ডিআইটিএফ-ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইড ফেয়ার এর সংক্ষেপ। বেশ কয়েক বছর ধরেই (সম্ভবত এক যুগেরো বেশি) বছরের শেষ দিকে শেরে বাংলা নগরে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সম্ভবত যারা এ লেখাটি পড়ছেন, তাদের সবাই অন্তত একবার হলেও বাণিজ্য মেলা দেখে এসেছেন। সে যাই হোক, প্রতিবারের মত এবারো গেলাম মেলা দেখতে; কিছুটা ফ্যামিলির চাপে পড়েই।
কখনোই যে প্রশ্নটি মনে জাগেনি, সেটি এবার জাগলো--আসলে এই মেলার উদ্দেশ্য কি? ন্যাম কনভেনশন সেন্টার এর পাশে ডিআইটিএফ এর জন্য নির্দিষ্ট করা জায়গাটিতে চক্রাকারে অনেকগুলো স্টল সাজানো থাকে। মাঝখানে থাকে বড় বড় স্টলগুলি। মাঝখানে পাওয়া যায় সনি, ইউনিলিভার, গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, স্যামসাং, হক বিস্কুট, কোহিনুর ইত্যাদি বড় বড় প্রতিষ্ঠানের স্টল। এই স্টলগুলো দেখেই বোঝা যায় বিক্রী মূল উদ্দেশ্য নয়, বড়ং আগত দর্শনার্থীদেরকে পণ্যের বহুবিধ ব্যবহারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই মূখ্য। মেলা কিংবা প্রদর্শনী এরকমই হওয়া উচিত।
কিন্তু, চক্রাকারে সাজানো স্টলগুলোর বেশির ভাগই রাইফেলস স্কয়ার, বসুন্ধরা কিংবা এরকম কোন মার্কেট এর সাধারণ কোন দোকানের শাখা। এই দোকানগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিক্রি বাড়ানোই উদ্দেশ্য। শাড়ী, চুড়ি, হাঁড়ী পাতিল, খাদ্যসামগ্রীর দোকান দেখতে দেখতে চোখ পচে যাওয়ার উপক্রম! বহু কষ্টে মা বোনকে টেনে নিয়ে গেলাম স্যামসাং এর দোকানে।
চমৎকার কিছু হাই ডেফিনিশন টিভি দেখলাম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, একটি মডেলও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই।
তারস্বরে মাইকে বাজছে হাবিব ওয়াহিদ এর গান। একটু পর পরই। প্রথমে ভালো করে খেয়াল না করলেও পরে বুঝলাম সবগুলোই কমবেশি বিঞ্জাপন এর জিংগেল। এই ভদ্রলোক ক নিয়ে বড় আশা ছিল। কৃষ্ণ, মায়া অসাধারণ। ময়না গো সহনীয়। কিন্তু এরপর থেকেই শুরু কমার্শিয়াল হওয়া। হৃদয়ের কথা, ব্যাঙ এ মাথা!
প্রায় তিন ঘন্টা ঘোরাঘুরি করে যখন গেট দিয়ে বের হচ্ছি, তখন মনে হোল, "কেনাকাটার উদ্দেশ্য না থাকলে এখানে আসা আর বৃথা সময় নষ্ট করার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই"
সুতরাং আপনার হাতে যদি নষ্ট করার মত সময় থাকে, তাহলে চলে যান শের বাংলা নগর। ভালো কথা, বাসা দুরে হলে এবং গাড়ী না থাকলে রকটে যাত্রার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
গত বছর এক কালো ক্যাব চালক ওখান থেকে খিঁলগাও যাওয়ার জন্য মাত্র ৪০০ টাকা চেয়েছিলেন!!!!!
কালো ক্যাব দেখতে রকেটের মত না হলেও ভাড়া আকাশচুম্বী। হলুদরে কথা আর বল্লাম না, নিজেই টের পাবেন।
--ইশতিয়াক
প্রায় এক বছর ধরে অতিথি হয়ে আছি, আমাকে কি কেহ সচল করিয়া দিবেন?
মন্তব্য
ধুর মিয়া চাপা মাইরেন না। সচলায়তনের বয়স সাত মাস আর আপনে এক বছর ধরে অতিথি হয়ে আছেন?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ব্লগর ব্লগর হিসেবে খারাপ হয়নাই। তবে বাণিজ্য মেলা কিন্তু এমনই, সবসময়ই। কেবলমাত্র প্রথমটা ছাড়া। আপনাদের অনেকেরই মনে আছে হয়তো (যারা আমার মত বয়স্ক তাদের তো বটেই), প্রথম মেলার নাম ছিল শিল্পমেলা। সেবার সত্যিই সেটা শিল্প মেলাই ছিল। এর পর থেকে অবশ্য বাণিজ্য শুরু হয়েছে। তাই বাণিজ্য মেলা।
কিন্তু ইশতিয়াক ভাই, "এক বছরে" আপনার লেখা মোটে এই একটা কেন??
একেবারে কব্জি ডুবিয়ে লিখে যান! সচল হওয়া কোন ব্যাপারই না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বিক্রি করার জন্য
মেলা করা কি খারাপ?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
খারাপ লেগেছে দেখে যে কোনো প্রয়োজন ছাড়াই নারীদেরকে সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বিশেষ করে কর্পোরেট স্টলগুলোতে এই প্রবণতা বেশি। কী জানি তাতে হয়তো বিক্রি বেশি বাড়ে! সাথে কেমন যেন মনে খেদ-বেদনাও বাড়ে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
মুর্শেদ ভাই, কিন্চিত মিসটেক হয়ে গিয়েছে। ১/৯/০৭ রে আমি ভাবসি জানুয়ারী মাসের ৯ তারিখ! তারপরেও কিন্তু কম সময় না।
হিমু ভাই, এটাই একমাত্র লেখা না, আরো কয়েকটা আছে লিংকগুলা পোস্ট করে দিচ্ছিঃ
http://sachalayatan.com/guest_writer/9989
http://sachalayatan.com/guest_writer/8672
http://sachalayatan.com/guest_writer/8612
রানা ভাই, বিক্রি করা খারাপ না, কিন্তু ট্রেড ফেয়ার এর কনসেপ্টটি সম্ভবত একটু ভিন্ন। কিন্তু আমি নিশ্চিত না হওয়ায় আর বিশদ লিখিনি সে ব্যাপারে। হয়তো এ ব্যাপার অন্যেরা আলোকপাত করতে পারবেন।
নতুন মন্তব্য করুন