবে রাখা।
আমরা এতদিন, এই গত চার দশক ধরে, এভাবেই জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে আসছি। অন্যথা গাইলে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা হয় বলে ধারণা করি। উল্লেখ্য, চলতি বছর জাতীয় সংসদে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক আইনে সংশোধন করে যে বিল পাশ হয় তাতে, এ ধরণের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর এবং/অথবা ১০,০০০ টাকা জরিমানার বিধানের কথা বলা আছে।
আশা করছি কেউ গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ এনে কোথাও একটা মামলা করবেন, শিগগিরই।
মন্তব্য
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ অনিন্দ্য ভাই। সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় ভাষা যে বাংলা সেটা জানা ছিলোনা। আমার মামা ওখানে কাজ করতেন, পরে গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা যান ওখানেই, তিনি বা মামিও কখনও বলেননি যে বাংলা ওখানকার দ্বিতীয় ভাষা। উইকি থেকে চেক করে দেখলাম, ঠিকই আছে। তবে অন্য একটা সাইটে অবশ্য এবিষয়ে কিছুই লেখা নেই। তার পরেও বলছি এটা আমাদের জন্যে গর্বের বিষয়।
গ্রামীণফোন তো সবসময়েই তার ক্যারিশম্যাটিক ষ্ট্র্যাটেজি নিয়ে হাজির। তবে সেই ষ্ট্র্যাটেজি যদি মার্কেটিং-সেলসের বাইরে চলে যেতে তাকে তবে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। হয়তো নতুন ভঙ্গিমায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনটাও তাদের একটা ক্যারিশমা। হায়রে আমার দেশের ভাড়াটে শিল্পীরা!
মামলা শুধু গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধেই না, অংশগ্রহণকারী ভাড়াটে শিল্পীকূলের বিরুদ্ধেও হওয়া উচিত।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
"ভাড়াটে শিল্পী " ব্যাপারটা কি ?
যেহেতু গানের প্রসঙ্গ তাই বলি গান যাদের পেশা তারা পেশাদার শিল্পী। তারা তাদের নিজস্ব স্বকীয়তা এবং অনেকখানি স্বাধীনতা বজায় রেখে গান করেন। যেমন ধরেন সৈয়দ আবদুল হাদী অনেক টাকা দিলেও নেচে নেচে গান গাইবেন না। আর ভাড়াটে শিল্পী হিসেবে বোঝাতে চেয়েছি যারা হোষ্টের ফরমায়েশ মতো গান করে থাকেন তাদেরকে।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের কিছু আইনগত রীতি আছে। বাংলাদেশের শিল্পী হিসেবে তাদের সেই রীতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে এটাই আমাদের কাম্য। কিন্তু তারা যখন গ্রামীণফোনের ফরমায়েশে বুকে হাত রেখে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করলেন, তখন কিন্তু তিনি একটা ভাড়াটে শিল্পীতেই পরিনত হলেন যিনি জেনে শুনে জাতীয় সঙ্গীত গায়নরীতি অগ্রাহ্য করলেন।
তবে তিনি যদি আদৌ না জেনে থাকেন যে কিভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হয়, তবে আর কথা চলে না।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
"যেমন ধরেন সৈয়দ আবদুল হাদী অনেক টাকা দিলেও নেচে নেচে গান গাইবেন না।" আপনার ধারণা তাহলে পাল্টানোর সময় হয়েছে, টাকায় কী না হয়? ঐ অনুষ্ঠানে কারা এভাবে গান গেয়েছেন, তাদের মাঝে আবদুল হাদীও ছিলেন, এই উদ্ভট কাজ সমর্থন করে বক্তব্যও দিয়েছেন এভাবে--- "অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেওয়া বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আজকে নতুন কিছু হলো। বুকে হাত রেখে জাতীয় সংগীত পরিবেশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই করা হয়।’
লিংকটা এখানে।
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=5f679cac1ebdeda165eb49cc3015fd9e
in that case, Syed Abdul Hadi, will no doubt, be a 'varate artist'. when I replied this post, I did not see the video. But later I saw a bit of this clip posted by Anindya Rahman. Thank you for the link, it's much informative. once a varate artist has to say something, that must be something tought by the patron, no matter it's contrary to the norm or sentimenet.
once again, thanks a lot for the link. apologize for English; my new office laptop doesn't have Bangla fonts (shall install Avro shortly).
ডঃ শাহনেওয়াজ?
Yes, Dr. Shahnewaz.
কালকে মাঝরাতের কোন এক বাক্যালাপ শোতে গ্রামীণের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই অনুষ্ঠান নিয়ে কথা বলতে দেখলাম এক ঝলক। টিভি দেখি না আসলে, কাজেই পরে আর এই কর্মযজ্ঞের ফলোআপ জানি না।
কিন্তু আশ্চর্য্য, স্কুলেই তো ১০ বছর ধরে অ্যাসেম্বেলিতে শেখার কথা জাতীয় সঙ্গীত গাইবার বা শোনার সময় কীভাবে দাঁড়াতে হবে! নাকি গ্রামীণের কোন কর্মকর্তারাই স্কুলে যান নাই কখনো!! কেউই ভুল হচ্ছে তা লক্ষ্য বা সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন না?!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এইটা কি জাতীয় সঙ্গীতের রিমিক্স?
কাকস্য পরিবেদনা
হাহ্ আমারও সবার আগে একথাটাই মনে হলো।
পয়লা এখানেই দেখলাম।
তবে ধন্দটা লাগে যখন গ্রামীণফোনের সাথে সহ-আয়োজক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নামটা জুলজুল করে শোভা পায়। কদিন থেকে প্রিন্ট মিডিয়াতেও এনিয়ে বেশ একটা শোরগোল লক্ষ করছিলাম। আজকে তো প্রথম আলোতে এই অনুষ্ঠানের মূল সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সাক্ষাতকার ফলাও করে ছাপাও হল। এই উদ্ভট ধারণা কার মস্তিষ্কপ্রসূত জানিনা, তবে বাংলাদেশের প্রধান শিল্পীদের উপস্থিতিতে এই ধরনের বালখিল্যতার দায়ভার উপস্থিত সবার ঘাড়ে কিছুটা হলেও বর্তায় মনে হয়।
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
গ্রামীন কর্মকর্ত এবং এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির কর্মীরা আবার স্কুলে যাক! জিপি'র একের পর এক ইভেন্টে এরূপ গুরুতর ভল/অপরাধ হয়েই যাচ্ছে, একটা বড়সর ঝাড়ি না খেলে ঠিক হবেনা এরা।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
গ্রামীনের বিরুদ্ধে মামলা করবে কে? সর্বস্বান্ত হবার বুদ্ধি দিচ্ছেন? গ্রামীনের মতো বিশালাকারের একচোখা দৈত্যের বিরুদ্ধে আপনি লিখলেন, আপনার তো ফাঁসী হয়ে যাবে! আলু পেপার আর লাড্ডু রহমান একসাথে মিলে কয়দিন আগে ৩০ মিনিটে বাংলাদেশের ইতিহাস কাঁপিয়ে ফেললো, কই- কোনো কেশাগ্র স্পর্শ করা গেলো তাদের?
ভাই, সময়ের সাথে সাথে কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নানাভাবে নবুয়্যতপ্রাপ্ত হয়। আমাদের দেশে, এখনকার সময়ে এই নবুয়্যতপ্রাপ্তি গ্রামীন আর আলু পেপারের হয়েছে। তারা এখন আমাদেরকে জাহেলিয়াত থেকে এলেমের লুমিনুসে টেনে আনছে। তাদের প্রতি নতশিরে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিৎ না?
কয়দিন পর তারা বিজ্ঞাপন বানিয়ে নয়তো জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠান করে আমাদের শিখিয়ে দিবে ঘরে বিবির সাথে কোন কাইতে শুইতে হবে, কোন কাইতে বরেণ্য ব্যক্তিরা শুয়েছেন আর কোন কাইতে কোন দেশের মহাত্মনেরা শোন! আর আমরাও হারেরেরে বোলে ছুটে গিয়ে গ্রামীন-আলু পেপারের কদমচুমে ঘরে এসে সেই মোতাবেক শয়ন অনুশীলন করতে লেগে যাবো!
একটা গোটা জাতিকে মেরুদন্ডহীন কেঁচো কীভাবে বানাতে হয়, সেটা গ্রামীন-আলু পেপারের কাছ থেকে শেখা উচিৎ।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এই কর্পোরেট শুয়োরের বাচ্চারা ব্যবসা করতে আইছে, তাই করুক। দেশ জাতি উদ্ধারের মহান দায়িত্ব পালন করার কোন দরকার নাই।
ভুলভুল মিয়া বেশ কিছু দেশাত্নবোধক গানের গীতিকার ছিলেন, কিন্তু আজকে জাতীয় সংগীতকে বিকৃত করে তিনি তার অর্জনে চুনকালি মেখে দিলেন।
আর গ্রামীণ ফোনের নাম শুনলেই আমাদের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পীরা মুক্তকচ্ছ হয়ে দৌড় দিলেন!! বন্যা, সৈয়দ আব্দুল হাদীরাও ছিলেন। হাদী সাহেব তো বলেই বসলেন,
‘আজকে নতুন কিছু হলো। বুকে হাত রেখে জাতীয় সংগীত পরিবেশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই করা হয়।'
-হুতোম প্যাঁচা
এরকম মৌসুমী দেশপ্রেম দেখলে বিরক্ত লাগে। দেশপ্রেম থাকলে কি দেশ দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়? দূর্নীতি কি শুধু পুলিশ, আমলা আর রাজনীতিবিদরাই করে? জনগণের কোন ভাগ নাই তাতে?
বুকে হাত রেখে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়াতে দেশপ্রেম কতটা উথলে উঠল তা তাদের জিজ্ঞেস করে দেখতে হবে। তবে মোবাইল-ওয়ালা আর একগাদা টিভি চ্যানেল যে কয়েক বছর পরে আমাদের সমাজ, মন-মানসিকতা-চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রণ করবে তা ধারণা করতে পারি। প্রাচ্যের মানুষ এতদিন বলে এসেছে পাশ্চাত্য নিয়ন্ত্রিত হয় মিডিয়ার দ্বারা। আমরাও সেই পথেই হাঁটছি, ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবেই।
আরে গ্রামীণফোন তো দেখি আমাদের দেশপ্রেমের সোল এজেন্সি হয়ে গেছে! জাতীয় ক্রিকেট দলের জন্য বিশ্বকাপের অফিশিয়াল থিম সং বানায়, এখন আবার আমপাবলিকের জন্য জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার নতুন টেকনিক নিয়ে হাজির। অটোমান আমলে ইউরোপিয়রা এশিয়া/আফ্রিকায় জাতীয়তাবাদ উস্কে টুকরো টুকরো করেছিল, আর এদের বংশধররা একই কায়দায় করে যাচ্ছে ব্যবসা। এতই যদি দেশপ্রেম তবে টাকাগুলো নরওয়ে পাচার না করে বাংলাদেশেই রাখুক আর লোগোটাও নীল থেকে আবার লাল-সবুজ হয়ে যাক!
যুগের সাথে অনেক কিছুই পাল্টায়। আমাদের গ্রহন করার ক্ষমতা কতটুকু সেটাকেও প্রশ্ন করা যেতে পারে। বুকে হাত দিয়ে গান গেলেই কি জাতীয় সংগীতের অবমাননা হয়? আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে বুকে হাত দিয়ে জাতীয় সংগীত গাইলে আবেগটা আরও বেশি আসে। বুকে হাত রেখে গান করলে তো কেউ জাতীয় সংগীতের অবজ্ঞা করছে বলে তো মনে হয় না। আইনের এই অংশটুকু সামান্য বদলানো দরকার বলে মনে করি।
ভুল অবজার্ভেশন।
বুকে হাত দিয়ে গাইলে অবমাননা হয় কি হয় না, সেইটা বিবেচ্য না। বিবেচ্য হলো চলমান একটা জাতীয় আইনকে কাঁচকলা দেখিয়ে দেশপ্রেমের মোড়কে অন্যকিছুর বটিকা খাওয়ানো।
আইন বদলানো যেতে পারে অবশ্যই। কিন্তু সেটা করার আগে তা অমান্য করা কি অপরাধ না?
আইন করে যদি বলা হয় জাতীয় সঙ্গীত শুয়ে শুয়েও গাওয়া যাবে কিংবা টয়লেটে বসেও, তখন গ্রামীন দক্ষিণ প্লাজায় শয়ে শয়ে পাবলিক টয়লেট বসিয়ে তাতে জনগণকে ঢুকিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ালেও কেউ উচ্চবাচ্য করবে না। কিন্তু সেই আইন প্রচলিত হওয়ার আগে গ্রামীন কেনো এর বাপকেও প্রচলিত আইন মেনে চলতে হবে। এইটা বাধ্যবাধকতা।
উপরন্তু, গ্রামীন আর আলু পেপার যে পথে হাঁটা ধরেছে বাংলাদেশের জনগণকে ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের শিক্ষা দেয়ার কঠিন ব্রত নিয়ে, সেই পথে তো বললামই একবার, নিজের ঘরে কোন কাইতে শুতে হবে, সেইটাও এক সময় গ্রামীন ঠিক করে দিবে। তখনও নানা জায়গায় আপনার মন্তব্যের মতো মন্তব্য আমরা দেখতে পাবো বলে আশা রাখি, "চলো বদলে দেই, চলো বদলে যাই!"
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জাতীয় সঙ্গীত যে, যেভাবে খুশি গাক এরকম হয়ত আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করতেই পারি। কিন্তু একটি প্রাতিষ্ঠানিক গায়নে, সেই 'ব্যক্তিগতমতহলেঠিকাছে' ভঙ্গীটিকে চাপানো যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানটির আয়োজকরা, প্রথম আলোর মতোই (স্মর্তব্য: দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট), কর্তৃত্ববাদী ভঙ্গীতে বয়ান দিয়েছেন।
লক্ষ্য করুন, উপস্থাপক বলছেন, "এ অন্যদিনের মতো গাওয়া নয়, আজ আমরা গাইব ভেতরের থেকে"।
আমরা এতদিন কীভাবে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে আসছি, এই বিষয়ের ফোন কম্পানির মাতবরি যদি আপনাদের ভালো লাগে, সেক্ষেত্রে কিছু বলার নাই।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
গ্রামীণ ফোনের চালাকী নিয়ে কথা বলা যেতে পারে কিন্তু বুকে হাত দিয়ে জাতীয় সংগীত গেলেই অবমাননা হয়ে গেল? সত্যি কি ভীষণ সেন্সিটিভ আমরা!
- মেঘলা
সঠিক।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কি অদ্ভুত ! জাতীয় সঙ্গীতের ব্যাপারে "সেন্সিটিভ" হবো না কেন? যখন সেটা গাইবার সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে?
আমার নামের (পড়ুন জাতীয় সঙ্গীত) আগে/মাঝে/পরে পাশের বাড়ির বুলবুল সাহেব আমার/বাবার (পড়ুন জাতীয় সংসদ) অনুমতি না নিয়ে কাজী/হাজ্বী/গাজি বসিয়ে দিলে আমি খুশি হই না। উনার অজ্ঞানতা দেখে বিরক্ত হই।
you start by killing a cat and end up by killing a man...
জাতীয় সংগীতের নয়, প্রচলিত আইনের অবমাননা।
ঐ অনুষ্টানে যে সব বিখ্যাত মামারা বুকের ভেতর থেকে গাইতে গিয়েছিলেন তারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন দেশকে ভালবেসে গিয়েছিলেন পয়সার লোভে নয়? বুকে হাত দিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়াটা উদ্বেগের নয় জাতীয় সংগীতকে বেঁচে খাওয়াটা উদ্বেগের। আমাদের দেশপ্রেমকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে নতুন দেশপ্রেম শেখানোটা উদ্বেগের। এরা এখানে বাঙালী সাজে পাকিস্থানে পাকিস্থানি। অথচ এমন ভাব দেশটা এরাই স্বাধীন করে নিয়ে এসেছে।
জাতীয় সংগীতের নয়, প্রচলিত আইনের অবমাননা।
ঐ অনুষ্টানে যে সব বিখ্যাত মামারা বুকের ভেতর থেকে গাইতে গিয়েছিলেন তারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন দেশকে ভালবেসে গিয়েছিলেন পয়সার লোভে নয়? বুকে হাত দিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়াটা উদ্বেগের নয় জাতীয় সংগীতকে বেঁচে খাওয়াটা উদ্বেগের। আমাদের দেশপ্রেমকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে নতুন দেশপ্রেম শেখানোটা উদ্বেগের। এরা এখানে বাঙালী সাজে পাকিস্থানে পাকিস্থানি। অথচ এমন ভাব দেশটা এরাই স্বাধীন করে নিয়ে এসেছে।
শ্রদ্ধা আসতে হয় মন থেকে, দেশকে ভালোবাসতেও হয় হৃদয় দিয়ে। কিভাবে জাতীয় সংগীত গাইলো তা-দিয়ে দেশপ্রেম বিচার করা উচিত না।
তবে ধুগোদা যেটা বলেছেন, সেটা আমিও সমর্থন করি কেননা এভাবে প্রকাশ্যে দেশবরেণ্য ব্যক্তিরা যদি বিদ্যমান আইনকে কাঁচকলা দেখায় তাও আবার সেটা জাতীয় সংগীত নিয়ে তাহলে সেটা ভাববার বিষয়ই বটে।
কিন্তু কার কাছে বিচার চাইবো আমরা?
_________________________________________________
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
পাগল মন, মূল প্রশ্নটা কিন্তু দেশপ্রেমের না। আমি আপনার সাথে অনেকটাই একমত। আসলে প্রশ্ন হইল, দেশে যে কম্পানিগুলা ব্যবসা করে, তারা দেশের রীতি-রেওয়াজ-আইন এইসবের প্রতি অনুগত কি না।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমরা হইলাম গোলামের জাত। মনিবকে খুশি করাই আমাদের কাজ। মনিবদের অনুকরণ করতে কার না ভাল লাগে?
সাদা চামড়ার কাউকে দেখামাত্র ইংরেজির দক্ষতা প্রমাণ দিতে উঠে পড়ে লাগি আমরা। ভারতীয়-পাকিস্তানীদের সাথে আমরা হিন্দি-উর্দুতে কথা বলতে পাগল হয়ে যাই।
শাহরুখ খান শালা বললে খুশিতে গ্যালগ্যালা হয়ে পড়ি।
যেহেতু ভিনদেশী মনিবেরা বুকে হাত দিয়ে জাতীয় সংগীত গায় তাই তাদের অনুকরণ করে আমরাও বুকে হাত দিয়ে গান গাইব। এ আর এমন কী!
কাকস্য পরিবেদনা
এই দিন দিন না, আরো দিন আছে। এই কর্পোরেট শু...বাচ্চাগুলা দেশ কে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যাবে তার ঠিক নাই। আসেন হিন্দি চ্যানেলের মত গ্রামীনফোন-ও বর্জন করি।
বুকে হাত দেয়া কি ভালু? কচু কাটতে কাটতে যেমন লোকে ডাকাত হয়, সেরকম নিজের বুকে হাত দিতে দিতে কবে একদিন অন্যের বুকে হাত দিয়ে ফেলবে ...দোষ পড়বে আবদুল হাদীর ঘাড়ে।
এরপর হয়তো পাশের জনের বুকে হাত দিয়ে গান গাওয়ার রেওয়াজ চালু হয়ে যেতে পারে, কিছুই বলা যায় না। বদলে যাউ বদলে দাউ দাউ দাউ দাউ।
বদলে যাউ বদলে দাউ দাউ দাউ দাউ।
পাশের জনের বুকের লাউ লাউ লাউ
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এটা সীম পাল্টানোর মত ব্যাপার নয়, আধুনিকতার ও কিছু নেই এখানে। বুকে হাত দিয়ে যদি আবেগ বেশি আনতে হয়, তাহলে আর কি বলবো? জাতীয় সংগীত গাওয়ার একটা নীতিমালা আছে, সেটা মান্য করাটা জরুরী। ঠিক একই কারণে আপনি জাতীয় পতাকা আপনি যেখানে সেখানে ব্যবহার করতে পারবেন না। তাছাড়া কোন দেশের সংগীত, সংস্কৃতি এ সব জিনিস কে ধরে রাখার ই চেষ্টা করা হয়, আপডেট নয়।
................................................
শ্যামল
ভালই। দেশপ্রেম তাহলে এখন গ্রামীন ফোন বিক্রি করে। দুনিয়া কাঁপানোর পর এবার জাতীয় সঙ্গীত প্যাকেজ ছাড়ল। এটার রেইট কত আমাকে কেউ বইলেন। আমার আবার দেশপ্রেম নাই। একটা কিনতে হবে মনে হচ্ছে।
অনন্ত
ধুগোদা'র কমেন্টগুলো পড়ে হাসতে হাসতে শ্যাষ। উদ্ধ্ত করিঃ
একই রকম আরেকখানঃ
কবে যে গ্রামী আর আলু এইসব আলগা মাতবরি বন্ধ করবে?
---আশফাক আহমেদ
প্রচলিত নিয়ম না মেনে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে আইনকে কাঁচকলা দেখিয়েছে জিপি। দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটের মতোই।
আমরা নিথর।
১৫ ডিসেম্বর রাতে চ্যানেল আইতে প্রচারিত হয়েছে রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠান- " যুদ্ধচলাকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় খাবারসমূহ "।
আমরা অন্ধ।
"সিয়েড়া লিঁওনেড় সেকেন্ড ল্যাঙগোয়েজ আমাডেড় বাংলা। উই আঁর সো প্রাউড অফ ইট।" জাতীয় কথামালায় প্রতিনিয়ত আমাদের বদলে দিচ্ছে বদলে দেয়ার এফেমগুলোর আড়জেরা।
আমরা বধির।
_________________________________________
সেরিওজা
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
আগে থেকেই জানা ছিলো ব্যবসার আসল আগ্রহ কনজিউমার। এখানে সহযোগিতায় দেশের সব টিভি/এফ এম চ্যনেলের সাথে দিগন্ত থাকাতে কী সমস্যা দেখলেন?
দিগন্ত না থাকলে ব্যবসায় কী এমন সমস্যা হতো?
সমস্যা - মীর কাশেম আলী, সে একজন রাজাকার, যে দিগন্তের প্রধান।
আর কোনো রাজাকার জাতীয় সঙ্গীত অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক, সেটা আমার কাছে চরম অশ্লীল লাগে।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
বিগ্গাপনে (লিনাক্সে টাইপ করতে সমস্যা ) বালিকার কথাতো ঠিকই আছে। নাকি যারে সইতে নারি তার চলন বাঁকা?
সবকিছু ঠিকঠাক মনে হইলে তো ব্যাপক সমস্যা!!
কাকস্য পরিবেদনা
সবকিছু ভুল মনে হলেও ব্যপক সমস্যা বস। গর্ব শব্দের সঠিক উচ্চারণটা আসলে কি? কেউ একজন কষ্ট করে যদি ঠিক উচ্চারণে কথাগুলো বলে আপলোড করত তাহলে একটু উচ্চারণ শিখে ধন্য হতাম।
হাঁটুকে অনুরোধ কড়লাম কষ্ট কড়ে ড়েকর্ড করে আপলোড কড়ে দিতে।
'র' কে 'ড়' দ্বারা প্রতিস্থাপন কড়াটা স্মার্টনেস। প্রথম দিকে তাহসান কড়ত। এখন দেখি আপামড় জনগণ কড়ে! আমিও শুড়ু কড়লাম।
কাকস্য পরিবেদনা
বাংলাদেশের মানুষ সাধারণত "র" উচ্চারণ করে। এমনকি, "ড়"কেও "র" উচ্চারণ করে। কারণ র উচ্চারণ করা সহজ। কিন্তু ড় কে অনেক ভিতরে থেকে উচ্চারণ করতে হয়। তাই পড়া কে পরা উচ্চারণ করলে তেমন সমস্যা হয় না। শুধু আবৃত্তি করার সময় উচ্চারণের এই পার্থক্য দেখা হয়। তাও ইদানিং অনেক আবৃত্তিকার এই পার্থক্যকে গুরুত্ব দেননা। তারা র-তেই উচ্চারণ করেন। কিন্তু হালের আড়-জেড়া এশ্মাড়টেড় ঠেলায় কষ্টকরে হলেও ড় উচ্চারণ করে। এবং এত বেশি করেছে যে এখন সাধারণ মানুষই কনফিউজড কোনটা ঠিক উচ্চারণ। এখন কথা হল কারো যদি খায়েশ হয় কষ্ট করে ড় উচ্চারণ করার তাতে আমার কি!!
একই ভাবে কে কার বুকে হাত দিয়ে গান গাবে সেটাও আমার বিবেচ্য না। দেখার বিষয় খালি আইনের বরখেলেয়াপ হয়েছে কিনা। এখানে সেন্সিটিভিটির প্রশ্ন আসবেনা। কারণ আজকে সূক্ষ্ণ ভাবে জাতীয় সঙ্গীতের উপর হাত দিল। কিছু বললাম না। কালকে সংবিধানে হাত দিবে। তখন হয়ত বলার কিছু থাকবে না। এটাই সাম্রাজ্যবাদি মানসিকতা। শুল হয়ে ঢুকবে, ফাল হয়ে বেরোবে।
অনন্ত
প্রথমেই একটা কথা বলে রাখি, এই বিজ্ঞাপনে যিনি মডেল তাঁকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, সুতরাং আমার বক্তব্যে বায়াস আসতে পারে।
এবার সুহানের মন্তব্যের জবাবে বলি -
মনে হয় তাই। পুরো বিজ্ঞাপনের কোথাও আমি এই লাইনটা খুঁজে পেলাম না -
"সিয়েড়া লিঁওনেড় সেকেন্ড ল্যাঙগোয়েজ আমাডেড় বাংলা।"
বরং বলা হয়েছে "আমার বাংলা ভাষা" । এটা হয়ত গুরুত্বপূর্ণনা, সুহান একবার শুনে লিখে দিয়েছে, কিন্তু যেভাবে "আমাডেড়" উচ্চারণের ভুল ধরা হয়েছে তাতে ভুল উদ্ধৃতি করলে তো মুশকিল। বাক্যে অনুপস্থিত শব্দের ভুল বের করলে সেই সমালোচনা ভিত্তি হারায়।
আবারো বলছি যেহেতু আলোচ্য শিল্পীকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি সুতরাং উচ্চারণের ভ্রান্তির কথা উঠায় বিজ্ঞাপনটা বেশ কয়েকবার শুনলাম এবং মনোযোগ দিয়ে। আমার কাছে একবারও মনে হয়নি "আমার" উচ্চারণকে "আমাড়" করা হয়েছে।
এবার মূল পোস্টের ব্যপারে বলি। এই ব্যপারে প্রথম জানতে পারি এক বন্ধুর ফেসবুক পোস্ট থেকে, প্রিভিঊ এ ছবিটা দেখে হাসিই পেয়েছিলো ভেবেছিলাম ফুটবল খেলোয়াড়দের দেখাদেখি এই কেতার চল করেছে শিল্পীরা। বিস্তারিত পড়ে তেমন অবাক হইনি। এর আগে গ্রামীণ একুশে ফেব্রুয়ারিতে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়ে পার পেয়ে গেছে, সেই তুলনায় এটা কিছুই না -তাই এবারও কিছুই হবেনা।
সাফি, আমার মত হচ্ছে, এখানে উচ্চারণ না, টেক্সটটায় আপত্তি জানান যায়। যেহেতু বিজ্ঞাপনে মাত্রারিক্ত ইংরেজি শুনে আমরা অভ্যস্ত, আমাদের কানে লাগতেসে না। যিনি এই বিজ্ঞাপনের মডেল হইসেন, এইটা তার সমস্যা না। এইটা যে বা যারা টেক্সটটা লিখসে (এই ক্যাম্পেনটা গ্রে-এর), তাদের সমস্যা ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সাফি ভাইয়া, আমি এই বিজ্ঞাপণটি আগে দেখিনি। আমার মন্তব্য ছিলো ইনজেনারেল প্রচলিত আড়জেদের কথা বলার নিয়মকে কটাক্ষ করে। এফেম রেডিওগুলোতে দিনরাত এই বাজে। আমাড়- আঁমার... এইজাতীয়...অবশ্যি সবাই একইরকম উচ্চারণ করেন না- তবে ভালোদের বাছাই করতে গাঁ-ই উজাড় হয়ে যাবে।
কাজেই এ বিজ্ঞাপণের সাথে আমার মন্তব্যের কোন মিল-অমিল নিতান্ত কাকতালীয় ভাবেই হতে পারে।
_________________________________________
সেরিওজা
প্রিয় সুহান, আপনি যখন কাউকে উদ্ধৃত করবেন তখন দয়া করে নিজে দেখে শুনে করবেন।
সাফি ভাই, কাউকে উদ্ধৃত করে বলিনি কোথাও।
আবারো বলছি- আমার মন্তব্য ছিলো প্রচলিত আড়জেদের নিয়ে; এই বিজ্ঞাপণের সাথে সেটি কোনভাবেই সম্পর্কিত নয়।
খুব সম্ভব বোঝাতে পেরেছি।
_________________________________________
সেরিওজা
এ খবরটা তো জানতাম না। মনে হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধটা চুয়ানেল-আই'র কাছে একটা কমিক কার্টুন। সেখানে হিরোরা কী কী খেয়ে শক্তি বাড়ায়, কী ধরণের পোশাক পড়ে---সবকিছুই এদের কাছে জোকস। কয়দিন পর দেখবো চুয়ানেল আইতে প্রচারিত হয়েছে ফ্যাশন বিষয়ক অনুষ্ঠান- " যুদ্ধচলাকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় পোশাকসমূহ "।
---আশফাক আহমেদ
স্কুলে যখন পড়তাম পিটি স্যার ছিলেন কেশব বাবু। নিয়ম বলে দিয়েছিলেন, প্রতিদিন এ্যসেম্বলিতে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সময় সবার বুক থাকবে উঁচু, হাত থাকবে সোজা- এ্যাটেনশন পজিশন। কেউ একটু শব্দ বা নড়াচড়া করলেই এ্যাসেম্বলির পর দিতেন মার। মার মানে জালি বেত দিয়ে মার, যে একবার এরকম মার খেয়েছে সারা জীবনে ভুলতে পারবে না।
গ্রামীনের এই কর্পোরেট লোকজন বোধহয় ছোটবেলায় এসব শেখেনি!!
আমাদের শ্লোগান হওয়া উচিত:
বাঁচতে হলে চুপ থাকতে হবে
বাঁচতে হলে মেনে নিতে হবে"
না হলে কী হবে? মরণ অথবা মানুষের লাঞ্ছনার শিকার।
তাই আসুন আমরা সবাই মিলে বদলে যাই, সবকিছু মেনে নেই হাসিমুখে।
আর নাহলে আমরা ব্লগে ব্লগে চ্যাঁচামেচি করেই যাব, যারা এসব করার তারাও তাদের কাজ ঠিকই করে যাবে। দেখা যাবে আমরাই একদিন বিরক্ত, ক্লান্ত হয়ে থেমে যাব। তারা হয়ত সেদিনটির অপেক্ষায় আছে।
_________________________________________________
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আমাদের তরুন প্রজন্মের জন্য মোবাইল ফোন কোম্পানী আর খবরের কাগজগুলো হচ্ছে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো। তারা যা বলবে, এরা তাই গিলবে, অন্য কিছু তারা মানতে রাজী না!
বদলে যাও-বদলে দাও, খুব ভাল কথা, কিন্তু এটুকু জানতে হবে কোনটা বদলাতে হবে আর কোন জিনিসটাকে বদলামো যাবে না! এই সেন্সটা আমাদের নেই!
মূল লেখাটা ভাল লেগেছে। কিন্তু গ্রামীন আর আলোর ভক্তদের মানে বদলে যাওয়া পাবলিকদের দেখে ভয় পেয়েছি!
অফ টপিক--- কদিন আগে দেখলাম এটিএন বাংলার স্লোগান, আজকের কনসেপ্ট আগামীর ঐতিহ্য! আর এই স্লোগানের সাথে পণ্যটি হচ্ছে স্বাধীনতা ফুল!
--- থাবা বাবা!
আমরা কোথায় যাচ্ছি...??? যার যা ইচ্ছে হচ্ছে তাই করছে...কি শিখছি আমরা...কি শিখছে নতুন প্রজন্ম...???
tofayel71@gmail.com
বদলাতে হলে আমরাই বদলে নেবো। গ্রামীণ কেন?
জাতীয় সংগীতের শুরুতে প্রিলিউড জুড়ে দিয়েছেন সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। একে একবার দেখেছিলাম এটিএন বাংলায় ইভা রহমানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে। তার উপর ভরসা করা মুশকিল।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
পরবর্তী ক্যাম্পেইনটা কী হইবো? "আমরাই জাতিকে শিখিয়েছি কীভাবে গাইতে হয় জাতীয় সঙ্গীত"? হইতেও পারে...
আর বুলবুল সাহেব প্রিলিউডটা যা ম্রাত্মক রকমের জঘন্য বানাইছেন না... বিস্মিত... মিউজিক কম্পোজিশনও ফালতু হইছে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চমৎকার বিশ্লেষণ।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় গ্রামীণফোনের সব কর্মী একসাথে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার এই ধারণাটা আসলে আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। অবশ্য বিজ্ঞাপনে ইংরেজি বাক্যের ব্যবহারটা ছিল কিছুটা অস্বস্তিকর। (এত ব্যাপক একটা আয়োজনের কমিউনিকেসনে কেন ইংরেজি ব্যবহার করা হয়েছে এটা নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি)।
নিশ্চিত ভাবেই এই আয়োজনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আইনের অবমাননা করে।
অনিন্দ্যের দেয়া ক্লিপটাতে শুনলাম... “আমরা সবাই গাইব ... এ অন্যদিনের মত গাওয়া নয়, আজ আমরা গাইব ভেতরের থেকে...” – ধৃষ্টতা।
এক। আশাকরি এটা সচেতনভাবে করা হয়নি। নিশ্চয়ই গ্রামীণফোনের কেউ এর জন্য মূল্য দিবে।
দুই। সরকার আইন করেছে, এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা অথবা অবমাননার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার দায়িত্ব কিন্তু সরকারেরও।
কেউ যদি কিছু না মনে করেন, আমি একটা কথা বলছি- গ্রামীন ফোনের এ দেশপ্রেম কেন শুরু হয়েছে আপনারা মনে হয় ধরতে পারেননি। থ্রিজি নেটওয়ার্কে অনুমদনের জন্য এবং লাইসেন্স নবায়ন এর ব্যাপারে কে কত টুকু জানেন? যদি না জানেন একটু জানা চেষ্টা করুন, সব পরিস্কার হয়ে যাবে। আশা করছি আর বুঝাতে হবে না, যে বোঝার সে কিন্তু ঠিকই বুঝেব
বহুকিছুই জানি, পেপার রিপোর্টের চেয়েও বেশি। তাও ধরতে পারলাম না, পরিষ্কারো হলোনা। একটু করবেন?
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
অন্যরা এতোদিন ভেতর থেকে গান করেন নাই তাহলে? এইরকম একটা উদ্ধত কথা, অথচ নরম সুরে বলে দেয়া।
গ্রামীণ ফোনের লাইসেন্স নবায়ন করতে ১৪০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে বলে আমি আমার গ্রামীণ ফোনের চাকুরীজীবী বনধুর কাছে খবর পাইলাম|
তো?
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
জেলাটার নাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
এই খবরে জানা যাচ্ছে, লাইসেন্স নবায়ন ও তরঙ্গ বরাদ্দ বাবদ চার মোবাইল অপারেটরের কাছ থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গ্রামীণের কাছে মাত্র চোদ্দোশো কোটি চাওয়া হবে কোন যুক্তিতে?
চরম হতাশাজনক। হতাশার মূল কারণ পরীক্ষা নিরীক্ষা তো আমাদের শিল্পী/ সুরকারেরা রবীন্দ্র সঙ্গীত, পল্লীগীতি, পুরোনো দিনের গান, সব কিছু নিয়েই করে, এখন যুক্ত হয়েছে জাতীয় সঙ্গীত। নুতন নুতন ফিউশান যুক্ত করার মাধ্যমে মূল গানের বারোটা বাজিয়ে দেয়। এই কাজটি তারাই করে যাদের নিজস্ব সৃষ্টিশীলতা বলে কিছু নেই। সৃষ্টিশীলতা মানে পশ্চিমা বিশ্ব হতে ধার করা কিছু সুর, ভালো ব্লগ হতে ধার করা কিছু লেখা। এই আজকের সৃষ্টিশীলতা, এই আজকের মেধা। কর্পোরেট যুগে মানুষকে কিছু খাওয়ালেই হলো, মানুষ খেলেই হল। কি খাচ্ছে দেখার দরকার নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না জাতীয় সঙ্গীতের এই রূপও অনেকেই খাবে। এটা বানিজ্যিক হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই সব শিল্পীর পরবর্তী এলবামেই এই গান থাকবে। জাতীয় সঙ্গীতও রেহাই পেলনা এই বানিজ্যের হাত হতে সেটাই আমার দুঃখ।
খেয়াল করে দেখুন এতোগুলো শিল্পীর মাঝে কেউই এর বিরুদ্ধে দাড়ানোর মত সাহস অর্জন করতে পারলো না, আবার এদেরই গানই নাকি বুকের ভেতর থেকে আসে।
আরো হতাশা রাষ্ট্রের আচরণে। এই সঙ্গীতের অবমাননা যদি নির্দিষ্ট কোন শিল্পী করতো কোন প্রোগ্রামে, উক্ত ব্যক্তিকে সেদিনই হাজতে নেওয়া হতো। কিন্তু কর্পোরট বাহিনী করলে সেটা তখন হালাল হয়ে যায়। একই চিত্র দেখি আলু পেপারের ক্ষেত্রে। নিরীহ কার্টুন একে আরিফ যায় হাজতে কিন্তু মূল পত্রিকার কিছু হয় না। এই ক্ষেত্রেও কিছু হবে না।
কিন্তু এটি জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননাই। বুলবুল যে সুর আরোপ করেছে শুরুতে এবং শেষে, যে হামিং আরোপ করেছে শুরুতে এবং শেষে সেটা কি আইন অনুসারে করতে পারে? যদি না পারে তবে এই অপরাধে তাঁদেরকে কারণ দর্শানো কেন হবে না? বুকে হাত দিয়ে দাঁড়ানো নিয়ে তেমন কিছু বলবো না। মূল গানের সুরই যেখানে বিকৃত করা হয়েছে সেখানে বুকে হাত দিয়ে, না দু'হাত তুলে গান গাইলো কি আসে যায়।
এই পদ্ধতিতে এবং নুতন সুরে গান পরিবেশনের মাধ্যমে দু'টি বিষয় গ্রামীন ফোন দেখিয়েছে। একঃ এতো দিন যেভাবে গান গেয়েছেন তাতে বুকের ভেতর থেকে গান গাননি। ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধারাও যখন এভাবে গেয়েছেন তখনো সেটা বুকের ভেতর থেকে আসেনি, এই প্রথম চল্লিশ বছর পর কেউ বুকের ভেতর থেকে গাইলেন। সালাম আপনাদের। দ্বিতীয়ঃ মূল যে সুর রয়েছে সেটাও তেমন যুগোপযোগী ছিল না। তাই এতে নুতনত্ব দেওয়া হয়েছে। তরুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী করা হয়েছে, যেমনটা করা হয়েছে রবীন্দ্র সঙ্গীত বা অন্যান্য গানগুলোর ক্ষেত্রে। তরুনদের কাছে দেশপ্রেম পৌছানোর উপায় একমাত্র এটিই। তাই গ্রামীন ফোনকে আমাদের আসলে ধন্যবাদ জানাতেই হয়। ধন্যবাদ জানাতে হয় আমাদের দেশের সেরা সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে এই নুতন সুর সংযোজনের জন্য।
আসুন বদলে দেই নিজেকে, সেই সাথে বদলে দেই দেশকে। দাড়াই প্রথম আলো, গ্রামীন ফোনের পেছনে।
আরে ভাই এত নিয়ম মানার কারনেই বাংলাদেশ আজ এত পিছিয়ে আছে। একটু নিয়ম ভেনগে চলে দেখা যাক ভাল কিছু হয় কিনা।
হ্যাঁ হ্যাঁ ভাই, চলেন আজকে থেকে সিলিঙের দিকে পেছন তাগ করে হাগু করি। উন্নতি না করে ছাড়বো না।
৪০ সেকেণ্ডের একটি ভিডিও। বুকের ভেতর থেকে যারা এতদিন গায়নি, এই অনুষ্ঠানে প্রথম গাইলো, তাদের দেখা জরুরি।
আইন ভাঙ্গলেই দৌড়ানি দিতে হবে বলে মনে করি না, বিশেষ করে যেখানে কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধন হয় না, তবে এটা প্রচলিত আইনের লংঘনই।
তদুপরি গ্রামীণ আর আলুর পিঠে এখন পচুর দাউ দাউ দাউ জমা আছে। যতদিন বাংলাদেশে দেশপ্রেম বহাল আছে, ব্যবসায়ীরা দেশপ্রেম নিয়া ব্যবসা করবেই। শপথ পড়াবে। ভালো মানুষ বানাবো। এতে খালি ওদের টাকা বানানো হয় তাই না। তাদের অসহনীয়, গা-জ্বালানিয়া এসব রংঢং দেখলে আমার পাটা অস্থির বোধ করতে থাকে।
একটা বিষয় বুঝলাম না। হয়ত আমার বোঝার ভুল। সিয়েরালিয়নে বাংলা ভাষা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে এতে আমাদের গর্ব হবে কেন? সিয়েরালিয়নে কি অন্য ভাষা নেই? যদি থাকে, তাহলে বাংলার দরকার কেন? নাকি বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দি ব্যবহার হচ্ছে এবং তা নিয়ে কম বেশী সবাই উদ্বিগ্ন, সে রকম কোনো ব্যাপার। আমরা আমাদের ভাষা ওখানে চাপিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের অবস্থান তো হবে উল্টো। কোথাও কেউ নিজ ভাষা ব্যবহার করতে চাইলে, আমরা প্রথমেই সেখানে হ্যাঁ বলব। নিজ ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি।
এটাকে একটা স্বীকৃতি বলতে পারেন। ওরা এটা করে আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে। আমরা মোটেই আমাদের ভাষা কারও ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি না। কেউ যদি আমার ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে আমার ভাষা শিখতে চায় তাতে আমি আপত্তিরও কিছু দেখছি না।
আপনিই বলুন না, কেন গড়ব কড়ব না?
কুটুমবাড়ি
সাংবাদিক আনোয়ারুল করিমকে অশেষ ধন্যবাদ জাতীয় সংগীতের অবমাননার ব্যাপারটি ধরিয়ে দিয়ে এতো সুন্দর একটি রিপোর্টের জন্য। বিস্তারিত দেখতে বাংলানিউজ২৪.কম-এ ক্লিক করুন--http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=5f679cac1ebdeda165eb49c...
অনেক মন্তব্য পড়েছে। আমি মন্তব্য অংশে সচল মডুদের ঘ্যাচাং করা এই বিষয়ক লেখাটাই তুলে ধরলাম। যদি মডুরা এটাকে ঘ্যাচাং না করেন তো আমার মন্তব্য প্রকাশ পাবে।
নানা সময় নানা রকম বিষয়ে আমাদের কথা, লেখা আর চিন্তার তুব্ড়ি ছোটে। এবারের বিষয় জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা। বিজয় দিবসে বেসরকারি মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোনের আয়োজনে একটু নতুন কায়দায় জাতীয় গাওয়ার প্রচেষ্টায়। কী এমন নতুন ঘটনা হল যে তাতে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা হচ্ছে। পৃথিবীতে কিছু দেশে নতুন না হলেও আমাদের দেশে ডান হাত বাম বুকে রেখে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার রেওয়াজ নেই বললেই চলে। ছোটবেলা থেকেই কাঠফাটা রোদে স্কুলের মাঠে সাবধান(Attention) অবস্থায় থেকেই গেয়ে এসেছি জাতীয় সঙ্গীত। একটু বুঝতে শেখার পরেই মনের সব আবেগ আর ভালোবাসা মিশিয়ে দিয়েছি -
আমার সোনার বাংলা... আমি তোমায় ভালোবাসি...
BanglaNews24 হতে নেওয়া ছবিটাও দেখে নিনঃ
স্কুলের গণ্ডি পার হবার পরও বহুবার গেয়েছি জাতীয় সঙ্গীত। সিনেমা হলে কিংবা কোন অনুষ্ঠানে। সাথে এও দেখেছি সিনেমা হলের কিছু মানুষ জাতীয় সঙ্গীত চলাকালেও বসে থাকেন, আর কিছু লোক গান না গেয়ে পাশের জনের সাথে অন্য কথা বলেন। নটরডেম কলেজের এক অনুষ্ঠানে অডিটোরিয়ামে জাতীয় সঙ্গীত না বাজিয়ে বাজানো হল 'আমার সোনার বাংলা' গানটির পুরোটা। শুনে আমি প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলেও দেখেছিলাম আমার আশে-পাশের অনেকেই নির্বিকার। কিছু যায় আসে না অথবা তারা জানেনই না যে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত আসলে মূল গানের ক'টা লাইন।
কথা উঠেছে এই বছরেই জাতীয় সংসদে চূড়ান্ত হওয়া 'বাংলাদেশ জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা এবং জাতীয় প্রতীক সংশোধন আইন-২০১০' এর। এ আইন অনুয়ায়ী জাতীয় সঙ্গীত,জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় প্রতীকের অবমাননার জন্য কোন ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা দু'ধরনের দণ্ড হতে পারে। সাথে এ ব্যাপারে আমাদের সংবিধান ও ১৯৭৮ সালের চূড়ান্তকৃত আইনটিও একবার দেখি।
আমাদের জাতীয় সংবিধানে পাইঃ
জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক
৪। (১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত ‘‘আমার সোনার বাংলা’’র প্রথম দশ চরণ।
(২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত।
(৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর-সংযুক্ত পত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা।
(৪) উপরি-উক্ত দফাসমূহ-সাপেক্ষে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কিত বিধানাবলী আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
পরবর্তী সময়ে এই সংক্রান্ত নতুন আইন তৈরি করা হয় যেখানে উল্লেখ আছে যে ঠিক কীভাবে দাঁড়াতে হবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময়ে। যে কোন শালীন ভঙ্গিতে দাঁড়ালেই চলবে না, সাবাধান দশাতেই দাঁড়ানো লাগবে।
এবার ২৫ অক্টোবর, ১৯৭৮ সালে চূড়ান্ত হওয়া আইন (২০০২ সালের সংশোধন পর্যন্ত) আইনটা দেখা যাক। আমাদের সরকার Ministry of Establishment এ আইনটার নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমাদের জাতীয় ওয়েব পোর্টাল এর বাংলা সংস্করণ থাকলেও এই সাইটের কোন বাংলা সংস্করণ নেই। আইনের কথাগুলোও ইংরেজিতেই লেখা। আপনারা চাইলে দেখে নিতে পারেন। তবে এর চুম্বক অংশ হলঃ
4.Respect to be shown to the National Anthem - When the National Anthem is being played on the arrival of a dignitary or on the ceremonial hoisting of the Bangladesh Flag, all ranks in uniform, not being under the orders of the Officer Commanding a parade, shall stand to attention; and all Officers, including spectator officers in uniform, Junior Commissioned Officers, Warrant Officers and Non-Commissioned Officers shall stand to attention saluting at the first note of the Anthem and shall keep in that position until the last note of the National Anthem has been played. When the National Anthem is played and the National flag is displayed, all present shall face the Flag; when the Flag is not displayed, all present shall face the musicians/band; civilians in Western head dress shall uncover their heads and civilians in any other head dress shall stand to attention.
5.Singing of National Anthem by civilians - (1) The National Anthem may be sung on an occasion which, though not strictly ceremonial is significant because of the presence of any Minister. (2) In all schools, the day's work shall begin with the singing of the National Anthem. (3) Whenever the National Anthem is sung, the whole of it shall be sung.
আমি যতটুকু বুঝি তাতে এর বাংলা সারমর্ম দাঁড়ায় যে সামরিক লোকদের পাশাপাশি বেসামরিক লোকদেরকেও গাইতে হবে এবং তা সাবধান অবস্থায় দাঁড়িয়েই। তবে তাদেরকে মাথার টুপি(ধর্মীয় টুপি, পাগরি, ঘোমটা বাদে) খুলে নিয়ে। জাতীয় পতাকার দিকে তাকিয়ে থেকে গাইতে হবে। জাতীয় পতাকা না থাকলে সামনের গায়ক/গায়ক দলের দিকে অবস্থান করে। পুরো বেসামরিক আয়োজনে বেসামরিক লোকজন গাইলেই একই নিয়ম প্রযোজ্য হবার কথা।
এ গেল আইনের কথা। অথচ এই আইনকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাদের দেশ প্রেমের সোল এজেন্ট গ্রামীণ ফোন কর্তৃপক্ষ আয়োজন করলো ব্যতিক্রমভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার। আর সে অনুষ্ঠানের ব্যানারে ছিল সরকারেরই এক মন্ত্রনালয়ের নাম। এখন পর্যন্ত সরকার নীরব। এবং আদৌ কিছু হবে কী না সন্দেহ। কারণ ২১৪ বছরের গোলামি রক্তে মিশে গেছে। বিগত ৪০ বছর ধরেই নীরবেই চলছে সে গোলামির বর্ধিষ্ণু দশা। আমরা কি পারবো সাদা কিংবা উপমহাদেশীয় প্রভুদের গোলামি থেকে বেড়িয়ে আসতে?? তবু উত্তর পাবার অপেক্ষায় রইলাম।
বুকের বামে ডান হাত দিয়ে একটা যুক্তি তবু দেখানো যায় যে হৃদয়কে বোঝানো হচ্ছে; কিন্তু মূল গানের আগে সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এর নির্দেশনায় নতুন সুর সংযোজনের হেতু কী?? গানটির শুরুতেই বলা হয়েছে,'... আজ আমরা গাইবো... এ গাওয়া অন্যদিনের মত না... আমরা আজ গাইবো ভেতরের থেকে...' এত দিন কী আমরা মনের ভেতর থেকে গাই নি?? গ্রামীণ আজ আমদের দেশ প্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুললো। তারা এবছরই শিখিয়েছে ভাষা আন্দোলনের ৩০ মিনিটের মর্যাদা(!!) প্রদান। আজ শিখাচ্ছে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া। হয়তো কাল শিখাবে জাতির জনক কে? স্বাধীনতার ঘোষক কে?
____________________________________________
দেবাশিস মুখার্জি
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
কেউ মনেহয় এতবড় একটা মন্তব্য পড়ার সময় রাখেন না। তাই এর মাঝে লুকিয়ে থাকা কিছু প্রশ্ন ছিল যদি কেউ দেয় (যদি তার জানা থাকে) তো কৃতার্থ হব।
____________________________________________
দেবাশিস মুখার্জি
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
আমি তো পড়লাম। আইনগুলা বিস্তারিত লেখার জন্য ধন্যবাদ। প্রশ্নগুলার উত্তর প্রশ্নগুলার মধ্যেই আছে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে,দেশ মার্কিন হয়ে যাচ্ছে । ভাবতে ভালই লাগে ( দীর্ঘশ্বাস এর ইমো )
যৈবন দাদা
"মৌসুমী দেশপ্রেম" আজকাল খুব বেশি চর্চা হচ্ছে। এত অল্পতে জাত গেলো জাত গেলো বলে রব তোলার কোন কারণ দেখছি না। হুজুগে বাঙালি চিরকাল হুজুগে-ই রয়ে গেল।
কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। বাংলাদেশ শান্তিরক্ষাবাহিনীকে সম্মান জানানোর জন্য বাংলা ভাষাকে "অফিসিয়াল ল্যাঙ্গোয়েজ" ঘোষণা করা হয়েছে। তার মানে এ নয় যে এখানের লোক বাংলা ভাষায় কথা বলে। সেকেন্ড ল্যাঙ্গোয়েজ বলতে আমরা বুঝি সে ভাষা যে ভাষা-ভাষি লোকের সংখ্যা দ্বিতীয়। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে এদেশের প্রধান ১৪টি ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষা নেই। ব্যাপারটা বোতলে পুরে শোকেসে রেখে দেয়ার মতো।
গুরু ভাই
জাত গেলো জাত গেলো বলে রব কে তুলসে? বিদেশি কোম্পানি দেশের আইন না মানাটাই এইখানে ঘটনা। জাতীয় সঙ্গীত বিষয়টাকে আরো সিরিয়াস করসে। 'সেকেন্ড ল্যাঙ্গোয়েজ' বিষয়ে আমার আগ্রহ/গর্ব কোনোটাই নাই। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ভিডিওটি দেখলাম।বুঝলাম জাতীয় সংগীত গাইবার ভঙ্গি নিয়ে কিছু জটিলতা হয়েছে।বেশ।
পুরো পরিবেশনার মধ্যে তো আরো সমস্যা রয়ে গেছে।
শুরুতে কে জানি বললেন (বুলবুল সাহেব নাকি), আজকে অন্যরকম করে গাইতে হবে। অন্যদিনের মত না, ভেতর থেকে নাকি গাইতে হবে। কেন? অন্যদিন মানুষ তাইলে ভেতর থেকে গায়না? এরা যে কবে এসব ছাগল টাইপ ডায়ালগ বন্ধ করবে। কিসু একটা কইয়া দিলেই হইলো আর কি।
তারপর সঙ্গীত শুরু হতে না হতেই (মনে হয় এই বুলবুল সাহেব আবার) কে একজন বেসুরো গলায় কিছুক্ষণ চালায় গেলেন।
আর এইটা কি সুর হইলো? জাতীয় সঙ্গীতে হামিং ও যন্ত্রসঙ্গীতের যন্ত্রণা অসহ্য লাগছিলো। দেশের বাঘা বাঘা সব শিল্পীরা আর গ্রামীণ মিলে এ কি সুর উপহার দিলেন বোঝা গেলোনা।
আবার গান শেষে তালি। তালির কি হলো বুঝলামনা।
হয়েছে। নতুন একটা কিছু হয়েছে। যা হয়নি সেটা হচ্ছে জাতীয় সংগীত।
গানের শেষে তালি মানে এইখানে একটা 'খেইল' দেখা গেল। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নোট করসেন। ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এ বিষয়ে দৈনিক কালের কন্ঠে এই লেখাটার জন্য আরিফ জেবতিক ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।
একটা ব্যাপার বুঝি না কখনই! দেশপ্রেম বা দেশের প্রতি শ্রদ্ধার ব্যাপার গুলোকে কেন সেলফোন কোম্পানির কাছ থেকে শিখতে হবে?? পুরা ব্যাপারটাকে একটা বিকট রসিকতা মনে হচ্ছে!
নতুন মন্তব্য করুন